থানায় ওসি নিয়োগ হয় এলাকার সাংসদের চাহিদা অনুযায়ী। একজন এমপি না চাইলে ওই ওসি সেখানে থাকতে পারবেন না। এবার বলেন, ওসি যেখানে সংসদ সদস্যের কথায় নিয়োগ হয়, সেই ওসি তার উপরের কর্মকর্তাদের কথা শুনবেন নাকি নেতাদের?
টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে রোজ নতুন নতুন অভিযোগ দেখছি। এই খবরগুলো যদি আগেই মিডিয়ায় আসতো! আজ শুনলাম মহেশখালী থানার ওসি থাকাকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার পর তার পরিবার মামলা করতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও ছয় পুলিশসহ স্থানীয় একজন সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ফেরদৌস চৌধুরীসহ তাঁর বাহিনীর ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী হামিদা বেগম অভিযোগ করেছেন, ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাতটার দিকে ফেরদৌস বাহিনীর সহায়তায় বন্দুকযুদ্ধের নামে তাঁর স্বামী আবদুস সাত্তারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে মহেশখালী থানার তখনকার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ থানায় মামলা নেননি। অবশেষে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি। সেই আদেশের আলোকে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত আবেদন করেও কোনো সুরাহা হয়নি।
এই অভিযোগ পড়তে পড়তেই আরেকটা খবর দেখলাম, রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোলাম মোস্তফা নামের ওই যুবক বলছেন, ডিবি কার্যালয়ে তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) বেলায়েত হোসেন।
ক্রসফায়ার ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা আদায় এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে মোস্তফা গতাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা করেছেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
ওদিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুর রহমান বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতারা। গতকাল বুধবার ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তারা অভিযোগ করেন, ওসি সফিকুর রহমান ভাঙ্গা থানায় যোগদানের পর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা অজুহাতে থানায় এনে শারীরিক অত্যাচার, নির্যাতন করে টাকা দাবি করেন। অন্যথায় মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখান।
এই তিনটার তো পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। আরেকটা ঘটনা না বললেই নয়। স্বয়ং পুলিশ কমকর্তারা বলছেন, রাজধানীর পল্লবী থানায় বিস্ফোরিত বোমাটি থানার ভেতরে নিয়ে গিয়েছিলেন কয়েকজন পুলিশ সদস্যই। অসাধু পুলিশ সদস্যদের একটি অংশ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা নিয়ে ওজন মাপার মেশিনের ভেতরে লাগানো বোমাটি ‘সংগ্রহ’ করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল অন্য নেতাদের ফাঁসিয়ে দেওয়া।উদ্দেশ্য ছিল— বোমা উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করা এবং কাউকে সেই নাটকে ফাঁসানো এবং মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজটি হচ্ছিল।
সবগুলো খবর আজকে একদিনের। আর গত কয়েকদিনে মিডিয়ার খবর শুনলে মনে হবে, না জানি এই দেশের পুলিশ কতো খারাপ! এই দেশের পুলিশ খুব ভালো অবশ্যই নয়, কিন্তু আমাদের পুলিশ বাহিনীতে কী ভালো কর্মকর্তা নেই? আমি নিজে কিন্তু অনেক ভালো, সৎ ও মানবিক কর্মকর্তাকে চিনি।
তাহলে কী অভিযোগগুলো মিথ্যা? না সেটাও বলছি না। বরং এর বাইরে আরও অসংখ্য অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু সেটা কী শুধু পুলিশের? আমাদের দেশের কোন পেশার লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই? কোন পেশা আছে যেখানে ভালো ও মন্দ দুটোই নেই। এই দেশ যেমন, এই দেশের জনগন যেমন, এই দেশের রাজনীতিবিদরা যেমন এই দেশের আমলা, পুলিশ, বিচারকব্যবস্থা, ডাক্তার, সাংবাদিক সবাই তেমন। পুলিশ বিচ্ছিন্ন কিছু নয়।
আবার অনেকেই মনে করেন বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তারা সৎ হলেও থানার ওসি, পরিদর্শক, উপ পরিদর্শক বা নন ক্যাডার অফিসাররা মহাখারাপ, মহা ঘুষখোর। এমন সাধারণীকরণেও আমার তীব্র আপত্তি। অনেকদিন ধরে পুলিশে আছেন আমি এমন এক পরিদর্শর্ককে চিনি যিনি কোটি টাকার ঘুষের অফার ফিরিয়ে দিয়ে তার সন্তানটা যে বৃত্তি পেল সেই আনন্দে খুশি। তিনি সবসময় বলেন, আমি মরে গেলেও আমার সন্তানকে হারাম খাওয়াবো না। আবার কোটি কোটি টাকা আছে এমন পুলিশও আছে।
আমার আজকের লেখার মূল কথা হলো, পুলিশ কেন খারাপ হয়? আমি মনে করি যে কোন পেশাতেই হোক না কেন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কোন অপরাধের জন্য প্রথম দায়ী সে নিজে। আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীর সাতশ কোটি মানুষ অসৎ এই যুক্তিতে আমি অসৎ এটা ফালতু যুক্তি।
মনে রাখবেন, গায়ে পুলিশের পোষাক, সঙ্গে অস্ত্র থাকলে যে কারো মনে হবে আপনি ভয়াবহ ক্ষমতাশালী। কাজেই মূল্যবোধটা ভীষণ শক্ত হওয়া দরকার। আপনাকে মনে রাখতে হবে সবার আগে আপনি মানুষ। মানুষ হিসেবে আপনি কেন মানুষ খুন করবেন? কেন মানুষকে নির্যাতন করবেন? কেন অপারাধে জড়াবেন? কেন হারাম খাবেন? আমি মনে করি কোন পুলিশ সৎ ও মানবিক থাকতে না পারলে প্রথম দায়টা ব্যক্তির নিজের। আরেকটা দায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশের। অসৎ খারাপ লোকগুলোকে দিনের পর দিন পুষলে, পদোন্নতি দিলে পরিনতি এমনই হবে।
এরপরেই পুলিশ খারাপ হবার জন্য আমি দায়ী করবো আমাদের রাজনীতিকে। হ্যা রাজনীতিকে। দেখেন আমি নানা কারণে বাংলাদেশ পুলিশকে শ্রদ্ধা করি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধযুদ্ধের সূচনা ২৫ মার্চ রাতে, তাতে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা গৌরবের। থ্রি নট থ্রি নিয়ে আধুনিক একটা সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই তো আত্মহত্যা ছাড়া কিছু না।
শুধু সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়েই তুলেনি, মুক্তিযুদ্ধে এককভাবে সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছেন এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এককভাবে আর কোন বাহিনী এভাবে আত্মত্যাগ করেনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের হিসাব অনুযায়ী, পূর্ব পাকিস্তানে পুলিশের ৩৩ হাজার ৯৯৫ জন সদস্য কর্মরত ছিলেন। এর মধ্যে ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য পাকিস্তান সরকারের আনুগত্য অস্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সেই পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে কেন আজকে এতো অভিযোগ?
হ্যা, আমি খুব পরিস্কার করে বলছি, এর সবচেয়ে বড় কারণ রাজনীতি। একটা দেশের পুলিশ খারাপ হবার সবচেয়ে বড় কারণ সেই দেশের রাজনীতি। এই দেশের পুলিশকে সবসময় সব ক্ষমতাসীনরা তাদের রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করেছে। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু। এরপর এমন কোন সময় নেই এমন কোন দিন নেই যেদিন ক্ষমতাসীনরা তাদের সব খারাপ কাজে পুলিশকে ব্যবহার করেনি।
পুলিশ নিয়ে নানা প্রতিবেদন করার পাশাপাশি পুলিশ সংস্কার কর্মসূচি (পিআরপি) নিয়ে ২০০৯ সালে আমি কাজ করেছিলাম। এ নিয়ে বেশ কয়েকটা রিপোর্ট করেছি। এর মধ্যে একটা রিপোর্ট ছিল রাজনৈতিক চাপ পুলিশের কাজে সবচেয়ে বড় বাধা। ওই প্রতিবেদনের শুরুতেই বলেছিলাম, রাজনৈতিক চাপ না থাকলে আসামি গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে তদন্ত সবই মান বজায় রেখে করার চেষ্টা করে পুলিশ। একটি জনবান্ধব পুলিশ পেতে হলে অবশ্যই তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।
আমি জানি না সেই স্বাধীনতা পুলিশ পাবেন কী কী না। আপনারা কী জানেন পুলিশ আইনে থানার ওসিকে প্রায় সব ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের আইনে ওসিকে কেন্দ্র করেই অনেককিছু। আপনারা কী জানেন এই ওসি নিয়োগ হয় এলাকার সাংসদের চাহিদা অনুযায়ী। তার মানে একজন এমপি না চাইলে ওই ওসি সেখানে থাকতে পারবেন না। এবার বলেন ওসি যেখানে সংসদ সদস্যের কথায় নিয়োগ হয়, সেই ওসি তার উপরের কর্মকর্তাদের কথা শুনবেন নাকি নেতাদের? কাজেই আমি মনে করি একটা দেশের পুলিশকে ঠিক করতে হলে সবার আগে সেই দেশের রাজনীতি ঠিক হতে হবে।
লিখলে আরও অনেক কিছু লিখতে পারতাম। সেসব না লিখে চলে আসি ক্রসফায়ারে। আপনাদের নিশচয়ই নারায়নগঞ্জের সাত খুনের কথা মনে আছে। আমি তখন প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার। দিনের পর দিন সাত খুন নিয়ে রিপোর্ট করেছি। একদম ঘটনার শুরু থেকে। ২০১৪ সালের এপ্রিলের ২৭ তারিখ ওই ঘটনা ঘটে টাকার বিনিময়ে।
এরপর বেশ কিছুদিন ক্রসফায়ার বন্ধ ছিল। আমার ধারণা হয়েছিল, ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ বুঝি আর হবে না। না কয়েক মাস পরেই আবার শুরু হলো। সেই যে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে নিয়ে রাতের বেলায় অস্ত্র উদ্ধারে বের হলে বা তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে বের হলে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা হামলা, গুলিবর্ষণ করে, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি ছোড়ে। দুই পক্ষে বন্দুকযুদ্ধের সময় ক্রসফায়ারে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় বন্দী ব্যক্তি।
ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের সব গল্প প্রায় এ রকম। ২০০৪ সালে শুরু হওয়া এই গল্প এখনো জারি আছে। কেবল ক্রসফায়ার-এর স্থলে কখনো কখনো ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘এনকাউন্টার’ শব্দ প্রতিস্থাপিত হয়েছে। আর অস্ত্রের বদলে প্রায়ই ইয়াবা পাওয়া যায়। সাবেক মেজর সিনহার ক্ষেত্রেও সেই ক্রসফায়ার ঘটেছে।
সাবেক মেজর সিনহা নিহতের ঘটনার পর আমি তিনটা কথা বলেছিলাম। লিখেছিলাম, কোনভাবেই আমার মনে হয়নি সিনহা অপরাধী। দ্বিতীয়ত, এসআই লিয়াকত যে একপাক্ষিকভাবে গুলি ছুঁড়েছে সেটি পরিস্কার। আর তৃতীয়টি ক্রসফায়ার বন্ধ। ঘটনার পরপরই লিয়াকত দায়ী এমন কথা লেখায় আমার অনেক পুলিশ বন্ধুরা ক্ষুব্ধ হয়ে ছিল। অনেকে ইনিয়ে বিনিয়ে নানা গল্প বানানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ঘটনাটা কতো ভয়াবহ।
সাবেক মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা চরম প্রশ্নবিদ্ধ। করোনার চার মাসে যে পুলিশ সবার প্রশংসা পেয়েছিল তারাই এখন চরম সমালোচতি। আমি খুব অবাক হেয় ভেবেছি এই ধরনের প্রদীপ-লিয়াকতদের বিরুদ্ধে পুলিশ আগে ব্যবস্থা না নিয়ে কেন দিনের পর দিন পুরুষ্কৃত করেছে?
সিনহার ঘটনায় পুলিশ ভয়াবহ অপরাধ ও একের পর এক মিথ্যাচার করেছে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু এই ঘটনায় গুজবের ওপর ভর করে যে সাংবাদিকতা হচ্ছে কিংবা আরও অনেক দায়িত্বশীল মানুষ যে আচরণটা করছে সেটা আমাকে হতাশ করেছে।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে আমার কাছে ভালো লেগেছে সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের মা নাসিমা আক্তারের কথাগুলো। তিনি সংবাদ সম্মেলন করে কথা দুদিন আগে বলেছেন, আমার ছেলে তো চলে গেল। আমি চাই, বাংলাদেশে এটাই যেন হয় শেষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। এটাই যেন শেষ ঘটনা হয়।
এই না হলে একজন মায়ের বক্তব্য। আমি চাই আমরা সবাই চাই এটাই যেন বাংলাদেশের শেষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়। অবশ্য এর আগে ৬ আগস্ট আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এটাই শেষ ঘটনা। ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
এর মানে কী আর কোন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যাকে হত্যার ঘটনা ঘটবে না নাকি কোন সাধারণ মানুষকেও হত্যা করা হবে না? আমরা সবাই চাই, আর কোন মানুষই যেন এভাবে মারা না যায়।মনে আছে কাউন্সিলর একরামের মেয়ের সেই কথা, বাবা তুমি কানতেছে যে!
দেখেন যার স্বজন হারায় সেই কষ্ট জানে! আমরা যদি এসব বন্ধ করতে না পারি দেখবেন এদের অভিশাপে আরও বহু ঘটনা ঘটবে। আর মনে রাখবেন আপনি যে প্রদীপ-লিয়াকততদের দিয়ে যদি দশটা খুন করান রাষ্ট্রের প্র্রয়োজন দেখিয়ে তাহলে দুই-চারটা খুন ওরা নিজেদের স্বার্থের জন্যও করবে। আর এভাবে খুন খুন করতে করতে অনেক ভালো মানুষও মরবে। কাজেই এই নারকীয় কাণ্ড বন্ধ করা জরুরী। সেই সঙ্গে পুলিশকে সত্যিকারের একটা পেশাদার বাহিনী করা প্রয়োজন যেখানে সততা ও মানবিকতা প্রাধান্য পাবে।
পুলিশের ভালো মানুষগুলোকে বলবো, করোনার সময় যেমন মানুষ আপনাদের ভালোবেসেছে এখন আবার সমালোচনা করছে। সেই সমালোচনা নিন। এরপর নিজেদের পরিশুদ্ধ করুন। আর রাষ্ট্রকে বলবো, পুলিশকে যদি আসলেই ভালো দেখতে চান তাহলে রাজনৈতিক কাজে পুলিশকে ব্যবহার বন্ধ করুন। একটা কথাই বলি সবাইকে। সব পেশার মানুষকে। মানব হয়ে বাঁচুন। দানব হয়ে নয়।
শেষ করছি সিনহার মায়ের কথা দিয়ে। সন্তানহারা এই মা অনুরোধ করেছেন, এই রাষ্ট্রে যেন আর কেউ তার ছেলের মতো মারা না যায়। তিনি বলেছেন, আমি সব মায়েদের প্রতিনিধি হিসেবে বলছি, আমি চাই, বাংলাদেশে এটাই যেন হয় শেষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়। আশা করছি এই রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রের প্রতিটা বাহিনী, প্রতিটা মানুষ কথাটা মনে রাখবেন। এটাই যেন শেষ ঘটনা হয়। ভালো থাকুক বাংলাদেশ। ভালো থাকুক প্রতিটা মানুষ।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন