অপ্রিয় হলেও সত্য কথা হলো, বাংলাদেশে যে কনডমের বিজ্ঞাপনগুলো তৈরী হচ্ছে, সেগুলো আসলে পশ্চিমাদের এবং কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় সফট অ্যাডাল্ট কমিক সবিতা ভাবীর হুবুহু নকল কনসেপশন। 

অপ্রিয় হলেও সত্য কথা হলো, বাংলাদেশে যে কনডমের বিজ্ঞাপনগুলো তৈরী হচ্ছে, সেগুলো আসলে পশ্চিমাদের এবং কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় সফট অ্যাডাল্ট কমিক সবিতা ভাবীর হুবুহু নকল কনসেপশন। একটা দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী গ্রামীন পরিবেশে অবস্থান করছে। এদেরকে সেনসেশন, সেক্স লাইফকে রোমাঞ্চকর করতে কনডমের ভুমিকা বোঝানোর থেকে, ফ্যামিলি প্ল্যানিং, মুলত যেটার জন্য কনডমের সৃষ্টি, সেটা যদি বোঝানো হতো, আখেরে আমার মনে হয় সেটাই কাজে দিতো! 

কনডম জাস্ট একটা ব্যারিয়ার মেথড, যেইটা একজন স্ত্রী পার্টনারকে প্রেগন্যান্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে। এখন কেনো প্রেগন্যান্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে, রক্ষা করলে লাভ কী, না করলে ক্ষতি কী, বার বার প্রেগন্যান্ট হওয়াতে কি কি স্বাস্থ্যঝুকি আছে - এইসব না জানিয়ে, বাসার পাইপের কাজ করতে আসা লোককে সিডিউস করে ঘরের কর্তা সেক্স করতে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছেন, আর পরে সেটাকে অবিতর্কিত করবার জন্য জুড়ে দিচ্ছেন, বিবাহীত জীবনকে করুন আরও রঙ্গীন, অর্থাৎ, তারা আসলে স্বামী-স্ত্রী, এসবে আসলে খুব কি লাভ হচ্ছে? ঐ মুষ্টিমেয় শিক্ষিত তরুন-তরুনীদের কিংবা আরেকটু ফ্যান্টাসাউজড বেশী বয়স্কদের আকৃষ্ট করাটাই কি কনডমের উদ্দেশ্য? 

রাস্তা ঘাটে আমার পরিচিতদেরকে অনেক সময় দেখি কনডম কথাটা বলতে দ্বিধাবোধ করে, কানে কানে বলে। আমি একটা ছোট্ট হাইপোথিসিসে বিশ্বাস করি। পেন্সিল দিয়ে লেখাও যায়, আঁকাও যায়, আবার চোখ গালিয়ে দেয়া যায়। কে কি করবে, এইটা সম্পুর্ণ নির্ভর করে, পেন্সিলটা কার হাতে আছে তার উপরে। কনডম শুধু মাত্র এক প্রকার ল্যাটেক্স (সহজ ভাষায় রাবার) এর তৈরী জড়বস্তু, এর প্রাণ নাই, এটি কথা বলতে পারে না, এটি দোষ করতে পারে না। এর নাম নেয়াতে লজ্জার কিছু নেই। আপনি যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখেন, তাহলে প্রি-ম্যারিটাল কিংবা এক্সট্রা ম্যারিটাল সেক্সকে আপনি দোষ দিতে পারেন, কিন্তু কনডম কাউকে কাছে টানে নাই, তারাই কনডমকে ব্যবহার করেছে। তাই কনডম উচ্চারণে ভয় বা লজ্জার কিছু নেই। 

কনডমের বিজ্ঞাপনে কেন শুধু যৌনতার সুড়সুড়িই থাকতে হবে?

ছয় বছর আগে কমিউনিটি মেডিসিন ক্লাসে ম্যাডাম খুব অসাধারণ একটি প্রশ্ন রেখেছিলেন আমাদের কাছে। প্রশ্নটি হলো, "ধরো, এই মুহুর্তে যদি তুমি তোমার কোন এক অবিবাহিত বান্ধবীর ব্যাগ এ দেখলে, ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল, তুমি কি তাকে অন্য চোখে দেখবে? তুমি কি তাকে অন্য রকমভাবে জাজ করতে শুরু করবে?"

অনেকের মধ্যেই দেখলাম হাসাহাসি শুরু হয়ে গেছে, কেউ কেউ লজ্জা পাওয়া শুরু করলো। তখনও আমি জানতাম না, হোয়াট ইজ দা এগজ্যাকট এন্সার লাইং বিহাইন্ড দিস কোয়েশ্চেন, কিন্তু আমার খুব সোজা সাপ্টা কনসেপশন হলো, তার লাইফ, সে অন্য কারও ক্ষতি না করে যা ইচ্ছে করতে পারে। ম্যাডাম পরে উত্তরটা দিলেন, খুবি আন-এক্সপেক্টেড এবং অসাধারণ ছিলো উত্তরটি!

উত্তরটি হলো, "না, তুমি তাকে অন্যভাবে জাজ করতে পারো না। কারণ, এমনও হতে পারে, তার শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দেখা দিয়েছে, তাই ডাক্তার তাকে এই ঔষধ দিয়েছে। ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল আসলে ইস্ট্রোজেন-প্রোজেস্টোজেন হরমোন এর একটি নির্দিষ্ট অনুপাত, আর কিছুই না। তার শরীরে এই হরমোন গুলোর ঘাটতির কারণে হয়তো তাকে এই ঔষধ দেয়া হয়েছে।"

অথচ, কতো সহজেই না আমরা কিছু একটা ভেবে বসে থাকতাম!

 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা