
অনেক কনটেন্ট রাইটারই বেসিক কিছু টিপস জানা না থাকার কারণে কিছু বোকাটে ভুল করে থাকে। তো তাদের জন্যই আমরা আজ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম।
আমাদের দেশে কনটেন্ট রাইটিং জবটি ধীরে ধীরে তুমুল জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বিশেষ করে, এই করোনা ক্রান্তিতে মানুষজন ঘরে বসে প্রচুর কনটেন্ট হজম করছে। এই কারণে কনটেন্ট রাইটার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের চাহিদাও ক্রমাগত বাড়ছে। প্রচুর কনটেন্ট রাইটার ফ্রিল্যান্সিং করে বেশ ভালো উপার্জন করছে। কিন্তু অনেক কনটেন্ট রাইটারই বেসিক কিছু টিপস জানা না থাকার কারণে কিছু বোকাটে ভুল করে থাকে। তো তাদের জন্যই আমরা আজ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম।
১. বাহুল্য ও লম্বা বাক্য বর্জন করুন: লেখার আগে ভালো করে তথ্য সংগ্রহ ও পড়াশোনা করুন, দরকার হলে তথ্য ক্রস চেক করুন। প্রবন্ধের শেষে দু লাইনের একটা নোট দিতে পারেন। লেখাটি কোথায় প্রকাশিত হয়েছে, কিংবা এখনও অপ্রকাশিত আছে কিনা, সে ব্যাপারে। কিংবা অন্যান্য সংক্ষিপ্ত আনুষাঙ্গিক তথ্য। এটা কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনার সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
২. কাউকে লেখার স্যাম্পল পাঠালে সেটা কখনই এডিটেবল ভার্সনে (যেমন- ডক ফাইল) পাঠাবেন না। পিডিএফ বানিয়ে তারপর পাঠাবেন।
পিডিএফের দুটো সুবিধা –
ক. কখনই ফন্ট এবং ফরম্যাটিং ভাংবে না।
খ. আপনার লেখা কেউ চুরিও করতে পারবে না। (পিডিএফে পাসওয়ার্ড দিয়ে লেখা কপি করার পদ্ধতি বন্ধ করে রাখা যায়।)
৩. ফরম্যাটিং এর দিকে লক্ষ্য রাখুন: যেমন: টাইটেল অবশ্যই বোল্ড করে দিবেন। আন্ডারলাইন করার দরকার নেই, বোল্ড করে ফন্ট সাইজ দু ঘর বাড়িয়ে দেয়াই যথেষ্ঠ! আর উদ্ধৃতিবাক্যে ইটালিক ব্যবহার করুন। যথাযথ প্যারাগ্রাফ ব্যবহার করুন। আপনার লেখা যেন পাঠকের কাছে একঘেঁয়ে না লাগে। লেখার পাঠযোগ্যতা (readability) যেন কোনভাবেই নষ্ট না হয়, সেদিকে বাড়তি নজর রাখুন।
৪. যথাযথ রেফারেন্স উল্লেখ করুন: আমাদের দেশে এ ধরনের চর্চা বেশ কম। এটা পেশাদার লেখকদের ক্ষেত্রে একেবারেই ঠিক নয়। লেখাতে কারো কোটেশন কিংবা গবেষণার উল্লেখ করলে – সে ধরনের লেখার ক্ষেত্রে সেই তথ্যসূত্র উল্লেখ করার চেষ্টা করুন।
৫. প্রবন্ধের শেষে মেটা ডেটা দিতে পারেন চাইলে: যেমন- প্রবন্ধটি লেখার তারিখ, আপনার নাম, শব্দসংখ্যা, কপিরাইট নোটিশ, আপনার ইমেইল বা মোবাইল নম্বর – ইত্যাদি। সেই সাথে কয়েকটা Tag/Key words ও লিখে দিন। লেখাতে ভালো ফন্ট ব্যবহার করুন। যেমন: বাংলার ক্ষেত্রে ’কালপুরুষ’ বা ’বাংলা’ বা সিয়াম রূপালি। ইংরেজীর ক্ষেত্রে আমার পছন্দ Calibri, আর Georgia.

৬. ফাইলের যথাযথ নাম দিন: এভাবে- Egiye_Cholo_Proloy_Tips for Content Writers. দেখুন, এই নাম দিয়েই কত কিছু বোঝা যাচ্ছে! কনটেন্ট ম্যানেজার ফাইলটি না খুলেই বুঝতে পারছে কে, কী ও কেন পাঠিয়েছে।
৭. পাইকারী লেখা পাঠানো পরিহার করুন: এক ধরনের লেখা সব জায়গায় পাঠাবেন না। কনটেন্ট টাইপ আপনার গ্রাহকের চাহিদানুযায়ী বদল করুন। যেমন: যার লাইফ স্টাইল ম্যাগাজিনের জন্য কনটেন্ট দরকার, তাকে নিশ্চয়ই আপনি রাজনৈতিক কিংবা খেলাধুলা সংক্রান্ত আর্টিকেল পাঠাবেন না?
৮. খেয়াল রাখুন: অনেকে জব সার্কুলার ভালো করে না পড়েই আবেদন করে বসেন। দেখা গেলো, চাওয়া হয়েছে বাংলা কনটেন্ট রাইটার। প্রার্থীরা সেটা খেয়ালই করলো না, তারা ইংরেজী কনটেন্ট রাইটার চাওয়া হয়েছে ভেবে ইংরেজী স্যাম্পল পাঠানো শুরু করলেন, তাহলে সেটা চাকুরীদাতাদের জন্য বিরক্তির কারণ হবে, এবং তারা ধরে নেবে আপনি একজন উদাসীন ও বেখেয়ালী মানুষ।
৯. প্লেজারিজম চেক করুন: লেখা প্রায় শতভাগ মৌলিক না হলে সেই লেখা গুগল সার্চ ইঞ্জিনই বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে পারে। ইংরেজী লেখার জন্য অনলাইনে অনেক ফ্রি প্লেজারিজম চেকার আছে। বাংলা লেখার ক্ষেত্রে গুগল সাচ ইঞ্জিন ব্যবহার করুন। লেখা ফাইনালি পাঠাবার আগে অন্তত একবার অবশ্যই পুরাপুরি মনোযোগ দিয়ে প্রুফ রিড করুন।
১০. প্রুফ রিডিং: গ্রামারের দিকে লক্ষ্য রাখা তো অবশ্য কর্তব্য। বানান এবং দাড়ি-কমার ব্যবহার ঠিকঠাকমতো করুন। বিশেষ করে বাংলা বানান ইংরেজীর চাইতেও জটিল ও কঠিন বিষয়। আধুনিক বানানরীতি অনুসরণ করুন। বাংলা লেখার ক্ষেত্রে গুরুচন্ডালি দোষ করবেন না। বানান ভুল করবেন না। অতিরিক্ত বানান ভুল প্রুফ রিডারের জন্যও বিরক্তিকর।
এই কয়টি টিপস অনুসরণ করতে পারলেই আপনার লেখায় মুটামুটি পেশাদারিত্বের ছোঁয়া থাকবে বলে আশা করা যায়। এছাড়াও অনলাইনে প্রচুর ব্লগ/আর্টিকেল আছে কী করে ভালো কনটেন্ট রাইটার হওয়া যায়, সে বিষয়ে। অবসরে সেগুলো খুজেঁ করে পড়াও খুব জরুরী।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন