ভাবতে অবাক লাগে- প্রতিটা বক্তব্য কতটা সুচিন্তিত, কতটা প্রাসঙ্গিক এখনো...

১. “শিক্ষা গ্রহণ করে যদি আমরা বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে না পারি সে শিক্ষার কোন মূল্য নাই।” 

২. “লেখাপড়া জানতে হয় নিজের বিবেককে শান দেওয়ার জন্যে। শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র চাকরি নয়। শিক্ষা দিয়ে বিবেককে উন্নত করা- এই ব্রত নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।” 

৩. “যত সুন্দর ভাষা ও শব্দ দিয়ে সংবিধান লেখা হোক না কেন, জাতির জীবনে তা প্রয়োগ না হলে সেটা অর্থহীন হয়ে পড়বে।” 

৪. “ভিতরে ইঁদুর রেখে বাইরে মাটি দিলে সমস্যার সমাধান হবে না।” 

৫. “কৃষকরা জাতির সম্পদ; আমরা তাদের জন্য গর্ববোধ করি।” 

জনসভায় বক্তৃতা রাখছেন তাজউদ্দীন আহমদ

৬. “বক্তৃতা কমাতে হবে। এখন ভেবে দেখতে হবে বক্তৃতায় যা বলা হয়েছে তা করা হয়েছে কিনা।” 

৭. “ঘুম পাড়ানিয়া গান আমাদের গাইলে চলবে না, যে গান আমাদের কঠোর পরিশ্রম করার জন্য জাগিয়ে রাখবে, সে গান আমাদের গাইতে হবে।” 

৮. “আমাদের বুদ্ধিজীবীরা দেশের সত্যিকার সমস্যা তুলে ধরবেন এবং সমাধানের ইঙ্গিত প্রদর্শন করবেন,এটাই কামনা করি। অন্ধভাবে আমাদের শুধু প্রশংসা করলেই চলবে না।” 

৯. “দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে যারা বড় বড় কথা বলেন, দুর্নীতিবাজ ধরা পড়লে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের অনেকেই ওকালতি করে। এমনিভাবে প্রত্যেক দুর্নীতিপরায়ণই যদি কারো না কারো ভাই ও খালু হয়, তাহলে সরকার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে?” 

১০. “দেশের কাছে কিছু চাওয়ার আগে দেশকে আপনি কতটুকু দিয়েছেন, তা বিচার করুন।” 

প্রিয় মুজিব ভাইয়ের সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদ

১১. “শুধু বড় বড় কথা বলে এবং অপরের কাঁধে দোষ চাপিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় না।” 

১২. “বর্তমানে জাতীয় দুর্যোগকালে উট পাখির মতো বালিতে মাথা গুঁজে থাকলে চলবে না। বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে।” 

১৩. “সত্য কথা বলতে বলতে নিজের গর্দান যাওয়ার পর্যায়ে এসেছি। কিন্তু এতে আমি ভীত নই। মরন আসার আগে কেউই মারতে পারবে না। 

১৪. "অনেকে আমাকে সত্য বলতে নিষেধ করেছেন, কিন্তু আমি সত্য কথা বলে যাব। সময় আসছে না, বরং সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। এখন যদি মানুষের জন্য কিছু করা না যায়, তাহলে আর কোন দিনই যাবে না।” 

১৫. “আমি দেশের জন্য এমনভাবে কাজ করবো যেন দেশের ইতিহাস লেখার সময় সবাই এদেশটাকেই খুঁজে পায়, কিন্তু আমাকে হারিয়ে ফেলে…” 

- উপরের সকল বক্তব্য একজন মানুষের। একজন তাজউদ্দীন আহমদের। ভাবলে অবাক লাগে প্রতিটা বক্তব্য কতটা সুচিন্তিত, কতটা প্রাসঙ্গিক এখনও! আমাদের দুর্ভাগ্য, উনাকে বড় অকালে হারিয়েছি আমরা। আমাদের সৌভাগ্য, উনি এদেশে জন্মেছিলেন।

তথ্যসূত্র: শেষের বক্তব্যটা “নেতা ও পিতা” কিংবা “৩ নভেম্বর-জেল হত্যার পূর্বাপর” বইতে পড়েছিলাম। আর বাকিগুলো “তাজউদ্দীন আহমদের আলোক ভাবনা উদ্ধৃতি সংকলন” থেকে সংগৃহীত।

-

* প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন

* সমাজের নানান অসঙ্গতি নিয়ে আওয়াজ তুলুন। অংশ নিন আমাদের মিছিলে। যোগ দিন 'এগিয়ে চলো বাংলাদেশ' ফেসবুক গ্রুপে


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা