যে কারণে নগ্ন হয়ে ভিডিওবার্তা দিচ্ছেন হলিউড সেলিব্রেটিরা!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

সম্প্রতি এক সচেতনতা ক্যাম্পেইনের অংশ হয়ে ভিডিওবার্তা দিচ্ছেন হলিউড স্টারেরা। কিন্তু তারা আসছেন নগ্ন হয়ে। কিন্তু কেন?
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বরাবরই বারুদে ঠাসা বিস্ফোরক। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি মোটেও। বরঞ্চ বলা গেলে এবারে আমেরিকার নির্বাচন ঘিরে রোমাঞ্চ যেন আরো বেশি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতন বিনোদনমূলক চরিত্র দেখাচ্ছে একের পর এক চমক। তার সাথে সঙ্গত দিচ্ছে বাকিরা। নির্বাচনের আগে ডিবেটে হয়তো মাস্ক পরার জন্যে তিনি হাসাহাসি করছেন জো বাইডেন'কে। আবার সেই ট্রাম্পই দুই-একদিন পর নিজেই আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। সে নিয়েও হচ্ছে বিস্তর হাসাহাসি। কমলা হ্যারিসের মতন ভারতীয় বংশোদ্ভুত মানুষ হচ্ছেন ইতিহাসের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সাধারণ মানুষজন এবার খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষন করছে নির্বাচনকে। গতবারের নির্বাচনে ফেসবুক কেলেঙ্কারির পর এবার হলিউড সেলিব্রেটিরাও হুমকি দিয়ে রেখেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় আর কোনো পক্ষপাতিত্ব দেখলে সোশ্যাল মিডিয়াকেই বয়কট করবেন তারা। সব মিলিয়ে জোর হাওয়া বইছে আমেরিকার এই নির্বাচন কেন্দ্র করে।
এই বাতাসে যুক্ত হয়েছে নতুন আরেকটি অনুষঙ্গও। বিষয়টি হচ্ছে, নেকেড ব্যালট বা নগ্ন ব্যালট৷ এ বিষয়টি একটু বোঝার দরকার আছে৷ এমনিতেই আমেরিকা, করোনার সংক্রমণে বিপর্যস্ত। সেরকম অবস্থায় দাঁড়িয়ে নির্বাচনের সময় যাতে জনসমাগম না বাড়ে, সামাজিক দূরত্ব যাতে নিশ্চিত থাকে, সেজন্যে বিকল্প পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ইমেইল ও পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেয়ার প্রসঙ্গও এসেছে সেখানে৷ পোস্টাল ব্যালট নিয়ে আরেকটু বিষদ বলার প্রয়োজন আছে৷ পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতিতে দুইটি খাম ও একটি ব্যালট থাকবে। এই খামগুলোকে পৌঁছে দেয়া হবে ভোটারদের কাছে। ভোটাররা যা করবেন, প্রথমেই তারা তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দেবেন ব্যালটে, এরপর সেই ব্যালটটি প্রথম খামে ভরবেন। এই খামটিতে ভোটারের নাম, ঠিকানা সহ বাকিসব তথ্য থাকবে। এবং এই খামটি খুব গোপনীয় রাখতে হবে। এরপর এই নাম-ঠিকানা লেখা খামটিকে দ্বিতীয় খামে ভরবেন ভোটার। এই খামে নির্বাচন কেন্দ্রের নাম সহ বাকি সব তথ্য থাকবে। এরপর ভোটারকে ভোটকেন্দ্রের ঠিকানায় তার ব্যালট-ভর্তি খামকে পাঠাতে হবে। এটাকেই বলা হচ্ছে পোস্টাল ব্যালট।
পোস্টাল ব্যালটের বর্ণনা থেকে আমরা বুঝতে পারছি, দুইটি খামের মধ্যে প্রথম খামটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে ভোটারের নাম ঠিকানা লেখা থাকে। পেনসেলভিয়ার এক কোর্ট সম্প্রতি এ বিষয়ে যে রায় দিয়েছেন, সেখানে বলা হয়েছে- যদি ভোটারের নাম ঠিকানা লেখা কার্ড ভেতরে না থাকে, তবে সেটি 'নেকেড ব্যালট' হিসেবে গন্য হবে। অর্থাৎ ভোট টিকে আর গণনা করা হবেনা।

এই বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখছে হলিউডের সেলিব্রেটিরা। তারা সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে কারো ভোট যেন 'নেকেড ব্যালট' হয়ে নষ্ট না হয়। এক্ষেত্রে তারা চালাচ্ছেন অপূর্ব প্রচারণা। নিজেরা খালি শরীরে এসে ভিডিওবার্তায় জানাচ্ছেন তাদের মন্তব্য, ছড়িয়ে দিচ্ছেন সচেতনতার বার্তা। এ তালিকায় আছেন ক্রিস রক, জোস গাডমার্ক, নাওমি ক্যাম্পবেল, এমি সুমার, সারা সিলভারম্যান, চেলসি হ্যান্ডলা সহ আরও বেশ কিছু পরিচিত মুখ। তাদের নগ্ন হয়ে ভিডিওবার্তার এই অভিনব উদ্যোগ দর্শকমহলে বেশ ভালো সাড়াই ফেলেছে।
এবং হলিউড স্টারদের এই প্রচারণাগুলো থেকে এই বিষয়টাই খুব স্পষ্ট, এবারের নির্বাচিন যাতে সুষ্ঠু হয়, সে বিষয়ে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এবং এই প্রসঙ্গে তারা এক চুল ছাড়ও যে দেবেন না, সেটাও খুবই সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা।
নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ যে চড়া হয়ে উঠছে, তা বলাই বাহুল্য। সামনে আর কী কী রহস্য অপেক্ষা করছে, সেটাই দেখার বিষয়।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন