ফুল সেট পিপিই পরিধান করেও যে সকল ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট, এমএলএসএস, কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগিদের সেবা দিচ্ছেন না, তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি...

ফুল সেট পিপিই পরিধান করেও যে সকল ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট, এমএলএসএস, কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগিদের সেবা দিচ্ছেন না (বিশেষ করে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে) তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি। আপনাদের মত গুটিকয়েক মানুষের জন্য দেশের লাখ লাখ হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিব্রত হতে হয়। অথচ আপনাদের জানা উচিত, আপনারই কোন কোন সহকর্মী সন্দেহভাজন হওয়ার পরও টেস্ট করছেন না একমাত্র তার অনুপস্থিতিতে সার্ভিস চেইন ভেঙে পড়তে পারে, সেই আশঙ্কায়। 

বলতে পারেন এতে তো উল্টো ক্ষতি হচ্ছে। না, সার্বিকভাবে সেটা হচ্ছে না। সাধ্যের মধ্যে সব রকম সুরক্ষা নিয়েই তাঁরা অন্যকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছেন, ল্যাবে কাজ করছেন, আইসিইউতে কাজ করছেন, রোগির অক্সিজেন সিলিন্ডার ঠেলছেন, এমনকি কবর পর্যন্ত খুঁড়ে দিচ্ছেন। এইসব কিছু মাটি হয়ে যাচ্ছে আপনাদের কারণে। 

কোভিড-১৯ মাত্র কয়েকজন হেলথ প্রোভাইডার মারা গেলেও আক্রান্ত হয়েছেন হাজার হাজার। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য তাঁরা নিজেরাও স্বজাতির কাছ থেকে চিকিৎসা সেবাটুকু পাননি। সাধারণ মানুষ তাদের হাহাকার শুনতে না পেলেও আমরা নিজেরা পাই। আমাদের জেনে রাখা উচিত একজন আক্রান্ত হওয়ার কারণ শুধু পিপিই স্বল্পতা না, পিপিই ব্যবহার সম্পর্কে নিজেদের অজ্ঞতাও দায়ী।

একজন অধ্যাপককে দেখলাম ফুল সেট (অতিরিক্ত) পিপিই পড়ে গাড়িতে থেকে নামছেন। সেটাও মানা যায়, কিন্তু সেই অবস্থাতেই ডিউটি শেষ করে আবার গাড়িতে উঠে ঘরে ফেরা?! হাউ প্যাথেটিক। উনারা এতদিন পর এসেও পিপিই ব্যবহারের নিয়ম জানেন না? সাধারণ মানুষ পিপিই পড়ে রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করলে তাদের উপহাস করেন কোন আক্কেলে? 

দেশের এক নম্বর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪ দিনের ব্যবধানে ২৮ জন রোগি মারা যাওয়ার পর জানা যায় স্যাম্পল নেয়া হয়েছিল মাত্র ৪ জনের! যেখানে একই প্রতিষ্ঠানে দিনরাত ২৪ ঘন্টা পিসিআর ল্যাব সচল, নেই কোন স্যাম্পল জট। এটা কিভাবে সম্ভব? রোগি ভর্তি হওয়ার পর প্রথম কাজই তো নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পাঠানো? 

আপনারা কি সবাই মিলে আওয়ামী লীগ সরকারকে ধ্বংস করে দিতে চান? উল্টো আবার আমরা যারা গঠনমূলক সমালোচনা করি, তাদের বিপ্লবী বলে টিটকারি দেন! এতগুলো মৃত্যুর দায় এখন কে নিবে? তারা মারা যাওয়ার আগে কতজনকে আক্রান্ত করে গিয়েছেন, সেটা কিভাবে জানা যাবে? সেই আক্রান্তদের মধ্যে যে আপনি নিজেও একজন না, সেটি কিভাবে নিশ্চিত হবেন? হঠকারিতারও একটা সীমা থাকা দরকার।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা