গৌতম চট্টোপাধ্যায়: বাংলা গানের ধারা বদলে দিয়েছিলেন যিনি!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

বাংলা গানের ইতিহাস লিখতে গেলে বিপ্লবের বড়সড় একটা অধ্যায় খুঁজে পাওয়া যাবে, সেই বিপ্লবের নাম :মহীনের ঘোড়াগুলি'। আর বিপ্লবটায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গৌতম চট্টোপাধ্যায় নামের একটা মানুষ...
তার জীবনটাকে বিপ্লবের গুদামঘর বললে ভুল হবে না। কিংবা সংগ্রামের খেরোখাতা- সেটাও মানানসই। কি করেননি জীবনে! গান লিখেছেন, গেয়েছেন, সুর করেছেন, তবলা-গিটার সবকিছুতেই পারদর্শী ছিলেন। রাজনীতি করেছেন, নকশাল মুভমেন্টে জড়িয়েছেন, গ্রামের মেহনতি কৃষকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন, এনকাউন্টারে মেরে ফেলার হুমকি মাথায় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়েছেন, ভোপালে গিয়ে পেটের দায়ে করেছেন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভের চাকরি।
ফিল্ম বানিয়েছেন, ব্যান্ড গড়েছেন, সেই ব্যান্ড ভেঙেছে, বাকীরা দল ছেড়েছে, দেশের বাইরে চলে গেছে, যার যার ক্যারিয়ার গুছিয়ে নিয়েছে, তিনি শুধু পড়ে থেকেছেন মাটি আঁকড়ে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় যেটা, সেটা হচ্ছে- তিনি বাংলা গানের স্বরূপটা বদলে দিয়েছিলেন, পাল্টে দিয়েছিলেন খোলনলচে। 'আর্জ' থেকে লম্বা একটা জার্নি হয়ে 'মহীনের ঘোড়াগুলি'- তার মাঝখানে কালজয়ী কিছু গানের জন্ম হয়েছে তার হাতে, তার গলায়, তার মাথায়। যে গানগুলোকে বাঙালি শত শত বছর ধরে মনে রাখবে, মনে রাখতে বাধ্য হবে।

বাংলা গানের ইতিহাস লিখতে গেলে বিপ্লবের বড়সড় একটা অধ্যায় খুঁজে পাওয়া যাবে, সেই বিপ্লবের নাম মহীনের ঘোড়াগুলি। আর বিপ্লবটায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গৌতম চট্টোপাধ্যায় নামের একটা মানুষ। তিনি সলতে বানিয়েছেন, আগুন জ্বালিয়েছেন, সেই মশালটা জ্বালিয়ে হেঁটে গেছেন নিরন্তর। জন্ম হয়েছে ‘আবার বছর কুড়ি পর’, ‘ক্ষ্যাপার গান’, ‘ঝরা সময়ের গান’, ‘মায়া’ নামের কিছু মন্ত্রমুগ্ধ আবেশের।
শুভ জন্মদিন গৌতম চট্টোপাধ্যায়। বড় অবেলায় আপনার সঙ্গে পরিচয়, কত দীর্ঘ রাত আমার কানে মায়ার পরশ বুলিয়েছেন আপনি, উপহার দিয়েছেন অসাধারণ কিছু মুহূর্ত, অসামান্য সব অনুভূতি! আপনার গানের খাতা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, বলা হয়েছিল, গান নয়, গু হয়েছে! প্রতিবেশীরা এসে বাড়ির সামনে লিখে গেছেন 'আস্তাবল', কারণ গানের নামে নাকি আপনারা ঘোড়ার মতো হাঁকডাক করতেন! আপনি তাতে দমে যাননি, আপনি হার মানেননি। মেরুদণ্ড সোজা রেখে আপনি বাঙালির গান শোনার অভ্যাসকে বদলে দিয়েছেন, আপনাকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছেন মহীনের ঘোড়াগুলি দিয়ে...