বুলিং এর শিকার সেই শিশুটা তার সাহায্যার্থে তোলা সব অর্থ দান করে দিলো...
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
এ শিশুটা কী জঘন্য বুলিং এর শিকার হলো। এরপর বলা হলো সহজ অর্থ উপার্জনের জন্য নাটক করছে সে। অথচ তার সাহায্যার্থে তোলা সকল অর্থ দান করে দিলো সে...
কোয়েডিন বেইলস। মনে আছে আপনাদের তার কথা? একটি ভিডিও যাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এনে দিয়েছিলো। ৯ বছর বয়সী কোয়েডিন একন্ড্রপ্লাজিয়া নামক বামন রোগে আক্রান্ত। এটাই যেন তার অপরাধ। আর এই অপরাধেই তাকে অপমান করে স্কুলের সহপাঠীরা। সে অপমান সইতে না পেরে মরে যেতে চেয়েছিলো সে। আর এমনই এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো কিছুদিন আগে।
কোয়েডিন এর মা ইয়ারাকা বেইলস ফেসবুক লাইভে এসে দেখিয়েছিলেন তার বাচ্চার বিধ্বস্ত অবস্থা। অঝোরে কাঁদছিলো শিশু কোয়েডিন। রাগে কষ্টে শরীর কাঁপছিলো তার। বারবার নিজের মৃত্যুকামনা করছিলো সে। ইয়ারাকা বেইলস, অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের বাসিন্দা। প্রতিদিনের মতোই নিজের সন্তানকে স্কুল থেকে আনতে যান। স্কুলে যেয়ে চোখের সামনেই সন্তানকে বুলিং হতে দেখেন তিনি। সেখান থেকে ছেলেকে গাড়িতে নিয়ে এসে বসান। তারপরেই অবতারণা ঘটে ভিডিও ফুটেজে দেখানো করুণ দৃশ্যের।
মাত্র দুই দিনেই ভিডিওটি ছাড়িয়ে যায় কয়েক কোটি ভিউ, ছড়িয়ে যায় লাখ লাখ শেয়ারে। পুরো বিশ্বের নেটিজেনরা এগিয়ে আসেন কোয়েডিনকে সাহস জোগাতে। বিখ্যাত অভিনেতা হিউ জ্যাকম্যান টুইট করে বাড়িয়ে দেন বন্ধুত্বের হাত। শিশু কোয়েডিনকে ডিজনিল্যান্ড ঘুরিয়ে আনার জন্য কমেডিয়ান ব্র্যাড উইলিয়ামস একটি গো-ফান্ড-মি পেইজ খোলেন। সেখানে জমা হয় ৪ লাখ ৭০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার। যে অর্থ দিয়ে শিশু কোয়েডিনের ডিজনিল্যান্ড ঘুরে আসবার কথা ছিলো। সেই ট্রিপ বাতিল করেছে শিশুটা। পুরো অর্থটাই দান করে দেয়ার ইদ্ধান্ত নিয়েছে কোয়েডিন এবং তার পরিবার। কথা ছিলো ডিজনি ঘুরে আসার পর যে অর্থ বাঁচবে সেটা দান করা হবে। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ অর্থ দান করে দেয়া হবে।
এই গো-ফান্ড-মি পেইজ নিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি এর আগে। অনেকে তো প্রশ্ন তুলেছিলো তারা সহজ অর্থ উপার্জনের জন্যেই এই নাটক করছেন। শিশু কোয়েডিনকে ১৮ বছর বয়সী পেশাগত অভিনেতা উল্লেখ করেও কিছু ইউটিউবার কন্সপিরেসি থিওরি কপচিয়েছিলো। ধোপে টেকেনি সেসব থিওরি।
এদিকে, অল স্টার এনআরএল রাগবি টিম শিশু কোয়েডিনের নেতৃত্বে মাঠে নেমেছিলো। শুধু কোয়েডিনই নয়। এ রোগে আক্রান্ত সবাইকে সাহস জুগিয়েছে ঘটনাটি। আমরা নিজেরাও সাধারণত না বুঝেই বর্ণবাদী আচরণ করে থাকি। কথায় কথায় মানুষকে অপমান করি তাদের আকার, গায়ের রঙ নিয়ে। অথচ একটা মানুষ নিজেই তো আর নিজেকে তৈরি করেনি। অতএব, কিছু বলার আগে ভালাভাবে ভেবেচিন্তে বলা উচিত। আমরা হয়তো জানিও না, শুধুমাত্র আমাদের মুখের কথায় কষ্ট পেয়ে অনেকে নিজের মৃত্যুও কামনা করে থাকে। শিশু কোয়েডিনের ঘটনাটি শিক্ষা হয়ে থাক আমাদের জন্য। নিরাপদ হোক প্রতিটি শিশুর জীবন।
আরও পড়ুন- বুলিং এর শিকার হয়ে নিজের মৃত্যু কামনা করছে শিশুটি!
অস্ট্রেলিয়ায় বুলিং এর শিকার শিশুটির ঘটনা কতটুকু সত্য?