আলীর সাফল্যের গল্পটা আর জানা হবে না ঈশানের...
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
বড় হয়ে কী হতে চাও? সুশান্তের করা এ প্রশ্নের উত্তরে দ্বিগবিজয় জানিয়েছিলো- সিনেমাটার মতোই, বাস্তব জীবনেও একজন ক্রিকেটার হতে চায় সে। তাইতো শুটিং এর শেষদিনে সুশান্তকে কথা দিয়েছিলো- এরপর আবার তখনই তার সাথে দেখা করবে যখন একজন সফল ক্রিকেটার হতে পারবে।
ছেলেটার নাম দ্বিগবিজয় দেশমুখ। ২০১৩ সালে তার বয়স ছিলো মাত্র ১৫। সেসময়ের 'কাই পো চে' সিনেমায় অভিনয় করেছিলো সে। তার অভিনীত চরিত্রটার নাম আলী। সিনেমায় আলীর স্বপ্ন ছিলো একজন ক্রিকেটার হবে। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছিলো ডিস্ট্রিক্ট লেভেল ক্রিকেটার ঈশান।
ঈশানের চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। তার নিজেরও চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছিলো এই সিনেমার মাধ্যমেই। সিনেমাটার শুটিং হয়েছিলো প্রায় ছয় মাস ধরে। সে সময়টাতে দ্বিগবিজয়ের সাথে দারুণ একটা বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিলো সুশান্তের। তাকে নাকি ছোট ভাইয়ের মতোই আগলে রেখেছিলো।
বড় হয়ে কী হতে চাও? সুশান্তের করা এ প্রশ্নের উত্তরে দ্বিগবিজয় জানিয়েছিলো- সিনেমাটার মতোই, বাস্তব জীবনেও একজন ক্রিকেটার হতে চায় সে। তাইতো শুটিং এর শেষদিনে সুশান্তকে কথা দিয়েছিলো- এরপর আবার তখনই তার সাথে দেখা করবে যখন একজন সফল ক্রিকেটার হতে পারবে। অতঃপর, দু'জনার দুটি পথ দু'দিকে গেছে বেঁকে।
এরই মাঝে কেটে গেছে সাতটা বছর। ইতিমধ্যেই বলিউডে নাম কুড়িয়েছেন সুশান্ত। ওদিকে দ্বিগবিজয়ও বসে ছিলো না। কঠোর পরিশ্রমে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটারের তকমা অর্জন করেছেন। খেলেছেন স্বনামধন্য রঞ্জি ট্রফি। অভিজ্ঞতা জমিয়েছেন মুস্তাক আলী ট্রফি থেকেও। মহারাস্ট্রের হয়ে ক্রিকেট খেলা এই ছেলেটা ডাক পেয়েছে এবারের আইপিএল-এও! তাকে দলে ভিড়িয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পেসার হিসেবে ব্যাটসম্যানদের ঘুম উড়ানোর কথা ছিলো তার।
প্ল্যান করেছিলেন আইপিএল খেলেই সুশান্তের সাথে দেখা করবেন দ্বিগবিজয়। তার দেয়া কথা রাখবেন। অথচ মহামারি করোনার লকডাউনে সময়মত খেলা হয়ে উঠলো না এই তরুণ তুর্কির। আর কাই পো চে সিনেমায় তার কোচের দায়িত্ব পালন করা সুশান্তের সাথে শেষ দেখাও হলো না তার।
সুশান্তও জানতে পারলেন না যে কথা রেখেছেন দ্বিগবিজয়। বড় ভাইটাকে বলা হবে না নিজের সফলতার গল্প। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না দ্বিগবিজয়। এই আফসোসের কথাই জানিয়েছেন হিন্দুস্তান টাইমসকে দেয়া সাক্ষাতকারে।
এর মাঝে অবশ্য একবার সুযোগ হয়েছিলো দু'জনার দেখা হবার। ধোনির বায়োপিকের শুটিং করার জন্য দ্বিগবিজয়ের শহরে এসেছিলেন সুশান্ত। কিন্তু নিজের প্রতিজ্ঞায় অটল থেকেছেন দ্বিগবিজয়। তাই প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার হবার আগে পর্যন্ত সুশান্তের সাথে দেখা না করার সিদ্ধান্তেই স্থির ছিলেন।
ধোনির বায়োপিকের সাফল্যের পর কপিল শার্মা শো তে- সুশান্ত বলেছিলেন, ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেটার থেকে ন্যাশনাল টিমের ক্যাপ্টেন বনে গিয়েছেন তিনি। কাই পো চে- গুজরাটি শব্দ। এর মানে হচ্ছে, যে মুন্সিয়ানার মাধ্যমে প্রতিপক্ষের ঘুড়ি কেটে দেয়া হয়। অথচ নিজেই ঐ কেটে যাওয়া ঘুরিটার মতো হারিয়ে গেলেন। সিনেমার গল্পটা বাস্তবতায় এসেও অসম্পূর্ণ রয়ে গেলো।
আরও পড়ুন-