প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয়স্থল, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুজন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে- এমনটাই বলছে বিবিসি। বাংলাদেশের 'সেভ দ্য চিল্ড্রেন' এর হেলথ ডিরেক্টর ডা শামীম জাহান বিবিসিকে বলেছেন, 'করোনাভাইরাস যেহেতু বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিফিউজি ক্যাম্প কক্সবাজারে চলে এসেছে, আমরা ধারণা করছি হাজারো মানুষ মারা যেতে পারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে। এই প্যানডেমিক বাংলাদেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারে কয়েক দশক!'

পৃথিবীর সব বড় বড় নিউজপেপারগুলো নিউজ করে ফেলেছে ইতোমধ্যে। বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন, ভয়েস অব আমেরিকা- সবাই ঘন্টা কয়েকের মধ্যেই। আজকের পর কোন নিউজপেপারই বাদ যাবে না হয়তো। সবাই বলছে- পৃথিবীর সবচে' বড় রিফিউজি ক্যাম্পে করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছে। ভিনদেশী মানুষের কাছে হয়তো এটা কেবল একটা নিউজই। কারও কাছে কিছুটা উদ্বেগজনক বড়জোর।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প করোনাভাইরাস
বিবিসির লিড নিউজ

কিন্তু পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষেরা ভালো করে নামই শুনে নাই, এমন এক পুচকে দেশের জীবনে এই নিউজটা যাতে 'বড় দূর্যোগের সূত্রপাত' না হয়। এই প্রার্থনাই করি। জন্মের পর এই দেশ, গজানোর পর ছোট্ট বদ্বীপের- দূর্ভাগা মানুষেরা কম বিপদ সহ্য করে নি! শরীরে এখনও ঔপনিবেশিক দাস জীবনের ক্ষত। চোখ ঘুরালেই মুক্তিযুদ্ধের বদ্ধভূমির স্মৃতি। বেড়ে উঠার সময়কে জাপটে ধরে ভয়ংকর সব সামরিক শাসন। এরপর এসেছে- গণতন্ত্রের নামে একের পর এক জুলুমবাজ শাসক। রাজনীতি যাদের বিভক্ত করে রেখেছে গুহাযুগের ক্ল্যানবাসীদের মতোন। ফি বছর বন্যা, ঘুর্ণিঝড়- আগুনে পোড়া বীভৎস সব দূর্ঘটনা।

সেই এক দেশ যারা ১০ জনে ৩ জন মানুষ না খেয়ে ঘুমাতে যায় প্রতি রাতে! তারাই সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে ভীষণ আতিথেয়তা নিয়ে বরণ করে নিয়েছিল পাশের দেশান্তরী মজলুম রিফিউজিদের। এক দুই হাজার নয়। লাখ লাখ ঘরহারা রিফিউজিদের দায়িত্ব।

রিফিউজিদের শরীরে ভাইরাস- এই নিউজ যাতে আরও বাজে নিউজের সূচনা না হয়। সবাই যেন নিরাপদে থাকে। আশ্রয়স্থলের বাসিন্দা আর ভাগ্যহত শরনার্থীদের প্রার্থনা যাতে খুব ভয়াবহ কিছু থেকে রক্ষা করে পুরো জনপদকে। এই প্রার্থনাই করি।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা