
বালির দেশ ঢেকে গিয়েছে বরফে। ভাবা যায়? বরফ পড়ুক বা আগুন লাগুক তাতে আমাদের কী? আমরাও তো অপেক্ষা করছি তুষারপাতের, তুলবো সেলফি।
‘২০১৫ সালে পৃথিবীর উষ্ণতম বছর হিসেবে অভিজ্ঞতা হয়েছিলো আমাদের। তুষারপাত খুঁজে পাওয়ার জন্য আমাদের প্রোডাকশন টিমকে দক্ষিণমেরু পর্যন্ত যেতে হয়েছিলো। জলবায়ু পরিবর্তন খুবই বাস্তব একটি ব্যাপার। এবং তা প্রতিনিয়তই হচ্ছে। পৃথিবী এবং মানব সম্প্রদায়ের জন্য এটাই এখন সবচেয়ে বড় হুমকি। এটা থামাতে আমাদের সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে, আলসেমি করা একদমই উচত হবে না। সেসব বিশ্বনেতাকে সমর্থন দিতে হবে, যারা পরিবেশ দূষণকারী ও দানব কর্পোরেটেদের পক্ষে নয় বরং মানবতার পক্ষে কথা বলেন।
যারা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, বিশ্বজুড়ে সেই আদিবাসীদের পক্ষে আমাদের কথা বলতে হবে, কোটি কোটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পক্ষে কথা বলতে। আমাদের সন্তানদের সন্তানের জন্য কথা বলতে হবে। লোভী রাজনীতির কারণে যাদের প্রতিবাদ ব্যর্থ হচ্ছে তাদের পক্ষে কথা বলতে হবে। এই বিশ্বকে আমরা গ্র্যান্টেড হিসেবে নিতে পারি না। যেমনটি এই রাতকে নিচ্ছি না।’
২০১৬ সালে অস্কার জিতে নেয়ার পর এভাবেই বক্তব্য দিয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত অভিনেতা লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও। কথাগুলো যে কতটুক যৌক্তিক এবং গুরুতবপূর্ণ সেটা আস্তে আস্তে টের পাচ্ছি আমরা।

২০২০ সালের শুরুতে এসেই, টানা কয়েকদিনের ভারী তুষারপাতে ঢেকে গিয়েছে সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসমূহ। রাতারাতি বালির মরুভূমি বদলে গেলো বরফে। তুষারের চাদরে ঢেকে গেলো মরুভূমি। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যাওয়ার কারণে তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতির। সৌদির আবহাওয়া অধিদপ্তর জারি করেছে সতর্কতা। তবে তুষারপাত কিছু এলাকায় হলেও পুরো সৌদি আরব এখন প্রচণ্ড শীতে কাঁপছে।
নভেম্বর-ডিসেম্বর সৌদি আরবের শীতের মৌসুম। মরুভূমির দেশে বালির জন্য দিন এবং রাতের তাপমাত্রার তারতম্য হয়েই থাকে। তবে হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা নেমে যাওয়া আসলেই বিরল ঘটনা। জলবায়ু পরির্তনের ফলে পরিবেশ যে কী পরিমান বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে তার আরেকটি উজ্জ্বল উদাহরণ এটি।
বালির দেশ ঢেকে গিয়েছে বরফে। ভাবা যায়? বরফ পড়ুক বা আগুন লাগুক তাতে আমাদের কী? আমরাও তো অপেক্ষা করছি তুষারপাতের, তুলবো সেলফি। একটু শীতে গোসল বন্ধ করে দেয়া মানুষগুলা তুষারপাত সেলিব্রেট করবে। কী কিউট!