যদি মনে হয় ধর্ষণের জন্য মেয়েটার পোশাক, কিংবা রাতবিরাতে বের হওয়াটা দায়ী, তবে আগামীকাল একটা বোরখা কিনবেন, কেউ যেন না বোঝে আপনি ছেলে, সেভাবে হাঁটবেন, বাসে চড়বেন, মার্কেটে যাবেন , স্কুল , কলেজ, অফিসে যাবেন এক মাস। বিশ্বাস করুন আপনি বুঝে যাবেন ধর্ষণের জন্য পোশাক না, ইতর মানসিকতা দায়ী...

একটা বিষয় ক্লিয়ার করি। ধর্ষণ কি সেটা নিয়ে অনেকর মধ্যে এখনো ভ্রান্ত ধারণা আছে। মনে হচ্ছে বিষয়টা  পরিষ্কার করা দরকার। কার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সাথে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করাটাই ধর্ষণ। সেটা ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 

একজন বারবনিতা যে যৌনতা বিক্রি করে পেট চালায়, সে কোন কারণে তার যৌনতা বিক্রি করতে রাজি হল না, হয়ত তার শরীর ভাল না কিংবা মন ভাল না কিংবা অন্য কোন কারনে সে সিদ্ধান্ত নিল সে যৌনতা বিক্রি করবে না।  এবং তাকে যদি কেউ জোর করে তার ইচ্ছার  বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্কে জেতে বাধ্য করে  তবে সেটাই ধর্ষণ।

আরও স্পষ্ট করি, স্ত্রী কোন কারণে যৌনতায় আগ্রহী না, এবং স্বামী যদি সেখানে জোর করে সেটাও ধর্ষণ। এখন প্রশ্ন হল স্ত্রী কেন আগ্রহী না? তার অসংখ্য কারণ থাকতে পারে, হয়ত সে স্বামীর কোন আচরণে ভীষণ ভাবে আহত , অথবা সে অসুস্থ অথবা কোন কারণে সে ঐ দিন ভাল বোধ করছে না। এ  কথা স্বামীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। যদি সে ভাল বোধ না করে এবং স্ত্রী তার হাত পা বেঁধে মারধোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তবে সেটা ধর্ষণ। যদিও পুরুষের ক্ষেত্রে এটা হয় না, এটা কে ধর্ষণ না বলে শারীরিক নির্যাতন বলাই শ্রেয় এবং  কারণটা বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন সবাই বোঝে  এবং জানে। 

এবার আসি একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে, রাত ২টার সময় একটা মেয়ে যদি বদ্ধ মাতাল হয়ে রাস্তায় পরে থাকে তবে আপনি কি করবেন? তাকে হয় হসপিটালে অথবা বাসায় নিয়ে যাবেন। যেটা আপনি একটা ছেলের জন্য করেন কিংবা করবেন। মেয়েটা কিংবা ছেলেটা রাস্তায় মাতলামি করে কোন আইন ভাঙে, সেটা অবশ্যই অন্যায়, সেজন্য তার শাস্তি হবে আইনে,  আপনার যৌন লালসায় নয়। এটাই সভ্যতা, ভদ্রতা। যেমন সভ্য পুরুষ তার স্ত্রীর প্রতি জোর খাঁটায় না, এমন কি সভ্য লোকটি তার বন্ধু কিংবা বান্ধবী, আত্মীয় কিংবা আচেনা কারো দুর্বলতার সুযোগ নেয় না বরং সাহায্য করে। 

আরও সহজ করে বলি, রাত করে বাসায় ফেরা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবার কিংবা বন্ধুর বাসায় থেকে যাবার অধিকার সবার আছে। আপনার পাশে আপনার ছেলে বন্ধুটা যেমন নিরাপদে শুয়ে থাকে তেমন মেয়ে বন্ধুটাও থাকবে এটাই হল বন্ধুত্ব। আর যদি সেটা না পারে তবে আপনার এখনো সভ্য আচরণ শেখা বাকি আছে। 

যদি এর পরেও মনে হয় মেয়েটার পোশাক, কিংবা রাতবিরাতে বের হবার জন্য সে ধর্ষিত হয়েছে তবে আগামীকাল একটা বোরখা কিনবেন ,কেউ যেন না বোঝে আপনি ছেলে, সেভাবে হাঁটবেন, বাসে চড়বেন, মার্কেটে  যাবেন, স্কুল , কলেজ, অফিসে যাবেন এক মাস। বিশ্বাস করুন আপনি বুঝে যাবেন ধর্ষণের জন্য পোশাক না, ইতর মানসিকতা দায়ী।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা