ঘটনাটা কয়েকদিন আগের। শ্যাওড়াপাড়ার এক বাসার বাথরুমের ফলস ছাদের মধ্য থেকে বের হলো এক পলিথিনের প্যাকেট। সেই প্যাকেট খুলে যা পাওয়া গেলো, তাতে সকলের চক্ষু চড়কগাছ!

দেশের পরিস্থিতি এমনিতেই থমথমে। কেউ কোথাও ভালো নেই। এর মধ্যে মন ভালো করা আসলেই এক কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার মন ভালো করার অপশনও অতটা নেই আশেপাশে। এরমধ্যেই শুনলাম এক গা ছমছমে ভূতের গল্প। তাও আবার ঢাকার শ্যাওড়াপাড়ায়। লাশ, কঙ্কাল, থানা পুলিশ, আতঙ্ক... এ টানটান গল্পে আছে সবই। অনর্থক সময়ব্যয় না করে গল্পেই ঢুকে পড়া যাক বরং।

ঢাকার শ্যাওড়াপাড়ার এক বাড়ির বাসিন্দা হানিফ সরকার। যে বাড়ি নিয়ে আমাদের গল্প, সেই বাড়িতে তিনি উঠেছেন নব্বইয়ের দশকে। তখন থেকে তিনি ঐ বাড়িরই বাসিন্দা। এই তো কয়দিন আগে তার বাসায় পানির লাইনে কাজ করে যে মিস্ত্রি, সে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো তার কাছে। এসেই হড়বড় করে যা বললো, তার সারমর্ম করলে দাঁড়ায়, বাথরুমের ফলস ছাদের উপরে একটি পলিথিনের প্যাকেট পেয়েছে সে। এজন্যেই সে হানিফ সরকার কে ডাকতে এসেছে। হানিফ সরকারও একপ্রস্ত অবাক হলেন, বাথরুমের ফলস ছাদের উপর পলিথিনের প্যাকেট আসবে কোত্থেকে!

পানির লাইনের মিস্ত্রির সাথে তবু তিনি দেখতে এলেন ঘটনা কী। এ বিষয়ে জানিয়ে রাখি, বাথরুমের পানির লাইনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি কলের মিস্ত্রিকে ডাকেন হানিফ সরকার। কলের মিস্ত্রি এসে পাইপের লাইন চেক করার জন্যে বাথরুমের ফলস ছাদ ভেঙ্গে দেখলেন,  ফলস ছাদের সিমেন্টের মধ্যে আটকে আছে একটি পলিথিনের প্যাকেট। সিমেন্টের মধ্য থেকে প্যাকেট বের করে আনা হয় এরপর। সেই পলিথিন, সিমেন্ট আর কংক্রিটের মাঝে হীরে-জহরত পাওয়ার আশা করেছিলেন কী না উপস্থিত কেউ, জানা নেই আমাদের। তবে পলিথিনের মোড়ক খুলে যা পাওয়া, তাতে পিলে চমকে গেলো প্রত্যক্ষদর্শী সবারই। পলিথিনের মোড়ক খুলে পাওয়া গেলো একটি আদি ও অকৃত্রিম কঙ্কাল! যে কঙ্কালটির জায়গায় জায়গায় ভেঙ্গে ও ক্ষয়ে  গিয়েছে। বেশ অনেকদিন আগের যে এ কঙ্কাল, সেটি বেশ বোঝা যাচ্ছিলো, প্রথম দেখাতেই।  

অজ্ঞাতনামা কঙ্কালকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানারকম আলোচনা! 

এরপরই পুলিশের ডাক পড়লো। পুলিশও রীতিমতো অবাক। এরকম চাঞ্চল্যকর ও নাটকীয় ঘটনা তারাও শোনেন নি ও দেখেন নি কোনোদিন। তবে কঙ্কালটিকে সংগ্রহ করে এরপর ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টে পাঠায় পুলিশ। সেখান থেকেই হয়তো পরে জানা যাবে, কঙ্কালটির বয়স, লিঙ্গসহ বাকি সবকিছু। তবে কঙ্কালটির প্যাকিং যেভাবে করা হয়েছিলো, তাতে এ কথা নিশ্চিত, খুন এবং খুনের পর র‍্যাপিং এর কাজটি যে করেছেন, তিনি এ বিষয়ে বেশ দক্ষ।

এ ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যেও। তবে ঘটনা যেটিই হোক, এটা নিশ্চিত, কোনো এক মানুষের অপঘাত মৃত্যুর সাক্ষীই এই কঙ্কাল। এবং খুনীও হয়তো রয়ে গেছেন আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভেতরের গল্প জানা হবে না কারোরই কোনাদিন। তবে গল্প জানা হোক বা না হোক, রহস্যময় এই কঙ্কালটি হয়ে থাকবে অজ্ঞাত কোনো মানুষের জীবনগল্পের একদম শেষ লাইন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা