মিথ্যে মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন, নিজের আটিজমে আক্রান্ত মেয়েকে ধর্ষিত হতে দেখছেন আর বছর ঘুরেই ধর্ষককে হাত উচিয়ে বের হয়ে যেতে দেখছেন!
জোহান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ: টিএসসির আমাদের সবার প্রিয় স্বপন মামার প্রতিবন্ধী মেয়ে ধর্ষিত হবার ঘটনাটার কিছু ভুল ন্যারেটিভ ফেসবুকে ছড়াচ্ছে, সেগুলোর প্রকৃত বক্তব্য আজকে স্বপন মামার কাছ থেকেই শুনে এখানে লিখছি:
১) প্রথম কথা ধর্ষক কোনোভাবেই এলাকার মসজিদের মুয়াজ্জিন বা ইমাম কিছুই না। সে এলাকায় কৃষিকাজ করে। আগেও অনেকবার সে লাম্পট্য করেছে, আপনারা যদি সাক্ষীদের ইজাহারের বক্তব্য পড়েন বুঝতে পারবেন(ছবি নিচে)। মামলার চার্জশীট কিংবা এজাহারের কোনোটাতেই তার পেশা মুয়াজ্জিন নেই। তাই যারাই জেনে বা না জেনে শেয়ার দিচ্ছেন "মসজিদের মুয়াজ্জিন দ্বারা স্বপন মামার মেয়ে ধর্ষিত" তাদের স্বপন মামা হাতজোড় করে বলেছেন ফেইক নিউজ না ছড়াতে। কারণ আপনার একটা ভুল তথ্য শেয়ার হয়তো অন্য একটা সুবিধাভোগী গোষ্ঠীকে সুযোগ করে দিবে এইটা দিয়ে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে!
২) স্বপন মামার মেয়ের সাথে এই ঘটনাটা ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের, এরপর ধর্ষক বছরখানেক মতো কারাগারে ছিল। এবং সে জামিনে বের হয়েই মামা ও তার কলেজপড়ুয়া ছেলের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা করে বসে। ঘৃন্য ব্যাপার হলো ওখানকার পুলিশ জানতো যে এই মাদকের মামলার বাদীই হলো দেড় বছর আগের ধর্ষক, আর বিবাদী হলো ভিক্টিমের ফ্যামিলি। তারপরেও ক্যানো তারা মামলাটা নিল? সুতরাং ধর্ষনের বিচার চাওয়ার পাশাপাশি স্বপন মামা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে করা মাদকের মামলা প্রত্যাহারের জন্যে কাজ করুন যারাই এটা নিয়ে উদগ্রীব।
৩) যেখানে দেশে ধর্ষনের আলামত লুকিয়ে ফেলা হয় সেখানে ২০১৮'র সেপ্টেম্বরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সদর হাসপাতালে করা স্বপন মামার মেয়ে তানিয়ার "ভ্যাজাইনাল স্যোয়াব এক্সামিনেশনে" স্পষ্ট বলা হয়েছে "We find sign of recent forceful sexual intercourse" অথচ তারপরেও কেন ধর্ষককে আদালত জামিন দিলো পুর্নাঙ্গ বিচার শেষ হবার আগেই?
৪) সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো ধর্ষকের বয়স বলা হচ্ছে সব জায়গায় ৭০, যেটা সম্পুর্ন মিথ্যা। ধর্ষকের নাম হলো বাচ্চু মিয়া এবং তার বর্তমান বয়স ৫২ বছর। আপনি ৭০ বছর বলায় অনেকের আবার সেন্টিমেন্টাল পারদ উপচে পড়তে পারে। সো, সে একটা বুইড়া ব্যাটা না- সে সক্ষম পুরুষ হয়ে এই কাজ করসে। তাই তার রেইপকে "ওল্ড এইজ কেইসে" ফেইলেন না প্লিজ, সোশাল মিডিয়ায় ৭০ বছর বলে। (বয়সের তথ্যটা চার্জশিট এর ছবিতেই আছে)
একটা কথাই বলবো। আমাদের এই যে টিএসসি সেটা কিন্তু ইট পাথরের উপরে দাড়ানো না, সেটা এই যে বারেক মামা, স্বপন মামাদের সাথে আমাদের গড়ে উঠা সম্পর্কের উপর দাড়ানো। আমরা জীবনের পাঠ নেই এদের কাছ থেকে। অথচ আজ তারাই কতো কষ্টে! মিথ্যে মামলায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন, নিজের আটিজমে আক্রান্ত মেয়েকে ধর্ষিত হতে দেখছেন আর বছর ঘুরেই ধর্ষককে হাত উঁচিয়ে বের হয়ে যেতে দেখছেন!
আমাদের টিএসসির প্রাণগুলো যেন টিকে থাকে! নতুন বছরে স্বপন মামারা যেন সুবিচার পান- এই প্রত্যাশাই করি।