প্রায় ১০০ বছর গৃহকোণে লুকিয়ে থাকা মানুষটি এখন নিজেই একজন উদ্যোক্তা। এই সাফল্যকে কোনোভাবেই শুধুমাত্র অর্থকড়ি দিয়ে মাপা সম্ভব নয়।

জীবনে অপূর্ণতা ছিলো না তার। শুধু শখ ছিলো নিজে উপার্জন করবেন। তিনি কি জানতেন সেই শখটাই পূরণ হবে বয়স যখন ৯০। রান্নায় দক্ষতা ছিলো আগে থেকেই। বানাতে পারেন দুর্দান্ত সব মিস্টান্ন, আচার কিংবা চাটনি। নিজে উপার্জন করার শখ থেকেই কিছু খাবার বানিয়ে নিয়ে গেলেন পাশের বাজারে। আয় করলেন ২ হাজার রুপি। এটিই তার জীবনের প্রথম উপার্জন। ৯০ বছর বয়সে জন্ম হলো এক নারী উদ্যোক্তার।   

মেয়ে রাভিনার সাথে হরভজন কৌর

বলছিলাম ভারতের পাঞ্জাবের ৯৪ বছর বয়সী হরভজন কৌরের কথা। ৪ বছর আগে মেয়ে রাভিনা তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘জীবনে কোনো অপূর্ণ শখ আছে কিনা?’ উত্তরে নিজে উপার্জন করার কথা বলেছিলেন। সেই থেকে শুরু। মূলত বরফি এবং বিভিন্ন রকমের আচার বানিয়ে থাকেন। অল্প অল্প করে শুরু। এখন প্রতি সপ্তাহে ১৫/২০ কেজির অর্ডার পান। প্রায় ১০০ বছর গৃহকোণে লুকিয়ে থাকা মানুষটি এখন নিজেই একজন উদ্যোক্তা। ভাবা যায়?  

হরভজন’স নামে উনার যে ছোট্ট প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার ট্যাগলাইন হচ্ছে, ‘বাচপান ইয়াদ আজায়ে’ অর্থাৎ, শৈশব মনে পড়ে যাবে! এখনো পর্যন্ত একাই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বয়স ৯৪ যেন একটি সংখ্যা মাত্র। গত চার বছরে শুধু মিস্টিই বানিয়েছেন ৫০০ কেজি। প্রতি কেজি ৮৫০ রুপি করে।

হরভজন'স: বাচপান ইয়াদ আজায়ে...

নাতনি আবদার করেছিলো তার বিয়ের সব মিষ্টি নানিকেই বানাতে হবে। সেই বিয়ে হয়েছে মাসখানেক আগে। যেই কথা সেই কাজ। এই জীবনী শক্তি দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন, নাতনির বিয়ের ২০০ কেজি মিষ্টি একাই বানিয়েছেন ৯৪ বছর বয়সী হরভজন।  

জীবনের শেষভাগে এসে তিনি যে একটি নতুন ইনিংস শুরু করেছেন, এই সাফল্যকে কোনোভাবেই শুধুমাত্র অর্থকড়ি দিয়ে মাপা সম্ভব নয়। দিস ইজ বিয়ন্ড মনিটাইজেশন। অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন আমাদের জন্য। +91-9888419943 এই হচ্ছে উনার ফোন নাম্বার। কেউ যদি ভারতের পাঞ্জাবে যান তবে অবশ্যই চন্ডীগড় ঘুরে হরভজন নানুর বরফির স্বাদ নিয়ে আসবেন। 


ট্যাগঃ

শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা