মানব পাচারকারী এমপির গ্রেফতারে কি আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় না?
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
বাংলাদেশের একজন সাংসদ (পাপুল) কুয়েতে গ্রেফতার হয়েছেন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে মানব পাচারের অভিযোগে।
কুয়েতের প্রায় সকল পত্র-পত্রিকা এখন এই নিয়ে শিরোনাম করছে। কুয়েতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বলেছেন- মানব পাচারের সঙ্গে এমপি পাপুলের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তিনি কুয়েতের নানান কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে মানব পাচার করে যাচ্ছিলেন। কুয়েতের ওই সব কর্মকর্তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। বলা হয়েছে- এমপি পাপুল হচ্ছে এশিয়ায় মানব পাচারের মূল হোতা!
কুয়েতের পত্র-পত্রিকাগুলো থেকে জানা যাচ্ছে- কুয়েতের এমপি-মন্ত্রীরা বাংলাদেশিদের কুয়েতে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।
কুয়েতে কয়েক লাখ বাংলাদেশি থাকে। বাংলাদেশের এই এমপির কারণে সেখানে থাকা বাংলাদেশিরা শুধু যে অপমানিত হয়েছে, সেটা না; এদের অনেকের হয়ত কাজও হারাতে হতে পারে।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের একজন এমপি কিনা এশিয়ার সব চাইতে বড় মানব পাচারকারী!
তাও ভালো, অন্তত কোন একটা কিছুতে তো সেরা হতে পেরেছি!
তো, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের একজন মন্ত্রী বলেছেন- দেশে-বিদেশে নাকি অনেকেই ফেসবুকে লেখালেখি করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে!
সাধারণ মানুষ ফেসবুকে সরকারের সম্পর্কে কিছু একটা লিখলেই আপনাদের ভাবমূর্তি চলে যায়!
সেদিন পত্রিকায় পড়লাম রংপুর না কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে নাকি ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি নাকি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।
তিনি কী লিখেছেন, আমার জানা নেই। জানার ইচ্ছেও নেই। কিন্তু তিনি কি দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ওই সাংসদের চাইতেও বেশি ক্ষুণ্ণ করেছেন?
অথচ ওই সাংসদ কুয়েতে গ্রেফতার হবার পর তার বউ, যিনি নিজেও একজন সাংসদ! বলেছেন- তিনি গ্রেফতার হন নাই। এই সবই নাকি গুজব!
তো, গুজবটা আসলে কে রটিয়েছে?
পুরো দেশের ভাবমূর্তি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে- এরপরও এরা সম্মানিত এমপি এই দেশে।
কুয়েতে তার গর্দান যাবে নাকি হাত কাটা যাবে; সেটা আমার জানা নেই। তবে আমি এতটুকু জানি, ভদ্রলোক যদি কোনভাবে বাংলাদেশে ফেরত চলে আসতে পারেন, তাহলে এই সব কিছুই তখন গুজব হয়ে যাবে! এই দেশে থাকলে- তিনি হয়ত ভবিষ্যতে মন্ত্রীও হয়ে যেতে পারেন!
তখন এদের সম্পর্কে কিছু লিখলে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবার অভিযোগে যে কাউকে জেলেও যেতে হতে পারে! এটাই বাংলাদেশ!