নো যদি বলতেই হয় সময় থাকতে বলা উচিত। ভালো লাগা হুট করেই আসে। ভালোবাসা ক্যারি করার অনেক শক্ত ব্যাপার। একটা ভুল থেকে নতুন কোন রক্তমাংসের ভুলে জন্ম দেয়া উচিত না...

প্রতিটা বিচ্ছেদের পর, ডিভোর্সের পর দুপাশের দুজন মানুষের একসময় আলাদা থাকার অভ্যাস হয়ে যায়। যাকে ছাড়া চলেনি তাকে ছাড়া ভালোভাবেই দিন চলে যায়। আমার শুধু আফসোস হয় ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর জন্য, সন্তানদের জন্য। তারা ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়। নিজের বাবা, নিজের মা ছাড়া অন্য কেউ কখনও বাবা-মায়ের মত ভালোবাসতে পারে না কাউকে।

খুব কাছে থেকে আমি এমন ব্রোকেন ফ্যামলির অনেক ছেলেমেয়েদের দেখেছি। তাদের সাথে মিশেছি। তাদের অনেকের এক্সিসটেন্স লিটারেলি শূন্য হয়ে গেছে। আমার এক পিঠাপিঠি কাজিন ছিলো। একই ক্লাসে পড়তাম আমরা। তার বাবা মায়ের সেপারেশনের পর ছেলেটার লাইফ পুরো এলোমেলো হয়ে গেলো। লেখাপড়া আর খুব একটা আগায় নাই। নিরুদ্দেশ হয়েছে অনেকবার। ইভেন আমার সাথেই তার আর দেখা হয় নাই।

অথচ তার বাবা আলাদা সংসার নিয়ে ভালো আছে। তার মায়ের নতুন সংসারেও সুখ এসেছে। শুধু ছেলেটা ভালো থাকলো না। এমন অসংখ্য উদাহরণ আমাদের সবার আশেপাশে আছে। এই ছেলেমেয়েগুলা সারাটাজীবন ডিপ্রেশনে ভোগে, আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগে। পৃথিবীটাকে তারা হয়ত প্রচণ্ড স্বার্থপর মনে করে।

গুড প্যারেন্টিং, ব্যাড প্যারেন্টিং নিয়ে আমরা অনেক লম্বা রচনা লিখি। অথচ কিছু কিছু ছেলেমেয়ে বঞ্চিত হয়ে বড় হয়। প্যারেন্টিং ব্যাপারটাও তারা হয়ত ফিল করতে পারে না। জাজ করার চান্স থাকে না।

আমাদের সমাজে আরও একটা আনফেয়ার ধারণা আছে। ম্যাক্সিমাম মানুষের এটার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। নতুন সংসারে ঝগড়া হলেই আশেপাশের সবাই বলা শুরু করে, বাচ্চা নিয়ে নাও সব ঠিক হয়ে যাবে। বনিবনা না হওয়া এমনকিছু সংসার বাচ্চার জন্য আটকে যায়। আর কিছু সংসার বাচ্চা নেয়ার পরও ভেঙে বাচ্চাকে এতিম করে দিয়ে যায়। অনেক বাচ্চা দাদা দাদীর কাছে, নানীর কাছে, খালার কাছে বড় হয়।

বনিবনা না হলে সেপারেশন হওয়া উচিত। মানুষের এই স্বাধীনতায় আমি বিশ্বাস করি। সবার নিজের লাইফ নিয়ে চিন্তা করার অধিকার আছে। নিজের ভালো থাকার অধিকার আছে।

সংসারে সময় নেয়া উচিত। স্পেস থাকা উচিত। নো যদি বলতেই হয় সময় থাকতে বলা উচিত। ভালো লাগা হুট করেই আসে। ভালোবাসা ক্যারি করার অনেক শক্ত ব্যাপার। একটা ভুল থেকে নতুন কোন রক্তমাংসের ভুলে জন্ম দেয়া উচিত না...


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা