আমাদের দেশেও এমন আইন করাটা এখন সময়ের দাবী। বাংলাদেশে যে হারে ধর্ষণ ও শিশু যৌন নিপীড়ন বাড়ছে তাতে এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হয় তবে আমাদের নারী ও শিশুদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ে থাকবে।
রাসায়নিক ইনজেকশন দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হবে ধর্ষকের যৌন ক্ষমতা। একবার এই ইনজেকশন পুশ করলে অন্তত ১৩ বছরের জন্য যৌন ক্ষমতা হারাবে যৌন অপরাধীরা। ধর্ষক এবং শিশু যৌন নিপীড়নকারীদের এভাবেই শাস্তির ব্যবস্থা করেছে ইউক্রেন সরকার। এবং এই আইন ইতিমধ্যেই গতবছরের জুলাইতে পাশ হয়েছে ইউক্রেনের সংসদে। তবে এই আইনের আওতায় আসতে হলে অবশ্যই প্রথমে অভিযোগ প্রমাণ হতে হবে। আর এই শাস্তি প্রয়োগ করা হবে শুধুমাত্র কারাবাসী আসামীদের উপর। যাদের বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।
ইউক্রেনের সরকারি সমীক্ষণে জানা যায়, ২০১৭ সালেই ৩২০ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এখনকার বাস্তবতা আরো ভয়ানক। সেই সংখ্যা হাজারের কোটা ছাড়িয়ে গেছে এখন। সেসকল ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের কাছে দায়ের করা মামলা থেকেই এই আইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইউক্রেনের আইনে শিশুদের ধর্ষনকারীদের যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান নেই।
কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে ধর্ষকরা আবার একই অপরাধে লিপ্ত হয়। এই সময় তাদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। তাই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সেদেশের সরকার। এই আইনে ধর্ষণকারী হিসাবে কারাদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকাভুক্ত করার জন্য একটি সরকারি শাখাও চালু করা হয়েছে। এছাড়া শিশু ধর্ষনের সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছর থেকে বাড়িয়ে ১৫ বছর করা হয়েছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ব্যাপারগুলো মাথায় রেখেই এই ইনজেকশন প্রস্তুত করা হয়েছে। এই ইঞ্জেকশন কমাবে যৌন উত্তেজনা, সাথে নিরাপদ রাখবে নিপীড়ক ও নিপীড়িতদের।
ইউক্রেনের ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর ধর্ষণের ঘটেছে সম্প্রতি। ১১ বছরের শিশু দারিয়া লুক্যানেনকোকে নৃশংসভাবে যৌন অত্যাচার চালিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছিলো। মেয়েটির শরীরজুড়ে ছিলো ক্ষতের চিহ্ন, এবং যোনি ছিলো ছিন্নভিন্ন। ঘটনার দোষী নিকোলে তারাসভের বয়স মাত্র ২২। তাকে কাউন্সিলিং করে জানা সে ভয়ঙ্কর সেক্স এডিক্ট, এবং তার বিন্দুমাত্র অপরাধবোধ নেই এই ব্যাপারে। এর আগেই সে একাধিকবার একই ঘটনা ঘটিয়েছে। তার আচরনে প্রমাণ দেয় ভবিষ্যতেও ঘটাবে। অধিকাংশ যৌন অপরাধীরাই এমন মানসিকতার হয়ে থাকে। তাই ধর্ষকদের নপুংসক করে দেয়ার আইন প্রয়োগ করা ছাড়া কোনো সমাধানে আসতে পারছিলেন না বিশেষজ্ঞরা। বিচার না করে, শাস্তি না দিয়ে যৌন অপরাধ কোনোভাবেই কমানো সম্ভব না বলে সতর্ক করেছেন তারা।
আমাদের দেশেও এমন আইন করাটা এখন সময়ের দাবী। বাংলাদেশে যে হারে ধর্ষণ ও শিশু যৌন নিপীড়ন বাড়ছে তাতে এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হয় তবে আমাদের নারী ও শিশুদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ে থাকবে। এবং এই হুমকি দিনকে দিন বাড়তেই থাকবে। আমরা চাইলেও তখন আর কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না, অসহায়ের মতো ভিক্টিম হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না আমাদের মা বোনদের কাছে। একটু ঠান্ডা মাথায় ভেবে বলুন তো, বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের প্রতি যে ভয়াবহ নৃশংসতার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত উঠে আসছে সেখানে যদি কখনো নিজ পরিবারের কোনো সদস্যকে দেখতে পান, তবে কেমন লাগবে?