দেশে আসার জন্য যখন এয়ারক্রাফটে চড়ে বসি, তখনও ভাবিনি- আমার জন্য এত লজ্জাজনক তিক্ত অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে; যা দেশের মানুষের কাছ থেকে আমার প্রাপ্য ছিল না।
ফেরদৌস খন্দকার : এমন কোনো অন্যায়, অপরাধ আমি করিনি। আমি দেশের মন্ত্রী-এমপি কিংবা উচ্চপদে আসীন হতে চাইনি। কোভিড-১৯ নিয়ে গত তিনমাস যুক্তরাষ্ট্রে অমানুষিক পরিশ্রম করেছি। দেশেও এসেছি দেশের মানুষের কোনো কাজে নিজেকে লাগানো যায় কিনা সেই উদ্দেশ্য নিয়ে। কেউ আমার সেবা না চাইলে আমি আবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবো। আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ। এই দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমি ডাক্তার হয়েছি। দায়িত্ববোধ থেকেই বার বার দেশে আসি। মানুষের জন্য কাজ করি। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে আসি না।
এই দেশ থেকে ডাক্তারি পাশ করে বিদেশ গিয়ে ৯০ শতাংশই দেশে আসেন না। আমার অপরাধ আমি দেশে বার বার আসি। প্লেন থেকে নেমেই জানলাম আমাকে বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের ভাতিজা উপাধি দেয়া হয়েছে। আরেক খুনি রশিদের খালাতো ভাই বানানো হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, আমি নাকি পলাতক তারেক রহমানকে নিয়মিত টাকা পয়সা দেই।
এইসব নিয়ে আসলেই আমি বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমার বাড়ি কুমিল্লা, নামের সাথে খন্দকার আছে। তাই হয়তো মোস্তাক-রশিদ গংদের আত্মীয় উপাধি দেয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলে হয়তো গোলাম আযমের আত্মীয় বানানো হতো। গোপালগঞ্জ বাড়ি হলে হয়তো বলতো আমি মুফতি হান্নানের আত্মীয়। যারা এইসব অপবাদ দিচ্ছেন, জানিনা তাদের আমি কী ক্ষতি করেছি। আমি যা না, আমাকে তা বানিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু আমি যা ছিলাম, তা বলছেন না কেন আপনারা?
১৯৯১ সালের পর চট্রগ্রাম মেডিকেলে শিবির ছাত্রদলের তোপের মুখে ছাত্রলীগের শ্লোগান দিয়েছি। শিবিরের মা’র খেয়ে ক্যাম্পাসও ছাড়তে হয়েছিল । শিবিরের সাথে যুদ্ধ করে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে পুর্নপ্রতিষ্ঠিতও করেছি। এই বিষয়ে তথ্য নেয়া খুব সহজ। আপনারা চাইলেই খবর নিতে পারেন। আমরা যখন শিবিরের বিরুদ্ধে ফাইট করেছি, তখন আজকের সমালোচকরা কোথায় ছিলেন আমার জানা নাই।
বেশি কথা বলতে চাই না। আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলাম। আমার সম্পর্কে অপবাদের একটাও যদি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে যে শাস্তি দিবে আমি তা মাথা পেতে নেবো। আর যারা অপবাদ দিচ্ছেন, তাদের প্রতি কোনো অনুরোধ কিংবা অভিযোগ নাই। শুধু এইটুকু বলবো- নিজের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। আমার সম্মানহানির এই অপচেষ্টার জন্য রোজ হাশরের ময়দানে আপনাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। নিয়তির বিচার অনেক কঠিন। এটা কাউকেই ছাড়বে না।