দুইজন থাকেন সুদূর কানাডাতে। একজনের নিবাস ঢাকা শহরে। তিনজন মিলে তৈরি করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের জন্য ভিন্নধর্মী প্লাটফর্ম “মাদ্রিদ বেতার”। তাদের কর্মকান্ড এগিয়ে চলোর নজরে আসে মূলত কাতার বাংলাদেশ ম্যাচের আগে তাদের করা পডকাস্ট থেকে। জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক তপু বর্মণ ম্যাচের আগে শুভকামনা জানান ও সমর্থন চান মাদ্রিদ বেতার সমর্থক গোষ্ঠির কাছে! এরপর তাদের ওয়েবসাইট সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে অবাক হবার পালা। রীতিমত এলাহী কান্ড! বাংলা ভাষায় রিয়াল মাদ্রিদের জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া যেন তাদের ওয়েবসাইট! এর সাথে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে চলছে ক্রমাগত আলোচনা, বিশ্লেষণ আর নিয়মিত আপডেট! পুরোদস্তুর niche ভিত্তিক স্পোর্টস জার্নালিজম যেন। “এগিয়ে চলো” এক আসরেই বসেছিল মাদ্রিদ বেতারের তিন কো-এডিটরের সাথে।

“মাদ্রিদ বেতার আমাদের কৈশোরের স্বপ্ন ছিল- এভাবে বললে অনেকেই হেসে উঠতে পারে। আয়নার সামনে বসে বলে উঠলে আমিও হেসে দিব। কিন্তু এটাই আসলে সত্য।”- মুখে একরাশ হাসি নিয়েই বলছিলেন মেহেদি হাসান প্রাঙ্গন। রিয়াল মাদ্রিদ ভিত্তিক বাংলাদেশি স্পোর্টস ওয়েবসাইট “মাদ্রিদ বেতার” এর তিন সম্পাদকের একজন। প্রায় এক বছর ধরে মাদ্রিদ বেতার যাত্রা করেছে ইন্টারনেটের অবারিত পথে। বাংলাদেশে স্পোর্টস জার্নালিজমের বয়স প্রায় স্বাধীনতার সমান। বাংলাদেশের মানুষের ক্রীড়া অনুরাগের কথা বা আলাদা করে ফুটবল অনুরাগের কথা শুনে বড় হন নি এমন কোন কিশোর যুবা সম্ভবত আমাদের দেশে নেই। কিন্তু শুধুমাত্র একটি দলের মুখপাত্র হিসাবে ফুটবল জার্নালিজম? এখানে বোধহয় “মাদ্রিদ বেতার” বাংলাদেশের এবং বাংলা ভাষার ক্রীড়া মিডিয়া চর্চাতে প্রথম নাম।

এরকম কথা বলতেই প্রায় হাত নেড়ে না করে উঠলেন মাদ্রিদ বেতারের তিন কো-এডিটরই। নিলয় এরিক কস্তা হাত নাড়তে নাড়তেই বললেন, ”আমরা আসলে এটাকে জার্নালিজম বা সাংবাদিকতা মনে করি না। একদমই না। হ্যাঁ, অবশ্যই রিয়াল মাদ্রিদ সংক্রান্ত খবর বাংলা ভাষায় পেতে আপনি মাদ্রিদ বেতারের উপর নির্ভর করতে পারেন। আমরা আপনাকে এই নিশ্চয়তা দেব যে আমরা ১০০ ভাগ নিশ্চিত না হয়ে কিছু প্রকাশ করি না। কিন্তু আমাদের প্লাটফর্মটি আসলে একটি সমর্থক প্লাটফর্ম মাত্র। আমরা জার্নালিজমের ছাত্র নই। ক্রীড়া বিশেষজ্ঞ তো একদমই নই। তবে তথ্যসমৃদ্ধ ভক্ত আমাদের বলতে পারেন আপনি।” 

কাগজে কলমে মাদ্রিদ বেতারের যাত্রা শুরু ১৫ জানুয়ারী ২০২০। তবে এর পেছনে প্ল্যান প্রোগ্রাম চলেছে এর আগের ছয় মাস। কিন্তু মাদ্রিদ বেতারের জন্ম নাকি আসলে সেই ২০১১ সালে। এবার কথা বললেন মাদ্রিদ বেতারের শেষ কো-এডিটর আসিফ হাসান জিসান। “আসলে আমি আর প্রাঙ্গন কলেজে থাকতে একই কলেজে একই সেকশানে পড়তাম। ওই সময়টাতে দেশের মূলধারার মিডিয়া তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশের মানুষ যেসব ফুটবল সোর্স থেকে খবর পায় সবাই প্রথম পপুলিস্ট ঘরাণার খবরের সাথে পরিচিত হচ্ছে। মানে যেদিকে গণসমর্থনের বাতাস বেশি তার দিকে ভাল শোনায় এমন খবর করার বিষয়টা প্রথম আসছে মূলধারায়। ফলে দেশের খবর বা হাতে গোনা এক দুইটা ইংরেজি ওয়েবসাইট পড়ে যারাই ফুটবলের খোঁজ রাখতে চান, তাদের সবার সামনে রিয়াল মাদ্রিদ-হোসে মরিনহো ছিল ভিলেন টাইপের প্রতিষ্ঠান-চরিত্র।” 

মেহেদি হাসান প্রাঙ্গণ এই সময় আবার বলে উঠলেন, 'আমরা আসলে ফুটবলের দেখার সাথে পরিচিত হয়েছি একদম বাচ্চাকালে। এটা বলব না যে আমাদের ফুটবল দেখায় আমাদের বাবা চাচাদের প্রভাব কিংবা তারকাখ্যাতি দেখে মুগ্ধ হবার ব্যাপার নেই- কিন্তু দল হিসাবে রিয়াল মাদ্রিদ যখন প্রায় ১২ বছর ইউরোপিয়ান শিরোপাবঞ্চিত সে সময়টাতে টিন এজ কাটানো রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক হিসাবে এই পক্ষপাতদুষ্ট বিষয়টা নাড়া দিত বেশ। দেশি সংবাদপত্রগুলো তো একটু প্রচার কাটতি বাড়াতে রিয়ালের হার মানেই লজ্জা আর আমাদের দলের প্রতিপক্ষের সামান্য ভাল খেলাকে যুদ্ধজয়ের বীরত্ব হিসাবে প্রচার করতে এতই পছন্দ করত যে স্কুল কলেজে এসব রেফারেন্স নিয়ে আসত অন্য দলের সমর্থক বন্ধু বান্ধবেরা শুধু তর্কে জেতার খাতিরে। আমরাও আর দশটা টিন এজারের মত ফুটবল নিয়ে তর্ক করেছি, বাংলাদেশের চিরায়ত পেলে ম্যারাডোনা থেকে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা হয়ে মেসি রোনালদো সব দিকেই…।'

পাশ থেকে জোরে হেসে আসিফ হাসান জিসান বলে উঠলেন, ”তর্ক তো আমি আর মেহেদীও করেছি। আমি ব্রাজিল সমর্থক এবং মেহেদি আর্জেন্টিনার। এরিক গোপনে গোপনে ইংল্যান্ডের। (হাসি) তর্ক তো ফুটবলের অনুষঙ্গই। বাংলাদেশীরা ফুটবল যেমনই খেলি আমাদের প্যাশন কিন্তু সর্বোচ্চ মানের একদম।” তিনি বলে চলেন, “যাই হোক কলেজের সময়ের পর তো আসলে পেরিয়ে গেছে অনেকটা সময়। বুয়েট আর আইইউটির দুরত্ব পার হয়ে ফুটবল আলোচনা খুব চলছিল এটা না। এখন তো দুইজন থাকি দুই দেশে। দুইজনের পেশা, সময়ের হিসাব এসব আলাদা। তাই আমি মনে করি এরিক না আসলে আসলে আমদের মাদ্রিদ বেতার এর মত প্লাটফর্ম খোলাটা হত না।”

এরিক এবার বললেন, 'কানাডায় এসে আমার বন্ধুবান্ধব ছিল প্রচুর। কিন্তু দেশে থাকতে ফুটবল নিয়ে ওই যে তর্ক বিতর্ক টাইপের আলোচনা- ওই বিষয়টাতে ঘাটতি থেকে যেত। এই সময় মেহেদীর সাথে ফুটবল নিয়ে আলোচনাটা জমতে থাকে এবং আমরা আলোচনার টেকনিকাল ট্যাকটিকাল বিষয়ে এত গভীরে চলে যেতাম যে আমাদের মনে হত - ইশ আরো মানুষের সাথে যদি জিনিসটা শেয়ার করা যেত! এসব বিচ্ছিন্ন চিন্তাভাবনা থেকেই মেহেদি একদিন আমাদের একটা গ্রুপ চ্যাটে যোগ করে বলে ফেলে যে আসলে আমাদের একটা প্লাটফর্ম খোলা উচিত যেটা মূলত রিয়াল মাদ্রিদ নিয়ে বাংলা ভাষায় একটা বিকল্প সংবাদের মাধ্যম যেমন হবে তেমনি বাংলাভাষী রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের জন্য হবে আলোচনার প্লাটফর্ম।'

মাদ্রিদ বেতারের আলোচকবৃন্দ
রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচের আগে ওয়েবভিত্তিক এরকম পডকাস্ট নিয়মিত দৃশ্য হয়ে উঠেছে মাদ্রিদ বেতারের দর্শকদের মধ্যে

মেহেদি নিজেই এ সময় আলোচনায় যোগ দিলেন আবারো, “দেখুন বাংলাদেশে কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক বেজ বিশাল। ঢাকা তো বটেই ঢাকার বাইরেও বিশাল বিশাল অনুষ্ঠান করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকেরা। মাঝে তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতা বা জিনেদিন জিদানের মত কিংবদন্তীর ম্যানেজার হয়ে আসা এবং সর্বোপরি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নয় মৌসুমের পারফরমেন্স দেশে ছোটখাট জনপ্রিয়তার বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে আবারো। ৬০-৭০ হাজার সদস্যের ফেসবুক গ্রুপ আছে দেশে। এই মূহুর্তে খুবই নিবেদিত দুইটি অফিসিয়াল সমর্থক গোষ্ঠি আছে। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন- তাহলে মাদ্রিদ বেতারের অবস্থানটা কোথায়? আমরা নিজেদের মনে করি বাংলাভাষী ফ্যানদের ছোট একদল মুখপাত্র এবং আমাদের ওয়েবসাইট তার মুখপত্র। তথ্য দেয়া, আলোচনার সুযোগ তৈরি করা এবং ভক্ত সমর্থকদের জন্য একটা নিরাপদ স্পেস তৈরি করাটা আমাদের কাজ। আমরা বাংলাদেশীরা খেলা দেখার ব্যাপারে এতটাই প্যাশনেট যে পারফরমেন্স মনমত হলে যেমন সব সমস্যা ভুলে যাই, তেমনি কিছু একটা পান থেকে চুন খসলেই একদম মুন্ডুপাত শুরু হয়। আমরা গালিগালাজ বা abusive যে ঘরাণাটা তৈরি হয়েছিল গত দশকে এই পক্ষপাতিত্বযুক্ত খবরের রেশ ধরে এটাকে কোনভাবেই প্রমোট তো করিই না, বরং এর বিকল্প হিসাবে সভ্য একটা আলোচনার খোরাক হতে এবং দিতেই আমাদের শুরু। আমরা সমর্থক। অবশ্যই সুক্ষ Banter করি এবং মনে করি এটা সমর্থক হবার অন্যতম মজার বিষয়। কিন্তু ওই যে বললাম তথ্যের প্রবাহ নিশ্চিত করাটাকে যেহেতু দায়িত্ব মনে করি, সুতরাং ফ্যাক্টের বাইরে যাওয়ার সুযোগ কিন্তু নেই।”

জিসান আবার বললেন- “এসব চিন্তা করে আমরা আসলে আমাদের উপস্থিতিটাকে ক্রস প্লাটফর্ম করে ফেলেছি। বাংলাদেশের মানুষের সুবিধার জন্য ফেসবুক অবশ্যই বড় ভূমিকা রাখছে। সেরকম ইউটিউব বা টুইটারে আমরা আসলে সমানভাবে একটিভ থাকতে চেষ্টা করছি। এমনকি আপনি চাইলে স্পটিফাই এবং অ্যাংকরে বসেও আমাদের শুনতে পারেন। সামনে হয়তো লাইভ রেডিওতে ২৪/৭ ব্রডকাস্টের আওতায়ও চলে আসবে আমদের কিছু কন্টেন্ট. এখন আমাদেরকে আপনি এক বছরের মাথায় নাম্বারের ব্যাপারে সফল বা ব্যর্থ বলবেন কী না আমি আসলে জানি না। তবে নতুন কিছু একটা শুরু করার যে ধারনাটা নিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম সেটাতে মনে হয় আমরা উতড়ে গেছি।”

এরিক এসময় জানালেন সাফল্য ব্যর্থতা নিয়ে তিনি কি ভাবেন। “দেখুন আমরা দুইজন কম্পিউটার প্রকৌশলী এবং একজন স্থপতি। কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেহেদীর সাথে পরিচয়, আর জিসানের সাথে তো ইন্টারনেটের সৌজন্যেই। তিনজন থাকি দুনিয়ার দুই কোণায়। আমাদের পেশাগত কাজের কথা শোনার লোক আলাদা। কিন্তু আমাদের তিনজনের মধ্যে যেটা কমন, সেটা হলো মাদ্রিদ বেতার আমাদের মুক্তির জায়গা। আমাদের কিশোর ফুটবল ভক্তদের জিইয়ে রাখার জায়গা। আমরা এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সংখ্যার বিচারে যদি পিছিয়েও থাকি, মানের বিচারে পিছিয়ে নেই এটা বলতে পারি নিঃসন্দেহে। আমাদের দর্শক-পাঠক-শ্রোতাগণ আমাদের শখের প্রজেক্টের পেছনে এসে দাড়িয়েছেন। আমরা এর মধ্যে পর্তুগালের ফুটবল জায়ান্ট স্পোর্টিং লিসবনের নর্থ আমেরিকার ডিরেক্টরের সাথে ফুটবল নিয়ে পডকাস্ট সেশানে আলোচনা করতে পেরেছি, আমাদের কিছু ইংরেজি কন্টেন্ট বিশেষ করে মেহেদীর লেখা Managing Madrid এর মত বিশাল সমর্থক প্লাটফর্মে নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহ অধিনায়ক তপু বর্মন আমাদের সাথে আমাদের প্লাটফর্মে কথা বলেছেন- আর সবচেয়ে বড় কথা কৌরিত্র তীর্থ আর রিদওয়ান পাশা ভাই যোগ হয়ে আমাদের দল কিন্তু বড় হয়েছে গত এক বছরে। শ্রোতা দর্শক বা পাঠকদের আগ্রহ তো আছেই। এটাকে আমি niche ঘরাণার স্পোর্টস ওয়েবসাইটের জন্য বেশ ভাল শুরুই মনে করি।”

মেহেদি, এরিক আর জিসানের জন্য তাদের পডকাস্টগুলি যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কন্টেন্ট- এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। মেহেদি বললেন- “আমি তো সব সময় বলি যে বাংলাদেশের বাইরে বসে যখন দেখি বাংলাদেশের কিছু মানুষ মন দিয়ে আমাদের ফুটবল আলোচনা শুনছেন বা আমাদের সাথে কথা বলছেন তাদের জিজ্ঞাসা নিয়ে- এর চেয়ে আনন্দের কোন কিছুই নেই। এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।”

স্পোর্টিং লিসবনের নর্থ আমেরিকা অপারেশান্স এর ডিরেক্টর স্যামুয়েল গায়েকে আমেকাও এর সাথে ইন্টারভিউ ছিল মাদ্রিদ বেতারের শুরুর দিকের বড় চমক

তবে এই তিনজনের কাছে প্রশ্ন ছিল এরকম উদ্যোগ যেহেতু আগে বাংলাদেশে বা বাংলাভাষীদের মধ্যে নেই, তারা আসলে সামনে কোথায় দেখেন নিজেদের? এখানে জিসান জানালেন, 

“দেখুন, এখন হয়তো নেই, কিন্তু বাংলাভাষী সমর্থকদের সংখ্যা বা প্যাশন চিন্তা করলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে অন্য বড় ক্লাবের সমর্থকদের থেকে আমরা দ্রুতই এই ধরনের প্ল্যাটফর্ম দেখব। আমি তো আশা করি আমাদের অন্য ক্লাবের সমর্থকদের এরকম প্লাটফর্মের সাথে কথা হবে। সুস্থ ফুটবল তর্ক হবে। খেলার জ্ঞান এবং আগ্রহ শেয়ার হবে। খেলা দেখার পাশাপাশি মানুষ সেটাও উপভোগ করবে। তবে শুধু যদি আমাদের কথা বলেন- Managing Madrid এর মত বিশ্বব্যাপী গ্রহনযোগ্য মাদ্রিদ সমর্থক গোষ্ঠীর পথ অনুসরণ করতে পারলে ভাল লাগবে। এর বাইরে Bleacher Report, Euro Football Daily কিংবা HITC স্পোর্টস এর মত Alternate Sports Media গুলোও আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। এভাবেই শুরু করে The Athletic তো এখন রীতিমত বিশাল স্টার্টআপ। মানের বিচারে তাদের কন্টেন্টের মত কন্টেন্ট গোটা ফুটবল দুনিয়াতে বাঘা বাঘা হাউজও করতে পারে না। এখন মুক্ত তথ্যপ্রবাহের যুগে Content-এর মান ভাল রাখতে পারলে মানুষ কিন্তু দেখতে চায় সেগুলো। স্প্যানিশভাষী দেশের দলের তথ্যের সঠিক বাংলা রূপ দেয়া, বিশ্লেষণী চোখ নিয়ে ম্যাচ ও খেলোয়াড়ের পারফরমেন্সের কাঁটাছেঁড়া আর সর্বোপরি নিজেদের সমর্থন করা দলের ভাল মন্দ সম্পর্কে জানার জন্য সাধারণ মানুষের আগ্রহটা কিন্তু মোটেই ছোট নয়। সাধারণের কাছে সেরকম মাধ্যম হওয়াটাই আমাদের ইচ্ছা।”

মেহেদি আর এরিকও সরাসরি জানালেন তাদের সম্মতির কথা। মাদ্রিদ বেতার মূলত একটি শখের প্রজেক্ট। তিন তরুণ ফুটবল ভক্তের শখের প্রজেক্টেটি সামনে যে বেশ বড়সড় চিন্তা ও কিছু দারুণ চমক নিয়ে আসছে তিনজনই সে কথা জানাতে ভুললেন না। তবে চমকগুলো কী, সেটা বলতেই হেসে দিলেন তিনজনই একসাথে। মেহেদি বললেন, “চমক তো আসলে পূর্বাভাস দিয়ে দিলে চমক থাকে না। তবে দেশের ইতিহাসে বিরল এমন ফুটবলবোদ্ধাদের সাথে আলোচনা যেমন আমাদের এজেন্ডাতে আছে- সেরকম আছে দেশের ফুটবল নিয়েও মাঝে মধ্যে ভাল কন্টেন্ট তৈরির ইচ্ছা। বিশেষ করে গ্র্যাসরুট ফুটবলের সংগ্রাম এবং জাতীয় দলের বড় ম্যাচগুলিকে রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচের মতই গুরুত্ব দেই আমরা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল নিয়ে কিছু লেখা প্রকাশ করেছি আমরা, বাংলাদেশের ছেলে হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলতে যাবার জার্নি কেমন হতে পারে এরকম ফিকশনাল ঘরাণার কন্টেন্টও বাদ রাখিনি। এগুলো আমরা অন্তত মনে করি নতুন এবং তরুণ মনের জন্য ভাল influence. আমরা সেটাই হতে চাই সব সময়।”

এরকম ছোট বড় চমক আর বড় স্বপ্ন নিয়ে তিন তরুণ যেতে চান বহুদূর। 

তারা কী করছেন, বা রিয়াল মাদ্রিদ কী করছে- এই মুহুর্তে বাংলায় জানতে যেতে হবে www.madridbetar.com এ। এর সাথে চোখ রাখতে পারেন তাদের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতেও। আর মেহেদী তো জানিয়েই রেখেছেন, চমক থাকছে! তাই ২০২১-এ মাদ্রিদ বেতার হতে পারে আপনার আবিষ্কার করা ক্রীড়া বিনোদনের জন্য সবচেয়ে উপভোগ্য সমর্থক প্ল্যাটফর্ম!


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা