বাংলাদেশে করোনাভাইরাস: সর্বশেষ আপডেট (হালনাগাদকৃত)
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
![](https://media.egiyecholo.com/contents/posts/images/2020/3/8/DUlKYX4ROq4LLD7ETifnmUAx8ecHyjEyuau5qnhm.jpeg)
বাংলাদেশেও তিন জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের নেয়া হয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণে। উহান থেকে ঢাকা, করোনার সেই যাত্রাটা কেমন ছিল, সেটাই দেখে আসা যাক করোনার এই ডায়েরিতে...
৯ই মার্চ ২০২০, সন্ধ্যা ৬টা-
বাংলাদেশ থেকে গমন করা যাত্রী নিষিদ্ধ করেছে মালদ্বীপ। এর আগে গতকাল একই ঘোষণা দিয়েছে কাতার।
দেশের চারটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। হাসপাতালগুলো হলো- ১) মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ২) কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ৩) মহানগর হাসপাতাল ৪) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। এছাড়াও জরুরী প্রয়োজনেঃ IEDCR Hotline, মহাখালী, ঢাকা।
যোগাযোগঃ 01937000011 01937110011 01927711784 01927711785
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের জনের মধ্যে দুইজনই নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। তারা নারায়ণগঞ্জ শহরের আল জয়নাল প্লাজার বসবাসকারী। তারা উভয়ে স্বামী-স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। এদিকে, আমাদের 'সাংঘাতিক সাংবাদিক' ভাইয়েরা ঘিরে রেখছে আক্রান্তদের বাড়ি।
৯ই মার্চ ২০২০, বিকেল ৪টা-
স্বাস্থ্য সচিব মোহাম্মদ আসাদুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশে করোনা আক্রান্ত ৩ জনের সংস্পর্শে এসেছে এমন ৪০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা কন্ট্র্যাক্ট ট্র্যাকিং করি। আক্রান্তরা কার সঙ্গে মিশেছে, কোন বাজারে গিয়েছে, কোথায় বসে চা খেয়েছে। এইভাবে করে ৪০ জনকে ট্র্যাক করেছি। তাদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরো বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ করার মতো অবস্থা এখনো সৃষ্টি হয়নি। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আপাতত বড় ধরনের জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে। সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। স্কুল-কলেজ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা, আক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করার মতো বিষয়সহ সার্বিক আরও সিদ্ধান্ত পরের সভায় জানানো হবে। আজ সোমবার (০৯ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এসব তথ্য জানান তিনি।
৮ই মার্চ ২০২০, সন্ধ্যা ৬টা-
ঘোষণা এসেছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ছয়টি দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই হবে। দেশগুলো হচ্ছে চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইরান ও থাইল্যান্ড। এই ছয়টি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। এ ছয়টি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের শরীরে জ্বর না থাকলেও তাদের বাধ্যতামূলকভাবে নিজ বাড়িতে বা তারা যেখানে থাকবেন, এখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় যদি যাত্রীর শরীরে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর বেশি তাপমাত্রা থাকে, তাহলে তাকে সরাসরি কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
৮ই মার্চ ২০২০, বিকেল ৫টা-
আইইডিসিআর-এর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সেখানে সাধারণ মানুষকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। করণীয় হিসেবে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া ও কাশি শিষ্টাচার মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মীরজাদী সেব্রিনার আরও তিনটি বক্তব্য উল্লেখযোগ্য-
১. বাংলাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি। স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়নি।
২. করোনা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আছে। আইসোলেশেন ইউনিট করা হয়েছে।
৩. আক্রান্ত রোগী ও রোগীকে যিনি সেবা দিবেন, তারা মাস্ক পরবেন। সবার পড়ার প্রয়োজন নাই।
০৮ মার্চ, ২০২০, বিকেল ৪টা-
বাংলাদেশ বাকী ছিল এই তালিকা থেকে, নারী দিবসের এই দিনে বাংলাদেশেও ধরা পড়লো করোনাভাইরাস, আক্রান্ত তিনজনের খবর জানালো আইইডিসিআর। এদের মধ্যে দুজন সম্প্রতি ইতালী থেকে দেশে ফিরেছেন। জীবাণুটাও তারা ইতালী থেকে এনেছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তিন মাস হয়ে গেল, এখনও কোন প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি করোনার, এটাই সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার। তবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সাবধান থাকলে করোনা মোটেও ভয়ংকর কিছু নয় কারো জন্যে, একারণেই বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে আতঙ্কগ্রস্ত না হতে।
মার্চ ২০২০-
আশঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ছড়াতে থাকলো করোনা, পৌঁছে গেল ইউরোপ-আমেরিকাতেও। আমেরিকার কয়েকটা শহরে জারী করা হলো জরুরী অবস্থা, বৃটেনে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ঘটলো। জাপান-থাইল্যান্ডেও ছড়িয়েছে রোগটা, ইরানে তো ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভারতেও পাওয়া গেছে করোনায় আক্রান্ত রোগী।
ফেব্রুয়ারী ২০২০-
মৃত্যুপুরীতে পরিণত হওয়া উহান থেকে ৩১৪ জন বাংলাদেশীকে ফিরিয়ে আনা হলো বিশেষ বিমানে করে, তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হলো আশকোনার হজ ক্যাম্পে। কারো দেহেই করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়নি। এরইমধ্যে চীনের বাইরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রথম খবর এলো ফিলিপাইন থেকে। ততদিনে বিশ্বের অনেক দেশে ছড়াতে শুরু করেছে করোনার প্রাদুর্ভাব, দক্ষিণ কোরিয়া আস্ত একটা শহর বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে, একটা ধর্মীয় গোষ্ঠীতে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে তাদের গৃহবন্দী করে কোয়ারেন্টাইন সুবিধা দিয়েছে।
জানুয়ারী ২০২০-
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে শুরু করলো। বন্ধ করে দেয়া হলো উহান শহর, হাসপাতালগুলোতে খোলা হলো কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, প্রাণ হাতে নিয়ে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলেন সেখানকার ডাক্তার-নার্সরা।
ডিসেম্বর, ২০১৯-
প্রথম করোনাভাইরাস নামটা শুনলো বিশ্ব। প্রায় এক মাস আগে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিস্কার হলেও, চীন সরকার বেশ কিছুদিন এই ঘটনাটিকে চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানা যায়। যে ডাক্তার সর্বপ্রথম করোনার অস্তিত্ব আবিস্কার করেছিলেন, তিনিও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যুবরণ করেছেন।
চীনের উহান শহরের এক সামুদ্রিক মাছের বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়া একটা ভাইরাস মোটামুটি তাণ্ডব চালাচ্ছে পুরো পৃথিবী জুড়ে। করোনাভাইরাস নামের এই মরণব্যাধি এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়েছে, করোনার আক্রমণে মারা গেছে প্রায় তিন হাজার মানুষ। শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা, আজ মার্চের আট তারিখ, বাংলাদেশেও তিন জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের নেয়া হয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণে। উহান থেকে ঢাকা, করোনার সেই যাত্রাটা কেমন ছিল, সেটাই দেখে আসা যাক করোনার এই ডায়েরিতে...