আগামী কয়েকদিন দেশের সিদ্ধান্তগুলোর সমন্বয় জরুরী। যে যেভাবে পারবে সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। আর এখন যারা কাজ করছেন নানা সেক্টরের মানুষ তাদের ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে লাভ নেই। বরং তাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে।

এক দিনেই ১৩৯ জন আক্রান্ত। মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে ৬২১। ভেবে দেখেন, গত এক মাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ৩৪ জন আর সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৯ জন। সুস্থ হওয়ার সংখ্যা খুবই কম। তবে হেরে যাওয়ার কোন কারণ নেই। আমি মনে করি সবে তো লড়াই শুরু। সেই লড়াইয়ে জিততেই হবে। আর সেজন্য সবার আগে দরকার বেশি বেশি পরীক্ষা। মাত্র ১৩৪০টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৯ জন পাওয়া গেল। মানে দশ শতাংশের বেশি আক্রান্ত।

আমি মনে করি এখন প্রতিদিন ১০-২০ হাজার পরীক্ষা করা জরুরী। আর জরুরী একযোগে নিয়ম মানা। বারবার বলছি, কেউ ঘরে থাকবেন আর কেউ বাইরে এইভাবে লড়াইটা হয় না। হ্যা জীবন জীবিকার কারণে আমরা অনেকেই ঘরে থাকতে পারছি তারা সুবিধাভোগী। আবার এই জীবন-জীবিকার তাগিদেই অনেকে বের হচ্ছেন। এই বের হওয়ার সংখ্যাটা কমানো ছাড়া পরিস্থিতি উন্নতির সুযোগ নেই।

দেখেন বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, করোনার কারণে লকডাউন হয়েছে যেসব এলাকায় সেখানেও ব্যাংক খোলা থাকবে। এতে কিন্তু ঝুঁকি বাড়বে। আমি বারবার বলছি, ব্যাংকিং সেবাকে অনলাইনে আনা হোক। কে আসবে ব্যাংকে সেটা আগেরদিন ফোন করে মোবাইল মেসেজে ঠিক করা হোক। কাঁচাবাজারগুলোতে অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী। এখনো বহু লোক অকারণে বের হচ্ছে। সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

আমার মাথায় আরেকটা জিনিষ ঘুরছে। আমার মনে হয়, যারা জরুরী কাজে বাইরে বের হচ্ছেন ডাক্তার-নার্স-সাংবাদিক-পুলিশ-ব্যাংকার বা যারাই বের হচ্ছেন, তাদের যদি হাঁটা-চলার বদলে গাড়িতে নেওয়া যেতো। ধরেন মাইক্রোবাস বা বাসে দূরত্ব বজায় রেখে। পুলিশদের বাসে বা গাড়িতে পৌঁছে দেওয় হবে। ডাক্তার-ব্যাংকার-সাংবাদিক সবাইকে। কারণ, লোকজন পথে ঘাটে যতো কম বের হবে ততোই ঝুঁকি কমবে। রাস্তায় যতোক্ষণ লোক থাকবে করোনা ততোক্ষণ ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।

আগামী কয়েকদিন দেশের সিদ্ধান্তগুলোর সমন্বয় জরুরী। যে যেভাবে পারবে সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। আর এখন যারা কাজ করছেন নানা সেক্টরের মানুষ তাদের ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে লাভ নেই। বরং তাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে।

আমাকে বলেন তো এই যে ডাক্তাররা-নার্সরা মেডিকেল স্টাফরা বের হচ্ছে চিকিৎসা দিয়ে তারা কী বাড়িতে ফিরছে? তারা কোথা থেকে খাবার পাবে? আমাকে বলেন কেন রেডিসন বা শেরাটন বা কোন হোটেল বুকিং দিয়ে ডাক্তারদের প্রত্যেক রুমে রাখা যাবে না? কেন তাদের খাবার রুমে পৌঁছে দেয়া যাবে না?

শুধু ডাক্তার নয় যারাই এখন ঘর থেকে বের হয়ে মানুষকে সেবা দিচ্ছেন সবার পাশে থাকা জরুরী। তবে সবচেয়ে বেশি জরুরী পরীক্ষার সংখ্যাটা বাড়ানো। তো বেশি পরীক্ষা করে রোগীদের আলাদা করা যাবে ততো মঙ্গল।

আর হ্যা এই করোনার সময়ে যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, যারা পালিয়ে গেছেন, যারা অবহেলা করেছেন, করোনা নিয়ে যারা মিথ্যা বলেছেন, যারা এখন চুরি করছেন, তাদের সবার তালিকা করা হোক যাতে আমরা তাদের চিহৃিত করতে পারি।

পাশাপাশি যারা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, সেই ডাক্তার-নার্স-মেডিকেল স্টাফ-পুলিশ-ব্যাংকার-সাংবাদিক-স্বেচ্ছাসেবী-বিদ্যুত অফিসের কর্মীসহ যে যেই পেশার মানুষই হোক না কেন, তাদের তালিকা করে রাখা হোক। রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন আমরা তাদের সম্মান জানাতে পারি। তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো যেন আমরা বুঝতে পারি। আল্লাহ আমাদের রহম করুন।

আরও পড়ুন- 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা