আসলেই কি খেলার সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই? চলুন জেনে আসি ফকল্যান্ড দ্বীপের যুদ্ধের সাথে আর্জেন্টিনা বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ ও ম্যারাডোনার হ্যান্ড অফ গডের গোলের কী সম্পর্ক!

১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টাই যথেষ্ট ছিল। বিশ্বকাপ জয়টা আমাদের জন্যে গৌণ ছিল। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ইংল্যান্ডকে হারানো।

উক্তিটি আর্জেন্টিনার ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক রবার্তো পারফিউমোর। কে এই রবার্তো পারফিউমো? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে একটু উক্তিটি করার পিছনের ঘটনার পথে পাঠককে নিয়ে একটু হেঁটে আসা যাক। 

ফকল্যান্ড দ্বীপ, লাতিন আমেরিকার মূল ভূমি থেকে প্রায় ৪৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট একটি দ্বীপ। দ্বীপটির মালিকানা নিয়ে ঝামেলা শুরু এটি আবিষ্কারের পর থেকেই- ইউকে, ফ্রান্স, স্পেন ও আর্জেন্টিনা দ্বীপটি নিজেদের বলে দাবি করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। বলা হয় দ্বীপটি প্রথম আবিষ্কার করে আমেরিগো ভেসপুচ্চি, কিন্তু অফিশিয়ালি এই দ্বীপের উল্লেখ পাওয়া যায় ব্রিটিশ নাবিক জন ডেভিসের বর্ণনায়। প্রাকৃতিক সম্পদ ও সমুদ্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানের জন্যে এই দ্বীপের গুরুত্ব অপরিসীম।

ফকল্যান্ডের মালিকানার ঘটনাবলি নানা জটিল ঘটনায় ভরপুর, সারসংক্ষেপ করলে যা দাঁড়ায় তা হলো- দ্বীপটির মানচিত্র প্রথম তৈরি করে ফরাসিরা এবং ১৭৬৪ সালে সেখানে বসতি স্থাপন করে, ব্রিটিশরাও দ্বীপটি নিজেদের বলে দাবি করে এবং ১৭৬৬ সালে এটি স্পেনের কাছে বিক্রি করে দেয়। স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর নিউ রিপাবলিক অব বুয়েন্স আয়ার্সের (পরবর্তীতে আর্জেন্টিনা) অংশ হিসেবে যুক্ত হয় ১৮২০ সালে। কিন্তু ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশরা দ্বীপটি দখল করে নেয় এবং এখন পর্যন্ত দ্বীপটি তাদের দখলেই রয়েছে। 

১৯৮২ সালে আর্জেন্টিনার সামরিক স্বৈরশাসক লিওপোল্ডো গালটিরি ফকল্যান্ড আক্রমন ও দখলের অনুমতি প্রদান করে। ধারণা করা হয় গালটিরির মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশটিতে মানবাধিকার লংঘন ও অর্থনৈতিক দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়া এবং দ্বীপটি দখলের মাধ্যমে দীর্ঘ দিনের দাবি অনুযায়ী দ্বীপটি দখল করে জাতীয় সম্মান পুনরুদ্ধার করা! ২ এপ্রিল ফকল্যান্ড ও ৩ এপ্রিল সাউথ জর্জিয়া দ্বীপ আক্রমন করে আর্জেন্টাইন বাহিনী। এবং খুবই সামান্য প্রতিরোধের পর দুইটি দ্বীপই আর্জেন্টিনা দখল করে নেয়।

আর্জেন্টিনা যখন ফকল্যান্ড আক্রমন করে তখন এটি ছিল সম্পুর্ন স্বায়ত্বশাসিত ব্রিটিশ অঞ্চল এবং এর সামগ্রিক নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব ছিল যুক্তরাজ্যের। ৩ এপ্রিল ব্রিটিশ লৌহমানবী মার্গারেট থ্যাচার যুদ্ধকালীন ক্যাবিনেট গঠন করে দ্বীপ পুনরুদ্ধারের জন্যে বিশাল এক যৌথ বাহিনী প্রেরণ করে, প্রায় ৮০০০ মাইল দুরের দ্বীপের পুনর্দখল নিতে ব্রিটিশ যৌথ বাহিনীর বহরে ছিল দুইটি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার ও ৪৩ টি যুদ্ধজাহাজ সম্বলিত প্রায় ১২৭ টি জাহাজ। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে শক্তিশালী ব্রিটিশ বাহিনী কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধক্ষেত্রে পৌছে যায় এবং ১৪ জুন ফকল্যান্ড যুদ্ধ সামগ্রিক ভাবে শেষ হয় আর্জেন্টিনার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। 

ফকল্যান্ড যুদ্ধে আর্জেন্টিনা পরাজিত হয়

প্রায় ৭৪ দিনের যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয় আর্জেন্টিনা, প্রায় ৬৪৯ জন নিহত, ১০৬৮ জন আহত এবং ১১,৩১৩ জন আর্জেন্টাইন যুদ্ধবন্ধী হন। আর্জেন্টিনা হারায় একটি সাবমেরিন, একটি লাইট ক্রুজার এবং প্রায় ৭৫ টি ফিক্সড উইং বিমান। অন্যদিকে ব্রিটিশদের ক্ষতির পরিমানও কম ছিল না, দুইটি ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগ্রেট এবং সাহায্যকারী জাহাজ ডুবে যাওয়াসহ ২৫৮ জন নিহত এবং ৭৭৭ জন আহত হয়। যুদ্ধে পরাজয়ের পর আর্জেন্টাইনদের প্রতিবাদের মুখে পদত্যাগ করে গালটিরি ও ১৯৮৩ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আর্জেন্টিনায়। এত দুরের যুদ্ধক্ষেত্রে সহজ জয়ের ফলে আন্তর্জাতিক মহলে যুক্তরাজ্যের শক্তির প্রদর্শনীর পাশাপাশি ১৯৮৩ সালে নির্বাচনে পুনরায় জয়লাভ করে থ্যাচার। 

যুদ্ধ তখনো চলছে ফকল্যান্ডে, এরই মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে ১৯৮২ সালের স্পেন বিশ্বকাপ। দুইটি দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে বা চলছে তখন, এটা অসম্ভব যে খেলাধুলার সাথে রাজনীতি জড়াবে না! সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে আর্জেন্টাইনরা ‘England must leave Malvinas’ লিখা ব্যানার নিয়ে আসে, ফকল্যান্ড দ্বীপটিকে আর্জেন্টাইনরা ডাকে মালভিনাস নামে এবং অন্যদিকে ইংলিশরাও স্পেন বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে কিনা তা নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা ভাবনা শুরু করে কেননা ফকল্যান্ড যুদ্ধের প্রসঙ্গে স্পেন জাতিসংঘে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চলমান যুদ্ধের প্রসঙ্গে জাতিসংঘে স্পেনের অবস্থান ছিল রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঐ সময়ে টটেনহ্যামের আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় অসি আরদিলকে ইংলিশরা ম্যাচ চলাকালীন সময়ে ব্যাপক দুয়ো দেয়, যার কাজিন লেফট্যানেন্ট হোসে আরলিদ যুদ্ধে নিহত হয়, ঘটনার পর দ্রুত তাকে লোনে পিএসজিতে পাঠিয়ে দেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

ফুটবল খেলাটা মাঠ থেকে উঠে আসলো রাজনীতির টেবিলে, অবশেষে অনেক জল্পনা-কল্পনার পর যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও নর্দান আয়ারল্যান্ড বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করে। আর্জেন্টিনার সাথে ইংল্যান্ডের গ্রুপ পর্বে কোন খেলা না থাকলেও পরের পর্বে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল এবং তা হলে ব্যাপারটি খুবই কঠিন হতে যাচ্ছে এমনটাই মনে করতেন মার্গারেট থ্যাচার। ১৩ জুন বিশ্বকাপ শুরু হয়, যুদ্ধ তখন শেষ হয়নি; থ্যাচার বক্তৃতায় বলেন,

'বিশ্বাস করি ইংল্যান্ড দল স্পেনে দারুণ খেলার মাধ্যমে ফকল্যান্ডে যুদ্ধরতদের জন্যে অসাধারণ উদ্যম বয়ে আনবে।'

ফিরে আসি ১৯৮৬ সালে, ফকল্যান্ড যুদ্ধের মাত্র চার বছর মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হয় ফুটবল বিশ্বকাপ, ফকল্যান্ড যুদ্ধের উত্তাপ আবারো মাঠে ফিরে আসল যখন কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড। ২-১ গোলে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে সেমিফাইনালে পা রাখা আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতে নেয় আর্জেন্টিনার মহানায়ক ম্যারাডোনার অসাধারণ নৈপুন্যে।

ম্যারাডোনার অসাধারণ নৈপুন্যে আর্জেন্টিনার জয় হয় ইংল্যান্ডের বিপরীতে

এই ম্যাচেই ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত দুইটি গোল করেন ম্যারাডোনা- ৫১ মিনিটে হ্যান্ড অব গড এবং ৫৫ মিনিটে ফিফা বিশ্বকাপের শতাব্দীর সেরা গোল! কিন্তু ম্যারাডোনা বিশেষ করে তার হ্যান্ড অব গড গোলটিকে পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে উপরে রাখতে পছন্দ করেন কারণ তিনি মনে করেন গোলটি এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় ছিল ফকল্যান্ড যুদ্ধের কিছুটা প্রতিশোধ নেওয়ার মতো!

“এটি ছিল যেন আমরা একটি দেশকে হারিয়েছি, শুধু একটি ফুটবল দলকে নয়।....যদিও আমরা আগে বলেছি যে ফুটবল খেলাটির সাথে মালভিনাস যুদ্ধের তেমন কিছু নেই, কিন্তু আমরা জানি তারা সেখানে অনেক আর্জেন্টাইনদের হত্যা করেছে, ছোট পাখির মত মেরেছে। এবং এটি তার প্রতিশোধ!” “মনে হচ্ছিল যেন আমরা সুবিচার করতে পেরেছি, ঠিক সুবিচার হয়তো হয়নি। কিন্তু ভালো লাগা কাজ করেছে যেসব মায়েদের জন্যে ফকল্যান্ডে যারা সন্তান হারিয়েছে।”

ম্যারাডোনার উক্তিগুলোতে সহজেই যুদ্ধের সেই উত্তাপ সহজেই অনুমেয়। ঠিক সেই সময়ে আর্জেন্টাইনদের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু ঘটতে পারত না, ম্যারাডোনা শুধু তাদের একটি বিশ্বকাপই দেয়নি, দিয়েছে নিখুঁত একটি উপহার এবং প্রতিশোধ; ফকল্যান্ড যুদ্ধে পরাজিত হবার গ্লানি কিছুটা কমানোর জন্যে হলেও ফুটবলপাগল আর্জেন্টাইনদের এই জয় এবং বিশ্বকাপের দরকার ছিল ভীষণভাবে।

১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টাই যথেষ্ট ছিল। বিশ্বকাপ জয়টা আমাদের জন্যে গৌণ ছিল। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ইংল্যান্ডকে হারানো।

রবার্তো পারফিউমো আর্জেন্টিনার অধিনায়ক ছিলেন সাত বছর, তিনি বর্তমানে আর্জেন্টিনার একটি প্রধান পত্রিকার স্বনামধন্য কলামিস্ট, Playing Football নামের একটি বহুল আলোচিত ও জ্ঞানগর্ভ বইয়ের লেখক এবং একজন প্রশিক্ষিত সাইকোলজিস্ট যিনি বুয়েন্স আয়ার্সে প্রায় ২০ বছর রোগী দেখেছেন। The Guardian পত্রিকায় তার সমন্ধে বলা হয়েছে আর্জেন্টাইনদের ফুটবলের সাথে নিখাদ সম্পর্কের ব্যাপারে বিশ্লেষণের জন্যে তিনি যে কারো চেয়ে বেশি যোগ্য এবং ইংল্যান্ড ও আর্জেন্টিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে যদি আলোকপাত করেন তাহলে অবশ্যই জানেন তিনি কী বলছেন এবং সে যা বলেছে অসামান্য। 

ম্যারাডোনার হ্যান্ড অব গোলটি নিয়ে আর্জেন্টাইনরা বিশেষভাবে খুশি, এমনটাই মনে করেন তাদের ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী কোচ সিজার লুইস মেনোত্তি। তার মতে আর্জেন্টাইনদের প্রতিক্রিয়া অনেকটা এমন যে, 'অসাধারণ, ভালো, খুবই ভালো, গোলটি খুবই অবিধেয়, খুবই নিষ্ঠুর কারণ এটি ইংলিশদের আরো বেশি কষ্ট দেয়।' 

ইংল্যান্ডের সাথে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতার শুরুটা কিন্তু অবশ্য এই ফকল্যান্ড যুদ্ধ থেকে নয়, এই চিরপ্রতিদ্বন্দিতার গোড়ায় রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস এবং ফকল্যান্ড যুদ্ধ সেখানে আগুনে ঘি ঢালার মত কাজ করেছে। গার্ডিয়ান পত্রিকার কলামিস্ট জন কার্লিন যিনি দশ বছর আর্জেন্টিনায় বাস করেছেন এবং সেখানকার স্প্যানিশ পত্রিকায় লিখেছেন, তিনি ইংল্যান্ডের সাথে আর্জেন্টিনার ফুটবল দ্বৈরথের চারটি কারণ খুঁজে বের করেছেন যেটির মূল একেবারে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে প্রোথিত।

যদিও আর্জেন্টিনা ব্রিটিশ উপনিবেশের অধীনে ছিল না। প্রথম, স্প্যানিশ উপনিবেশ সময়কালে আর্জেন্টাইন অঞ্চলে ব্রিটিশদের ক্রমাগত লুটরাজ এবং জবরদখল, যেখান থেকে আর্জেন্টাইনরা ইংলিশ পাইরেটস প্রবাদটি ব্যবহার করে। দ্বিতীয়ত, ১৮০৬ ও ১৮০৭ সালে ইংলিশদের বুয়েন্স আয়ার্স দখলের চেষ্টা এবং এই দুটি যুদ্ধ জয় সমন্ধে আর্জেন্টাইন শিশুদের এমনভাবে শেখানো হয় যেন এটি তাদের অ্যাজিনকোর্ট ও ওয়াটারলু যুদ্ধ জয়ের মত। তৃতীয়, উনিশ শতকে আর্জেন্টিনার প্রতি ব্রিটেনের অর্থনৈতিক ক্ষমতার আগ্রাসী আচরন এবং চতুর্থত, ফকল্যান্ড যুদ্ধ-যেটি এখনো আর্জেন্টাইনদের মধ্যে গভীরভাবে আলোচিত। 

হ্যাঁ, মনে করা হয় খেলাধুলা এবং রাজনীতি দুটি ভিন্ন পথের পথিক। আসলেই কি তাই? যখন জাতীয় স্বার্থ জড়িত, তখন খেলার সাথে রাজনীতি আপনাআপনি মিশে যায় এবং এটি খুবই স্বাভাবিক, যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আর্জেন্টাইনরা ফকল্যান্ড যুদ্ধকে তারা ফুটবল মাঠে নিয়ে গিয়েছে, ইংল্যান্ডকে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে শত্রুর কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে; যে যুদ্ধে ‘মাত্র’ ৬৪৯ জন আর্জেন্টাইন প্রাণ হারিয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না যাদের বেশিরভাগই ছিল যুদ্ধের সৈনিক এবং বেসামরিক নিরীহ আর্জেন্টাইন বলতে গেলে কেউ হত্যাকান্ডের স্বীকার হয় নাই। প্রত্যেক প্রাণ অমুল্য, ৬৪৯ জনের পূর্বে ‘মাত্র’ উল্লেখ করার উদ্দেশ্য কোনরকম অসম্মা্ন নয়, বরং একটি খুব স্বাভাবিক তুলনার জন্যে। 

পাকিস্থানের সাথে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ বাঙালি শহীদ হয়েছেন, যাদের একটা বড় অংশই ছিল নিরীহ-নিরস্ত্র এবং সম্ভ্রম হারিয়েছেন প্রায় ২ লক্ষ মা-বোন! যারা এখনো ক্রিকেটে পাকিস্থানের সমর্থনে ইনিয়ে বিনিয়ে খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন না, খেলোয়াড়েরা কি হত্যা করছে নাকিসহ আর নানা খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন, তারা এবার ফকল্যান্ড যুদ্ধের ‘মাত্র’ ৬৪৯ সংখ্যার সাথে ৩০,০০০০০ এবং ২,০০০০০ সংখ্যা দুটির তুলনা করুন এবং আর্জেন্টাইনদের সাথে নিজদের তুলনা করুন একবার। কোথায় দাঁড়িয়ে আছেন, নতুন করে ভাবুন।

আর্জেন্টাইনরাও রক্ত মাংসে মানুষ, আপনারা নন? বাংলাদেশ প্রসঙ্গে খেলার সাথে রাজনীতি জড়াবে, একবার নয়, শতবার নয়, হাজারবার জড়াবে। বাঙালির শরীরের শেষ রক্তের বিন্দুটি থাকা পর্যন্ত খেলার সাথে রাজনীতি জড়াবে।

তথ্যসূত্র-

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা