সেক্স ড্রাইভ জাগ্রত হওয়া আর ধর্ষণ করার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
বিপরীত লিঙ্গের পর্দাহীনতার জন্য বড়জোর নিজের সেক্স ড্রাইভ আসতে পারে। অতোটুকুই! (সেটাও আসলে নিজের দৃষ্টি সংযত করলে হবার কথা না।) কিন্তু এরপরের ধাপ কন্ট্রোল না করতে পারার জন্য সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তি নিজে দায়ী! অন্য কেউ দায়ী না!
যেকোন কারণেই হোক না কেন বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, নিজের সেক্স ড্রাইভ জাগ্রত হওয়া আর ধর্ষণ করার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ!
কোন একটা মেয়ে বলতেই পারে যে, খুব হ্যান্ডসাম, সিক্স/এইট-প্যাক বডির একজন নায়ক দেখে তাঁর মধ্যে সেক্স ড্রাইভ জাগ্রত হয়েছে। সেটা আসলে কোন অস্বাভাবিক কিছু না। ইন ফ্যাক্ট, সেটাই বেশিরভাগ সময়ে স্বাভাবিক। টম ক্রুজ, হৃতিক রোশনকে দেখে, এমনকি আমাদের দেশের আরেফিন শুভর রিসেন্ট ট্রান্সফর্মেশন দেখে একটা মেয়ে তাঁদের প্রেমে পড়তে পারে। সেই নায়কের পোস্টার/ছবি নিজের রুমে লাগিয়ে রাখতে পারে।
কিন্তু সে কখনোই আরেফিন শুভকে ঘরে আটকে রেখে তাঁকে জোর করে তাঁর সাথে মিলিত হতে পারে না। সেটা ধর্ষণ!
(কুরআন ২৪:৩০): "মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।"
যদি ধর্ম মানেন তাহলে আপনার দায়িত্ব হচ্ছে, "চোখ নিচে নামিয়ে নেয়া!" খুব স্পষ্টভাবে ধর্মগ্রন্থে বলা আছে, "দৃষ্টি সংযত করার কথা!" সুতরাং ধর্মমতে কোন নারী বা পুরুষ তাঁর শরীরের কতটুকু কী এক্সপোজ করলো, সেটাই আপনার ভালোমতো দেখারই কথা নয়! কারণ আপনার দৃষ্টি সংযত থাকবে।
কোন নারী বা পুরুষ কী পোশাক পরলো বা না পরলো, সে স্রষ্টার কোন নির্দেশটা মানলো বা মানলো না সেটার জবাব সে স্রষ্টার কাছে দিবে। কেউ যদি কোন নির্দিষ্ট ধর্মে বিশ্বাস না করে, বা স্রষ্টায় বিশ্বাস না করে- তখন ধর্মীয় বিশ্বাসমতে, তাঁর হিসাবের খাতাটা স্রষ্টার সাথে আরও অনেক অনেক বড়! সেই ডিলিংস্টা তাঁকেই করতে দেন!
আপনি যেহেতু ধর্মে বিশ্বাসী, সেহেতু আপনার কাজ দৃষ্টি সংযত করার, আপনি সেটা করুন। সেখানেই আসলে স্টপ হয়ে যাবার কথা। আর যদি দৃষ্টি সংযত না করতে পারেন নিজে নিজেকে কন্ট্রোল করুন। যদি নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পারেন তাহলে মাস্টারবেট করুন। যাই করবেন, নিজের সাথে করুন। মাস্টারবেট - একটা বড় পাপ (কবীরা গুনাহ)- এইটা যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে অন্য কাউকে জোর করে সেক্স করা আরও বড় পাপ- এইটা মাথায় রাখুন!
আপনি নিজ চয়েজে নায়িকার পেইজে লাইক দিবেন, তাঁর ছবি ফলো করবেন। ছবিতে 'হাই সেক্সি' কমেন্ট লিখবেন, আবার 'পর্দার সবক দিবেন'- নিজের সেক্স ড্রাইভ জাগ্রত করবেন- তারপর বলবেন, "এই মেয়ে তো পর্দা করে নাই!"- এইটা কোনভাবেই মেইক সেন্স করে না! আপনার দায়িত্ব নায়িকাকে আনফলো করা।
রাস্তায় কোন বিপরীত লিঙ্গের কাউকে চলতে দেখলে দৃষ্টি নামিয়ে নিন। সে হিজাব পরলো, নাকি বোরকা পরলো, নাকি হাফপ্যান্ট পরলো নাকি সিক্সপ্যাক দেখা গেলো সেইটা ব্যাপার না।
দৃষ্টি নামিয়ে নিলে শাড়ির কোন ফাঁক দিয়ে একটু কোমর দেখা যাচ্ছে- সেইটা আপনার দেখারই কথা না! আপনি যে ফাঁক দিয়ে কোমর দেখার চেষ্টা করছেন, সেটাই আপনার অপরাধ। আপনি সেটা না করে আরেকজনকে জোর করবেন- এইটা কোন যৌক্তিক কথা না। নিজেকে প্রথম ধাপেই স্টপ করুন।
কারও প্রতি, আই রিপিট, কারও প্রতি আপনার জোর করার কোন অধিকার নাই! ন্যূনতম স্পর্শ করারও অধিকার নাই। যৌনকর্ম তো অনেক পরের ব্যাপার! সেটা অপরাধ। এমনকি ধর্মমতেও, সেটা সবচেয়ে বড় অপরাধ।
শুধু সেক্স নয়, নিজের মধ্যে অনেক রকমের ড্রাইভই জাগ্রত হবে। মানুষের সহজাত স্বভাবই সেটা। রাস্তায় অনেকগুলো টাকা পরে থাকতে দেখলে মনে হবে যে এই টাকাগুলো যদি আমার হতো! তাঁর মানে এইটা না যে আপনি সেই টাকা নিজে নিয়ে মেরে দিবেন। আপনার নৈতিক-ধর্মীয় শিক্ষা টাকাটা নিজে না নিতে উদ্বুদ্ধ করবে। আপনি টাকার মালিককে খুঁজে বের করবেন, অন্তত থানায় জমা দিবেন। প্রলুব্ধ হলেও আপনি ঘুষ খান না আপনার নৈতিক শিক্ষার কারণে। রোজার সময়ে অনেক খাবার ইচ্ছা হলেও আপনি নিজেকে কন্ট্রোল করেন। আপনি মদ খান না- নিজেকে কন্ট্রোল করেন।
অন্য সব ড্রাইভে আপনি নিজেকে কন্ট্রোল করছেন, কেবল সেক্স ড্রাইভে এসেই বিপরীত লিঙ্গকে দোষারোপ করা কেন? সেখানেও নিজেকে কন্ট্রোল করতে শিখুন। অন্যকে কোনভাবেই দোষ দেবার কোন সুযোগ নাই।
ভিক্টিম ব্লেমিংয়ে কখনোই এটা বলা যাবে না, "ধর্ষণের জন্য বিপরীত লিঙ্গের পর্দাহীনতা দায়ী!" বিপরীত লিঙ্গের পর্দাহীনতার জন্য বড়জোর নিজের সেক্স ড্রাইভ আসতে পারে। অতোটুকুই! (সেটাও আসলে নিজের দৃষ্টি সংযত করলে হবার কথা না।) কিন্তু এরপরের ধাপ কন্ট্রোল না করতে পারার জন্য সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তি নিজে দায়ী! অন্য কেউ দায়ী না! কোনভাবেই না।
মূল কথাটা আবারও বলি, "যেকোন কারণেই আপনার নিজের সেক্স ড্রাইভ জাগ্রত হওয়া আর সেই ড্রাইভ মেটাতে অন্যকে জোর করার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ!" আপনি কখনোই সেটা করতে পারেন না! এবং কখনোই ভিক্টিম ব্লেইমিং করা যাবে না!
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন