এই দুই হুজুরের আজগুবি ওয়াজ নিয়ে সবাই হাস্যরস করে। অথচ ওয়াজ ছাড়াও এদের নাম পাওয়া যায় হত্যা মামলাতেও...

সাম্প্রতিক সময়ে দুইজন হুজুরের আজগুবি ওয়াজ নিয়ে সবাই হাস্যরস করে। একজন মুফতি ইব্রাহিম। আরেকজন মাওলানা তারেক মনোয়ার। একজন নাকি অক্সফোর্ডের সেরা শিক্ষক। বাসায় জানেও না। বিল গেটস তার জন্য সাক্ষাত করতে বসে থাকে। নাসায় ঘুরে আসেন প্রায়ই। আরেকজন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক পেয়ে গেছেন। এন্টারকোটিক থিওরি দেন। এই সব আলাপ।

এই দুইজনের বিগত দিনের ট্র‍্যাক রেকর্ড যারা জানেন, তারা অবশ্য খুবই অবাক। কারণ এই দুইজনের প্রোফাইল বাকী সব হুজুরদের চেয়ে ভারী ও ম্যাচিউরড ছিল বিগতদিনে। এখন একদম পাগল-ছাগল টাইপ গালগপ্পো করেন। কাহিনী হচ্ছে- তারেক মনোয়ার কিছুদিন আগেও জামায়াতের নীতি নির্ধারকদের কাছে 'ওয়ান্নাবি সাঈদি' প্রজেক্টের অংশ ছিলেন। জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্টরা তাদের ওয়াজে জমায়েতে উনাকে পাওয়ার জন্য শিডিউল দিতেন। সাইদির পরেই জামাতি ঘরানার সবচেয়ে ইনফ্লুয়েনশিয়াল মাওলানা ছিলেন তিনি। আগের ওয়াজগুলো চেক করেন ইউটিউবে।

আর মুফতি কাজী ইব্রাহীম বাংলাদেশে ডক্টর জাকির নায়েকের ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। জাকির নায়েকের টেলিভিশন পিস টিভিতে যেখানে অন্য বাংলাদেশী হুজুররা চান্স পেত না। সেখানে মুফতি কাজী ইব্রাহীম জাকির নায়েকের পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তা ছিলেন 'পিস টিভি বাংলা ভার্সনে'। তো এই দুইজনের হুট করে এরকম আজগুবী ওয়াজ করে লোক হাসানোর কারণ কী?

এর একটা কারণ হইতে পারে- চ্যানেল আইয়ের কাফেলা অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটে তাদের দুইজনের নাম থাকা। মোট ৫ জন হুজুরের কাওরানবাজার একটা বৈঠকের কথা বলেছিল গোয়েন্দারা। জামায়াতি পত্রিকা সংগ্রামও রিপোর্ট করেছিল মাওলানা ফারুকী হত্যাকান্ডে এই মুফতি কাজী ইব্রাহীম ও মাওলানা তারেক মনোয়ারের নাম শুরুতেই। আর কাওরান বাজারের সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আরেক মাওলানা কামালুদ্দিন জাফরি।

মাওলানা ফারুকী

যে ট্রেড সেন্টারের বৈঠকে তারেক মনওয়ার মাওলানা ফারুকীকে শিরকি ও বেদাতী ফতোয়া দিয়ে প্রতিহত করার হুমকি দেন। তারেক মনোয়ারের দল জামায়েতের পত্রিকা সংগ্রামেই এই নিউজ এসেছে। তো হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে পত্র পত্রিকায় নাম আসার পর- এই তিনজনই বছর দুয়েকের জন্য দেশের বাইরে আত্মগোপনে ছিলেন। মাওলানা জাফরীকে নিয়ে প্রচার করা হয়েছিল- উনি ড্রাইভারের বউকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছেন মালয়েশিয়াতে।

মুফতি কাজী ইব্রাহীম জাকির নায়েকের সাথে ইন্ডিয়াতে। আর তারেক মনোওয়ার যুক্তরাজ্যে আত্মগোপন করে ছিলেন। তো অবস্থা ঠান্ডা হওয়ার পর, পুলিশের তদন্তে অন্য জংগীরা ধরা পরায়- (কিংবা আদৌ আসামী কিনা); এই মুফতি ইব্রাহিম আর তারেক মনোয়ার দেশে ফিরতে শুরু করেন। আর তাদের ভাব গাম্ভীর্যের, আগের টেকনিকের ওয়াজের চাইতে- এই লোক হাসানো স্পাইসি ওয়াজগুলো চলতেছে। ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং...


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা