মাত্র তিন বছর বয়সে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে ইউটিউবে আত্মপ্রকাশ ঘটে রায়ানের। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০২০ সালে সে হয়েছে ইউটিউব থেকে সর্বোচ্চ আয় করা ক্ষুদে ইউটিউবার। যুক্ত আছে বিশ্বসেরা অজস্র সব ব্রান্ডের সাথেও! সব মিলিয়ে বছরে যে টাকা রায়ান উপার্জন করে, তা শুনলে চক্ষু চড়কগাছ হবে যে কারোরই!

প্রত্যেক জেনারেশনের কিছু না কিছু স্বকীয় বৈশিষ্ট্য থাকে। এক জেনারেশনের পর আরেক জেনারেশন যায়, বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আসে। আজকালকার জেনারেশন যেমন প্রযুক্তি নিয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। তিন চার বছরের বাচ্চাও জানে ইউটিউব কী, ফেসবুকে কীভাবে লিখতে হয়, স্ন্যাপচ্যাটে কীভাবে ফিল্টার চেঞ্জ করতে হয়। আমাদের সময়ে এগুলো ছিলো কল্পনারও অতীত। এই সময়ে এসে সেই সময়ের দূরতম কল্পনাগুলো খুবই গড়পড়তা বাস্তব। অনেক ক্ষুদে শিশু আজকাল শুধু ইউটিউবে আসক্তই হচ্ছে না, তারা ইউটিউবে কন্টেন্ট বানিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারও আয় করে ফেলছে। এরকম শিশুদের মধ্যেই সবচেয়ে প্রভাবশালী যে শিশু, তার নাম- রায়ান কাজী। বয়স মাত্র নয়। পড়াশোনা করছে আমেরিকার একটি স্কুলে। ইউটিউব থেকে এ বছরে যার মোট আয়ের পরিমান ২৯.৫ মিলিয়ন ডলার অথবা ২৫১ কোটি টাকা!

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে থাকা এই বিস্ময়-বালক মাত্র তিন বছর বয়সেই 'কন্টেন্ট ক্রিয়েটর' হিসেবে ইউটিউবে আসে। এর আগে,  আরেকটু ছোট বয়সে খেলনার ভিডিও দেখতে যখন সে ইউটিউব ব্যবহার করতো, তখন থেকেই তার ইচ্ছে ছিলো, তার নিজেরও একটি ইউটিউব চ্যানেল হবে। এরপরই ২০১৫ সালে তাকে চ্যানেল খুলে দেয় তার বাবা-মা। সেখানে শিক্ষামূলক ভিডিও, খাবারের ভিডিও, খেলনার ভিডিও অনেক কিছুই দিতে শুরু করে সে। ইউটিউব চ্যানেল খোলার দুই বছর পরে, ২০১৭ সালে সে হয়ে যায় ইউটিউবের শীর্ষ আয়কারী। ২০১৮ সালেও শীর্ষ আয়কারী ছিলো। গত বছর বাদ দিয়ে এ বছরে এসে তৃতীয়বারের মতন শীর্ষ আয়কারী ইউটিউবার হয়েছে রায়ান। বর্তমানে তার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২৭.৬ মিলিয়ন!

তার উপস্থাপনার স্টাইল-ই তাকে বানিয়েছে সবার থেকে স্বকীয়! 

প্রথমদিকে তার চ্যানেলের নাম ছিলো 'রায়ান'স টয়েস রিভিউ।' পরে নাম পরিবর্তন করে করা হয় 'রায়ান'স ওয়ার্ল্ড।' রায়ানের আসল নামও রায়ান কাজী নয়। রায়ানের পুরো নাম রায়ান গুয়ান। ইউটিউবে দেয়ার সময় 'গুয়ান' পালটে 'কাজী' করা হয়।

মিলিয়ন মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবারের ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি রায়ানের আছে নিজস্ব ব্রান্ডের খেলনা ও পোশাক। টিভি চ্যানেল নিকিলোডিওন এর সাথেও রয়েছে তার কোলাবোরেশন। এছাড়া বিশ্বখ্যাত নানা ব্রান্ডের সাথেও যুক্ত আছে রায়ান। এসব কোলাব থেকেও অনেক টাকা আসে রায়ানের। রায়ানকে তাই নেটিজেনরা আদর করে ডাকে 'প্রভাবশালী শিশু।'

ছেলেমেয়ের শৈশব বেশ অনেকদিন ধরেই অন্তর্জালের হাতে আটক। বাবা-মা'রা আজকাল ছেলেমেয়েদের হাতে তুলে দিচ্ছে নানারকম গ্যাজেট। জন্ম হচ্ছে রায়ানের মতো  'সেলিব্রেটি কিড' দের। কাজটি ভালো হচ্ছে নাকি খারাপ, তা বিভিন্ন ভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। সে প্রসঙ্গে তাই যাচ্ছি না। কিন্তু কোথায় গিয়ে যেন একটু অসামঞ্জস্য হয়ে যাচ্ছে সব। আক্ষেপ টা ঠিক সেখানেই।

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা