সিস্টেম নিয়ে আর আফসোস হয় না। এমন হেলথ সিস্টেম তো আর দিনে দিনে ঠিক করা সম্ভব না। যারা সময় পেয়েছেন তারা ঠিক করেননি। কারণ তাদের কখনও এসব লাগেনি। তাদের অপশন ছিলো। তারা বাকিদের কথা ভাবেনি।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে সিংগাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায় তার পরিবার। একজন সাবেক হেলথ মিনিস্টার। যিনি ৫ বছর এই মিনিস্ট্রি সামলেছেন। তার পরিবার দেশের হেলথ সেক্টরের উপর ভরসা করতে পারে না। তাকে উন্নত ট্রিটমেন্টের জন্য বিদেশ নিয়ে যেতে চায়। 

পেপারওয়ার্ক অন প্রোগ্রেস। হয়ত নিয়ে যেতেও পারবেন। আমি তার সুস্থতা কামনা করি। তাকে যেখানে নিয়ে গিয়ে বাঁচানো সম্ভব সেখানে নিয়ে গিয়ে বাঁচানো হোক। প্রতিটা জীবন মূল্যবান। অন্তত তার পরিবারের কাছে। অথচ টিভি খুললে আমরা প্রচুর মূল্যহীন মানুষদের খবর দেখি।

দিনাজপুর থেকে আসা বৃদ্ধ চাচা যিনি তার ক্যানসারের জন্য ডাক্তার দেখাতে এসেছেন, তাকে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আনার জন্য রাত দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। সেই মানুষটার জীবন হয়ত মূল্যহীন। তাদের সিরিয়াল অনেক বড়। কেউ কেউ আবার রাস্তায় শুয়ে থাকেন। কেউ রাত জেগে পরের দিন স্যাম্পল দিতে পারার জন্য ওয়েট করেন। পত্রিকায় তাদের ছবি বের হয়।

মিঃ হাইজিন জীবাণুমুক্ত হাতের প্রতিশ্রুতি

অন্য রোগের সিরিয়াস রোগীর নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া কোথাও ট্রিটমেন্ট শুরু হয় না। ৪/৫ দিনের আগে রিপোর্ট পাওয়া যায় না। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে ট্রিটমেন্ট না পেয়ে এম্বুলেন্সে মারা যাওয়ার খবর শুনি আমরা। আইসিইউ রোটেশন করে, ভাগে অক্সিজেন না পেয়ে মারা যাওয়া মানুষদের লাশ গুনি।

সিস্টেম নিয়ে আর আফসোস হয় না। এমন হেলথ সিস্টেম তো আর দিনে দিনে ঠিক করা সম্ভব না। যারা সময় পেয়েছেন তারা ঠিক করেননি। কারণ তাদের কখনও এসব লাগেনি। তাদের অপশন ছিলো। তারা বাকিদের কথা ভাবেনি। শুধু আফসোস হয় অন্তত ৫০০ টা আইসিইউয়ের জন্য। হয়ত ৫০০ জন মানুষ বেশি বাঁচাতে পারতাম আমরা। রাষ্ট্রের কাছে মূল্যহীন জীবন, তবুও তো তার পরিবারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

লোকাল অনেক সরকারি দলের রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুর খবরও আসতেছে আজকাল। তারাও হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে এডমিশন নিতে পারেননি। এই চান্স পেতে হলে আরও বড় নেতা হতে হয়। অনেক বড় না হলে তার কপালে কোন চান্স থাকে না। সময়টা এখন শুধু বড়দের। কে কত বড় এটা প্রমাণ হওয়ার।

সারাটাজীবন নিজের পরিবার ছেড়ে নেতার সেবা করা মানুষদের দেখে আজকাল মায়া হয়। আপনারা আর আমরা একই কাতারে। সেই তো মূল্যহীন জীবন। যার জন্য জীবন উৎসর্গ করে দিতে পারতেন সেই নেতা আজ আর আপনার বাবা মায়ের জন্য একটা আইসিইউ ব্যবস্থা করে দিতে পারে না।

রাজনীতি, অর্থনীতি এসবের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষের জীবন। বেঁচে থাকার বছরটাতে আমরা সবার জীবনের দামটাই দিতে পারলাম না। 

আরও পড়ুন- 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা