'বজরঙ্গি ভাইজান' সিনেমার সেই 'মুন্নি'র কথা মনে আছে? দারুণ অভিনয়, ফুটফুটে চেহারা আর নিষ্পাপ চাউনি দিয়ে যে মাত করে ফেলেছিলো সবাইকে। কেমন আছে সেই মুন্নি? কত বড় হয়েছে সে এখন?

আজ থেকে পাঁচ বছর আগে নির্মিত হয়েছিলো 'বজরঙ্গী ভাইজান।' এই সিনেমা বানাতে কত টাকা খরচ হয়েছিলো সেটা গুরুত্বপূর্ণ না, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- এ সিনেমা দেখে দর্শকজাতির খরচ হয়েছিলো গ্যালন গ্যালন চোখের জল। খরচ হবে নাও বা কেন? গল্পটা বেশ একটু আবেগি ছিলো।ভারত-পাকিস্তান-কাশ্মীর ছিলো। সালমান খান ছিলো। তবে এদের কেউই এ সিনেমার আবেগের কারণ নন। কেউই এ সিনেমা জমাতে পারেননি। এ সিনেমা জমিয়ে দিয়েছিলো সাত বছরের একরত্তি এক শিশু। মুন্নি। যে অসহায় মুন্নিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যে বজরঙ্গি ভাইজান শুরু করেছিলেন শত্রুকূলে যাত্রা। যাত্রাপথে তাদের নানারকম অভিজ্ঞতা নিয়েই সিনেমা 'বজরঙ্গি ভাইজান।'

'বজরঙ্গি ভাইজান' সিনেমায় যেন সালমান খানকেও ছাপিয়ে গিয়েছিলো মুন্নি! 

এই সিনেমাটির আগে মুন্নি ছোটখাটো দুই একটা টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু সেগুলো খুব একটা বলার মত না। এই সিনেমাতে অভিনয় করেই প্রথমবারের মতন দেশ ও দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও জনপ্রিয় হয়ে যায় সে। 'বজরঙ্গি ভাইজান' যারা দেখেছেন, তারা হয়তো মাঝেমধ্যেই ভেবেছেন, সেই ক্ষুদে মুন্নি এখন কোথায় আছে? কেমন আছে? এই জিনিসটি অনেকেই করেন। সিনেমার বহু বছর পরে সেই সিনেমার তারকাকে গিয়ে খোঁজ করেন৷ এটার মধ্যে অন্যরকম এক রোমাঞ্চকর বিষয়ও আছে। 

আমি খুব অল্পবয়সে 'দীপু নাম্বার টু' সিনেমা দেখি। সেই সিনেমার দীপু আর তারিককে অন্তর্জালের বদৌলতে যখন বহুবছর পর দেখলাম, তাদের বয়স হয়ে গিয়েছে। তারা আর আগের বয়সে নেই। চমকে গিয়েছিলাম। সেরকমটি হয়েছিলো 'সোনার কেল্লা'র তোপসের বেলাতেও। 'সোনার কেল্লা'র ফেলুদা অর্থাৎ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চোখের সামনেই বৃদ্ধ হয়েছেন, তাই অতটা চোখে লাগেনি। কিন্তু 'তোপসে' চরিত্রে যিনি ছিলেন, তাকে যখন অনেক বছর পরে একবার দেখি টিভিতে, বিস্মিত হয়েছিলাম।  কিশোর তোপসের চুলে পাক!  চোখে চশমা! চিনতে পেরেছিলাম, মুখের হাসি দেখে। সে হাসি ছিলো অমলিন। তোপসেকে বয়স্ক হতে দেখে আসলেই চমকে গিয়েছিলাম।

চমকাতে হবে মুন্নির বেলাতেও। 'মুন্নি' চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মুম্বাইয়ের শিশু হার্ষালি মালহোত্রা। সিনেমার শুরুতে প্রায় আট হাজার বাচ্চার মধ্যে থেকে বেছে নেয়া হয়েছিলো হার্ষালিকে, মুন্নির চরিত্রে। এক সিনেমাতেই হার্ষালি পেয়ে যায় ব্যাপক তারকাখ্যাতি। সেই তারকা 'হার্ষালি' এখন দেখতে দেখতে বেশ বড় হয়ে গিয়েছে। বাবা-মা'র সাথে আগের নিবাস মুম্বাইতেই আছে সে। সিনেমা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ থাকলেও করা হচ্ছেনা। 'প্রেম রতন ধন পায়ো' সিনেমাতেও তার কাজ করার কথা ছিলো। শেষমুহুর্তে সেটা আর করা হয়নি। এছাড়াও 'নাস্তিক' নামের একটা সিনেমাতে অভিনয় করেছে সে, যে সিনেমার কাজ আটকে আছে মাঝপথে। তবে সিনেমা না করলেও টিভি ধারাবাহিকে কাজ করে যাচ্ছে মুন্নি। নিয়মিত তাকে দেখা যাচ্ছে নানারকম বিজ্ঞাপনেও। সে সাথে পড়াশোনাও চলছে নিয়মিত।

মুন্নি ওরফে হার্ষালি মালহোত্রা; চেনা যায়? 

'মুন্নি' আবারও অভিনয়ে ফিরবেন। সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। 'বজরঙ্গি ভাইজান' সিনেমার যে 'মুন্নি' সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে, সেই মুন্নির সামনের সময়ের জন্যে ভালোবাসা ও শুভকামনা রইলো।

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা