সবচেয়ে বড় কালপ্রিট এবং হিপোক্রেট হচ্ছে দর্শকেরা। স্টারকিডদের এরাই প্রমোট করেছে, এরাই স্টার বানিয়েছে, এরাই ইন্সটাতে মিলিয়ন মিলিয়ন ফলোয়ারের জোগান দিয়েছে, আবার এখন এরাই গালাগালি দিচ্ছে নেপোটিজমকে!

ভারতে দেখলাম বড় বড় পার্সোনালিটির উপর মামলা হলো সুশান্তকে মেন্টালি সাপোর্ট না করার জন্য, স্টারকিড প্রমোট করার জন্য ইত্যাদি। আমার কথা হলো শুধু এরা কেন? দর্শকেরাও তো সমানভাবে দোষী, আমার মতে সকল দর্শকের বিরুদ্ধেও একটা করে মামলা করা উচিত যারা জুড়ুয়া ২, বাঘি, স্টুডেন্ট অফ দা ইয়ার কে হিট বানায় আর সোনচিড়িয়া'র মতো সিনেমাগুলো কে ডিজাস্টার বানায়। 

লোকে এখন যে প্রেম দেখাচ্ছে না, বেঁচে থাকতে তার ১% দেখালেও সুশান্ত আজকে মরতো না। গতবছর সোনচিড়িয়া নামে দুর্দান্ত একটা সিনেমা এসেছিল, কোনো স্টার কিডস ছাড়া সব আউটসাইডার পারফর্মারদের নিয়ে। কিন্তু এই মহান দর্শকেরা এই সিনেমাটাকে ডিজাস্টার বানিয়ে দিয়েছিলেন। বড় দুইটা প্রজেক্ট ছেড়ে সুশান্ত এই সিনেমাটা করেছিলো, তার দর্শকেরা তাকে কি প্রতিদান দিলো? এই সিনেমার ব্যার্থতা সুশান্তের ক্যারিয়ারের অন্যতম বড় ডাউনফল। তখন যদি নীতেশ তিওয়ারি তাকে ছিঁছোড়ে সিনেমা না দিতো তবে সোনচিড়িয়ার পর 'ড্রাইভ' এর সাথে সাথেই তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতো। 

আমার এখনও মনে আছে, কেদারনাথ এর সময় গরীবের টাইটানিক বলে কত ট্রল করা হলো, ড্রাইভের সময় ট্রলের বন্যা বইলো, দা ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস- এর রিমেক এনাউন্সমেন্ট এর সময় সুশান্ত কে ধুয়ে দিয়েছিলো এই পাবলিক, অথচ এরাই আজকে সেটা থিয়েটারে রিলিজ দিতে টুইটারে ট্রেন্ড করে! বেঁচে থাকতে যদি তাকে এই সাপোর্টটা দেখাতেন তাহলে তাকে ব্যাক করতে বলা এই দর্শকের কথা চিন্তা করে হয়তো সে বেঁচে যেত। 

সুশান্ত সিং রাজপুত

আমার মতে সবচেয়ে বড় কালপ্রিট এবং হিপোক্রেট হচ্ছে এই পাবলিক। স্টারকিডদের এরাই প্রমোট করেছে, এরাই স্টার বানায়, এরাই ইন্সটাতে মিলিয়ন মিলিয়ন ফলোয়ার দেয় আবার এখন এরাই গালাগালি দিচ্ছে কেন লঞ্চ করলো। আমার প্রশ্ন হলো আপনারা যদি মনে করেন স্টারকিড ট্যালেন্টেড নয় তাহলে কেন হলে গিয়ে এদের সিনেমা দেখেন? কিভাবে এদের সিনেমা বক্সঅফিসে হিট-সুপারহিট হয়? কেন ইন্সটাতে ফলো করেন ? আপনারা যদি স্ট্রাগলার দের সিনেমা দেখতেন, তাহলে তো ওরাও কাজ পেতো, ওরাও প্রমোটেড হতো। 

নওয়াজউদ্দিন এর ফটোগ্রাফ সিনেমাটা মুম্বাইয়ের একটা হলে দুই শো চলেছিলো, জানলে অবাক হবেন দুই শো মিলিয়ে মাত্র ৫ জন দর্শক হয়েছিলো, টোটাল লাইফটাইম কামিয়েছিলো মাত্র ১ কোটি রূপি। ব্রিলিয়ান্ট সব অভিনেতা নিয়ে দূর্দান্ত এই সিনেমা সোনচিড়িয়া বক্স অফিস থেকে কামিয়েছিলো মাত্র ৬ কোটি রূপি। অথচ গার্বেজ সিনেমা স্টুডেন্ট  অফ দ্য ইয়ার ২ কামায় ৭০-৮০ কোটি। দর্শক যে জিনিস খাবে তারা তেমন সিনেমাই বানাবে। দর্শক যাকে দেখবে তারা তাদের নিয়েই সিনেমা বানাবে। 

দর্শক যদি কাউকে সাপোর্ট করে তাহলে তাকে জীবনেও কেউ দমিয়ে রাখতে পারে না সে স্টার কিড হোক আর আউটসাইডার হোক। হতাশায় ভুগে আর্টিস্টদের অকাল প্রয়াণে বড় বড় মুভি মাফিয়ারা যেমন দায়ী তেমনি দর্শকেরাও দায়ী। অথচ এরা এখন ভিক্টিম সেজে সবার উপর আঙ্গুল তুলছে, হিপোক্রেটের দল...


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা