
খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতির শীর্ষে থাকা বাঙালি যখন বাজারের খাবার মজুত করে জিনিস পত্রের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দুর্যোগের ফায়দা তুলে মুনাফা লুটে ধর্মের বাণী শোনায়, তখন এইসব মুনাফেকদের জুতাপেটা করতে মন চায়। সরকারের উচিৎ আলগা ধর্মীয় জোশ দেখানোদের মিলিটারি বুট দিয়ে কষে লাথি মেরে বাসায় ফেরত পাঠানো।
ভোটের রাজনীতিতে আমার বিশ্বাস নেই। সেই ছোটবেলা থেকেই বিশ্বাস উঠে গেছে। কেবল একটি ঘটনা বলি। আমাদের পাড়ার কমিশনার ভাইর কাজ ছিল দিনের বেলা সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে অফিসে বসা, এবং রাতের বেলা নিজের বাড়ির অফিসে বসে লোকজনের বিচার করা। বিচার মানে অমুকের সাথে তমুকের ঝামেলা হয়েছে, তিনি বিচারক, তিনি ন্যায় বিচার পাইয়ে দিবেন। পাড়া মহল্লার শালিশী বিচার আর কি।
এখন স্বাভাবিক ভাবেই, দুইপক্ষকে খুশি রেখে ন্যায় বিচার করতে পারবেন না। কাউকে না কাউকে অখুশি করতেই হবে। কেউ যদি কারোর একশো টাকা চুরি করে, সেই চোরকে আপনি বলেন পুরো টাকা ফেরত দিতে, তাহলে চোর আপনার উপর অসন্তুষ্ট হবেই। কারন চুরির জন্যও তার নিজের জাস্টিফিকেশন ছিল। লিগ্যাল, নাকি ইল্লিগ্যাল সেটা পরের প্রশ্ন।
তা সেই বড় ভাইয়ের বিচার ছিল সবাইকে খুশি করা বিচার। কোন পক্ষ্যই যেন ভোটের সময়ে তাঁর থেকে বিমুখ না হয়। ভোটের রাজনীতিতে এইটাই হয়। কেউ বলবেন, এটি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। ইত্যাদি ইত্যাদি। এই নিয়ে বিস্তারিত লিখেছিলাম বহু আগেই। সেই প্যাচালে এখন যেতে চাইছি না।
মূল কথা হলো, আমাদের দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান? দেশে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে চান? পারবেন না। কারন আপনি তাহলে ভোট হারাবেন। মন না চাইলেও নরকের কীটের সাথে বসে খাবার খেতে হবে। মন বিষিয়ে উঠলেও অসুরের সাথে হাত মিলিয়ে চলতে হবে। কারন ঐ গডফাদারের টাকায় আপনার পার্টি ফান্ড চলে। সেই দুর্নীতিবাজ নেতার অধীনে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভোট থাকে।
আমাদের দেশে অনেক বছর ধরেই ইলেকশন একটি প্রহসনের নাম। টিভি ক্যামেরায় নিয়মিতই ভিডিও প্রকাশ পায় জাল ভোটের, ভোট কেন্দ্র দখলের বা ইত্যাদির। আমার এতে কিছুই যায় আসেনা। যে-ই ক্ষমতায় যাক, সে যদি দেশের জন্য কাজ করে, সেটাই বরং আমার কাছে মুখ্য। সহজ উদাহরণ, মেয়র আনিসুল হক। বিতর্কিত ইলেকশনের মাধ্যমে তিনি ঢাকার মেয়র হয়েছিলেন। তারপরের ঘটনা ইতিহাস। ঢাকাবাসী এখনও তাঁর কথা স্মরণে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

একটি ব্যাপার আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের মাথায় রাখা উচিৎ। তাঁরা দেশের অভিভাবক। দেশের মঙ্গলের জন্য যখন যা পদক্ষেপ নেয়ার তাঁরা যেন নেন। যদি কঠিন হতে হয়, তবে অবশ্যই তাঁরা কঠিন হবেন। আমাদের মায়েরা কি ছোটবেলায় আমাদের চড় থাপ্পড় মারেননি? আমার নিজের ছেলেকেইতো মাঝে মাঝে কথা না শুনলে থাপড়াতে ইচ্ছা করে। এতে দোষের কী আছে?
এই যে আমাদের দেশে বারবার বলা হচ্ছে সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে। এই যে বিশ্বব্যাপী মহামারী ছড়িয়ে গিয়ে ম্যাসাকার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এই যে বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতি নগ্নভাবে বেরিয়ে এসেছে, তারপরেও দেখা যাচ্ছে দেশের লাখ খানেক মানুষ এখনও ব্যাপারটির গুরুত্ব বুঝতে অস্বীকার করছে। বিশ্বব্যাপী মসজিদ বন্ধ হয়ে গেছে, বাংলাদেশের মসজিদগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। এই বলদদের মাথাতেই ঢুকছে না যে মসজিদ বন্ধ হলেই নামাজ বন্ধ হয়ে যায় না।
নামাজ বাড়িতে পড়া যায়, এবং হাদিস অনুযায়ীই এইরকম মহা দুর্যোগে বাড়িতে নামাজ পড়া উত্তম। মসজিদে আসলে বরং সুযোগ আছে সবার করোনা আক্রান্ত হবার। সুযোগ আছে নিজের বাবা মা দাদা দাদি কাউকে আক্রান্ত করে তাঁদের মৃত্যু ডেকে আনার। কুরআনে আল্লাহ নিষেধ করেছেন, এইরকম গর্ধবের মতন আচরণ করতে। তিনি বলেছেন, “নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না।” বিশ্বাস না হলে সূরা বাকারার ১৯৫ নম্বর আয়াতটি দেখে নিন ভাই।
সরকারের এখনই উচিৎ শক্তি প্রয়োগ করে এদেরকে বাসায় বন্দি করা। আলগা ধর্মীয় জোশ দেখাতে আসলে মিলিটারি বুট দিয়ে পাছা বরাবর কষে লাথি মেরে বাসায় ফেরত পাঠানো। খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতির শীর্ষে থাকা বাঙালি যখন বাজারের খাবার মজুত করে জিনিস পত্রের কৃত্রিম সংকট তৈরী করে দুর্যোগের ফায়দা তুলে মুনাফা লুটে ধর্মের বাণী শোনায়, তখন এইসব মুনাফেকদের জুতাপেটা করতে মন চায়। এই আজকেই পত্রিকায় পড়লাম এক গ্রামে এক ইমাম একটি কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে আজান দিয়ে ফজরের জামাতের ইমামতি করেছে। এগুলিকে পাথর মেরে মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করা উচিৎ। কোনরকমের দয়া নয়।
কিন্তু সরকার কিছু করবে না। কেন? কারন ধার্মিকদের ভোট হারিয়ে ফেলবে। এর আগেও আপোষ করতে দেখেছি, ভবিষ্যতেও দেখবো। মাঝে দেশটার যা সর্বনাশ হবার হয়ে যায়। জানিনা কতটুকু অথেন্টিক, তবে মোঘল বাদশাহ আলমগীরের একটি কাহিনী পড়েছিলাম ছোটবেলায়। একটা সময়ে গোটা ভারত জুড়ে প্রচুর পীর ফকির হয়ে গিয়েছিল। যেই মরে, তারই কবরকে মাজার বানিয়ে ব্যবসা চালু হয়ে যায়। আমাদের দেশে এখনও যা চলছে।
তা আলমগীর হার্ডকোর সুন্নি মুসলিম ছিলেন। তিনি এইসব মাজার ব্যবসায়ীদের দুই চোখে দেখতে পারতেন না। তিনি মুঘল বাদশাহ, কার ক্ষমতা তাঁকে আটকায়। কিন্তু জোর করেতো আর মানুষকে ধর্ম শেখানো যায় না। তিনি তখন একটি বুদ্ধি বের করলেন। মাজারে গিয়ে বললেন, "এই মাজারের পূজা করো কেন? এই পীরের ক্ষমতা কি?"
যারা মাজারের খাদেম, তারা বলতো, "ইনি জিন্দা পীর। মৃত্যুর পরেও বাবার অনেক ক্ষমতা। মানুষের মানত পূরণ করে।" ইত্যাদি ইত্যাদি যা বলে আর কি। আলমগীর তখন বলতেন, "ঠিক আছে, আমি তিনবার সালাম দিব। যদি কবর থেকে ওয়ালাইকুম আসসালাম না শুনি, তাহলে এই মাজার ভেঙে ফেলবো। কবরওয়ালার ক্ষমতা থাকেতো আমাকে আটকে দেখাক।"
ব্যাস, এইভাবেই দিল্লি সহ অনেক শহর মাজার মুক্ত হয়ে গেল। জনতা ক্ষেপেনি? অবশ্যই ক্ষেপেছিল। তাতে আলমগীরের কিই বা এলো গেল? ভারতবর্ষের, তথা ইসলামেরতো লাভ হলো। যদিও এখনও সেই যুগেই ফেরত গেছে লোকে। এখনও কবর পূজা চলে। হয়তো আলমগীর না থাকলে সেটা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতো।
আমাদেরও আলমগীর দরকার। শক্ত হাতে বাঙালিকে শাসন করবে। যার এক হাতে হবে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আরেক হাতে রণ-তূর্য! আজকে অনুরোধ করছি, প্লিজ! আগামী কিছুদিন গণ জমায়াতে যাবেন না। সেটা জুম্মা হোক, বা কোন জনসভা। আমাদেরকে ননসেনসের মতন আচরণ করতে বলেনি আল্লাহ বা তাঁর রাসূল। আপনারা এতটা নির্বোধ কেন হচ্ছেন?