এটি নিতান্তই ব্যাঙ্গাত্মক একটি লেখা, সিরিয়াসলি নেয়ার মতো কিছু নয়। প্রতিবার এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলেই ফেসবুকে একশ্রেণীর মোটিভেশনাল স্পিকারের দেখা মেলে, ইনিয়ে বিনিয়ে তারা 'তুমিও জিতবে' টাইপের একটা বাণী প্রচার করে কিছু লাইক-কমেন্ট কামিয়ে নিতে চান। কিন্ত আমাদের তো লাইক-কমেন্টের লোভ নেই, তাই আমরা আপনাকে দ্বিধাহীন গলায় বলছি- তুমিও হারবে!

তোমরা যারা এ+ পেয়েছো, তাদের খুব খুশি হবার কিছু নেই। কারণ, তোমাদের জন্য উচ্চশিক্ষার যথেষ্ট সুযোগ এদেশে নেই। যে কারণে তুমি তোমার পছন্দের বিষয় নিয়ে ভাল কোথাও পড়তে পারবে কি না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। 

হয়তো তোমার পছন্দের বিষয় মেকানিক্যাল। কিন্তু দেখা যাবে তোমায় পড়তে হচ্ছে সিভিল! হয়তো তুলনামূলক অখ্যাত কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমি পছন্দের বিষয়টি পড়তে পারতে। কিন্তু সামাজিক স্ট্যাটাস, চাকরির বাজারে চাহিদা, পারিবারিক চাপ ইত্যাদি নানাবিধ কারণে তোমার সে সুযোগ হবে না।

পাশ করার পরও ভাল কোন চাকরী পেতে তোমায় অনেক সংগ্রাম করতে হবে। তার মানে এই না যে তোমার যোগ্যতা নেই। প্রকৃতপক্ষে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। আর যেই যোগ্যতা আসলে কোন কাজে লাগে না, সেটা থাকা আর না থাকা সমান!

মিঃ হাইজিন জীবাণুমুক্ত হাতের প্রতিশ্রুতি

চাকরী বাকরী পেয়ে গেলেও সেখানে সৎভাবে কাজ করে উন্নতি করা অসম্ভব না হলেও প্রচন্ড কঠিন একটা ব্যাপার। ভালমানুষীর কোন দাম সেখানে পাবে না। তুমি কারো ক্ষতি করো আর না করো, যেকোন মুহুর্তে যে কেউ সামান্য সুযোগ পেলেই তোমার বারোটা বাজিয়ে দেবে।

তাছাড়া, তুমি যেই অফিসে কাজ করবে, সেই অফিসের সামনের ঝালমুড়িওয়ালার ইনকাম যখন তোমার দ্বিগুণ হবে, তখন আসলে হতাশ হওয়া ছাড়া কিছু করার থাকবে না! কে জানে, হয়তো ঐ ঝালমুড়ি বিক্রি করা ছেলেটিই ৩ বারের চেষ্টায় এইচএসসি পাশ করতে ব্যর্থ হয়েছিল! সেই সুযোগ তুমিও পেয়েছিলে, কিন্তু সামান্য এ+ এর মোহে তুমি তা বিসর্জন দিয়েছো!

তাই, এ+ পেয়েছো বলে জীবনে দারুণ কোন অর্জন করে ফেলেছো, এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। তোমার আগেও অতীতে অনেক এ+ পাওয়া মানুষজন জীবনে পদে পদে মার খেয়েছে। তুমি যে তাদের চেয়ে ব্যতিক্রম কেউ হবা, এমনটা ভেবে নেয়ার কোন কারণ নেই।

তাই সবসময় মনে রেখো, 'তুমিও হারবে!'


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা