ককপিটে মা-মেয়ে: উড়লো বিমান, লেখা হলো ইতিহাস!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
সুজি গ্যারেট ত্রিশ বছর ধরেই ওড়াচ্ছেন বিমান। সেই বিমানেই তার পাশে কো-পাইলটের সীটে উঠে এলেন তার মেয়ে। রানওয়ে ছেড়ে বিমান আকাশে ওড়ার সঙ্গে সঙ্গেই লেখা হলো ইতিহাস; এর আগে কখনও মা-মেয়ের জুটি একসঙ্গে বিমান ওড়ায়নি।
কেমন হয় যদি একদিন আপনি আপনার বাবার সাথে অথবা আপনার মায়ের সাথে একই কর্মক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যান? হাতছোঁয়া দূরত্বে পাশাপাশি থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন হবে? কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই ভালো লাগবে। বাবা অথবা মায়েরও নিশ্চয়ই গর্ব হবে, তার এতটুকুন ছোট্ট শিশুটা দেখতে দেখতে কত বড় হয়ে গিয়েছে। আজ তার পাশে বসেই কাজ করছে সেদিনের সেই ক্ষুদে মানুষটি। সময়ের ফেরে সংসারের একটি খুঁটি হয়ে গিয়েছে। যেকোনো বাবা-মা'র জন্যেই এটা একটা গর্বের বিষয়। তৃপ্তির বিষয়। এরকমই একটা খবর সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়, নেটিজেনদের হাতে হাতে ঘুরছে এ সংবাদ। জানা যাক সেটি নিয়েই৷
স্কাই ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের সিনিয়র ক্যাপ্টেন সুজিকে দিয়ে শুরু হবে এ গল্প। যিনি গত ত্রিশ বছর ধরে কাজ করছেন পাইলট হিসেবে। তার স্বামীও পাইলট। বিমান নিয়ে কাজের সূত্রেই সুজি ঘুরে বেড়ান এ মহাদেশ থেকে ও মহাদেশে৷ কো-পাইলটের আসনে একেক সময়ে একেকজন পাইলট। রোস্টারমত যে যখন আসে আর কী। কর্মসূত্রে অনেক পাইলটই পরিচিত হয়ে গিয়েছে এ ত্রিশ বছরের কর্মজীবনে। শিডিউল মত সেদিনও সেরকমভাবেই ককপিটে পাইলটের আসনে বসেছিলেন সুজি। কো-পাইলট হিসেবে তার পিছুপিছু এসে যে বসলো, তাকে দেখে সুজি কী একটু চমকে গেলেন? কো-পাইলট হিসেবে বসেছে যে তারই মেয়ে! এরপর মা-মেয়ে দুইজন মিলেই সেলফি তুললেন ককপিট থেকে। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লো অনলাইনে। হয়ে গেলো ইতিহাস। এ ছবি ছড়িয়ে পড়লো সারাবিশ্বে৷
মা সুজি গ্যারেটকে দেখেই স্কাই ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সে যোগ দিয়েছিলেন তার মেয়ে ডোনা গ্যারেট। সুজি গ্যারেটের স্বামী ও ছেলেও পাইলট। পুরো পরিবারই যুক্ত বিমানচালনার পেশাতে। ডোনা ছিলো এ পেশায় নবতম সংযুক্তি। ডোনা নিজেও খুশি, মায়ের সাথে পেশাগত জীবন ভাগাভাগি করে নিতে পেরে। তাছাড়া তাদের হাস্যোজ্জ্বল ছবিটা অনলাইনে ভাইরাল হওয়াতেও সে খুশি। ডোনা অকপটে স্বীকার করেও নিলেন, ছোটবেলা থেকেই বাসায় বাবা-মা'কে দেখেদেখেই এই পেশার প্রতি দুর্বলতা তৈরী হয় ডোনার। এক্ষেত্রে মায়ের অবদান বেশি বলেই স্বীকার করেন ডোনা। মা সুজি গ্যারেট অনেকক্ষেত্রেই ডোনার জন্যে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। যে অনুপ্রেরণার ফলাফলই আমরা দেখি ভাইরাল হওয়া এ ছবিতে৷
মা সুজি গ্যারেট কী একটু নষ্টালজিকও হয়ে গেলেন সে সাথে! ত্রিশ বছর আগে তিনিও তো এরকমই এক তরুণী হয়ে বসেছিলেন প্রথমবার বিমানের ককপিটে। সেখানে এতগুলো বসন্ত পেরিয়ে এখন তার মেয়েও তার পাশে। এভাবেই কী উত্তরাধিকারী তৈরী হয়! এভাবেই কী স্মৃতি বয়ে নিয়ে চলে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম! এভাবেই কী ভারবহন করে পাশাপাশি চলা হয়? যেটাই হোক না কেন, অসম্ভব মন ভালো করে দেয়া এ ছবিটি দেখে আমরাও আশা করি, প্রত্যেক পরিবার এরকমই হোক। এরকমভাবেই পরিবারের সব সদস্য মিলে ভালোবাসুক তাদের পেশাকে। কর্মক্ষেত্র, পরিবার, সংসার...সব মিলেমিশে হোক একাকার।
সুজি ও ডোনা গ্যারেটের জন্যে রইলো শুভকামনা।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন