কেউ ভুল বললে সেই ভুল নিয়ে কথা হোক, খুব সমস্যা মনে করলে ভুল বলা লোকটাকে ব্যান করা হোক। কিন্তু বলার আগেই কথা বলার অধিকার ডিরেক্ট কেড়ে নেয়া কোনো সমাধান না। কোনোভাবেই না। এটা স্পষ্টতই ফ্যাসিবাদ।

টেন মিনিটস স্কুল নিয়ে ছোট্ট একটা পয়েন্ট বলি। প্রচুর মানুষ বলছেন, টেন মিনিটস স্কুলের কাজ হচ্ছে পড়াশোনা করানো। এর বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে তাদের বলার দরকার নাই। ফোকাস পড়ালেখাতেই থাকুক। এমন পোস্ট আর কমেন্টে প্রচুর সহমত।

এই কথাটা ভয়ানক। কেন ভয়ানক বলি। টেন মিনিটস স্কুল বলে তো আলাদা কিছু নাই। কিছু ব্যক্তির সম্মিলিত নামই টেন মিনিটস স্কুল। আপনি চাইছেন এই মানুষগুলো পড়ালেখা করানোর বাইরে আর কোনো ইস্যু নিয়ে কথা না বলুক।

প্রতিটা মানুষই তো ভাই কোনো না কোনো কাজে আছে। আমি উপন্যাস লেখক ও চিকিৎসক। তাহলে আমিও তো এই ট্যাগে আটকে গেলাম। আমার কাজ উপন্যাস লেখা এবং চিকিৎসা দেয়া। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক বা অন্য কোনো কিছু নিয়ে আমার কথা বলার রাইট নাই।

এভাবে বললে সব পেশাজীবি আউট। নির্দিষ্ট সামান্য কিছু মানুষ ছাড়া সবাইকেই চুপ থাকতে হবে। চুপ রাখাটা কেমন সলিউশন?

বিতর্ক যে ইস্যু নিয়ে সেটা টেন মিনিটস স্কুলের ক্লাসে তৈরি হয়নি, হয়েছে তাদের মেম্বারদের ব্যক্তিগত প্রোফাইলে। টেন মিনিটস স্কুলে তো পড়াশোনাই হচ্ছে। এর বাইরে তার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি ভুল করে, ভুল বলে থাকে...সেই সুনির্দিষ্ট ভুল নিয়ে আলোচনা হতে পারে, স্টেপ নেয়ার কথা বলা যেতে পারে। একটা পাবলিক প্ল্যাটফর্মে কাজ করার জন্য একদম চুপ হয়ে যেতে হবে এটা কেমন কথা?

কথা যে কেবল ধর্মীয় কন্ট্রোভার্সিতে বলতে হয় তা না, অনেক রাজনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় বা মানবিক ইস্যুতেও তো কথা বলার দরকার পড়ে। সেখানে কথা বলা লাগবে না?

এভাবে চুপ করানোর ব্যাপারটা ভালো লাগল না। কেউ ভুল বললে সেই ভুল নিয়ে কথা হোক, খুব সমস্যা মনে করলে ভুল বলা লোকটাকে ব্যান করা হোক। কিন্তু বলার আগেই কথা বলার অধিকার ডিরেক্ট কেড়ে নেয়া কোনো সমাধান না। কোনোভাবেই না। নো ওয়ে। এটা ফ্যাসিবাদ। সামাজিক ফ্যাসিবাদ।

রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের চেয়ে সামাজিক ফ্যাসিবাদ বেশি ভয়ানক। রাজনৈতিক ফ্যাসিস্ট খুব বেশিদিন টিকে থাকে না। ৫-১০-১৫ বা ৫০ বছর পরে হলেও তাকে সরে যেতে হয়। কিন্তু সামাজিক ফ্যাসিবাদ টিকে থাকে।

মানুষের কথা বলার অধিকারটা কেড়ে নিয়েন না প্লিজ।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা