চীন থেকে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট এসেছে বাংলাদেশে, প্যাকেজের ওপরে বাংলায় লেখা- "ভালোবাসার নৌকা পাহাড় বাইয়া চলে।"
চীন থেকে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট এসেছে বাংলাদেশে, প্যাকেজের ওপরে বাংলায় লেখা- "ভালোবাসার নৌকা পাহাড় বাইয়া চলে।" হ্যাঁ, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্যে মানুষে মানুষে ভালোবাসাটাই যে এখন সবচেয়ে বেশি দরকারী! সেই ভালোবাসাটাই বাংলাদেশের মানুষের জন্যে পাঠিয়েছে চীন। উহান যখন করোনার আক্রমণে শ্মশানে পরিণত হয়েছিল, তখন আমরা পাঠয়েছিলাম মাস্ক। সেই ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছে চীন, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট বহনকারী বিশেষ ফ্লাইটটি আজ বিকালেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে।
শুধু বাংলা নয়, বাক্সের ওপরে লেখা আছে চীনা হরফে একটি বাক্যও। চীনা ভাষায় যা লেখা হয়েছে, সেটার বাংলা করলে দাঁড়ায়- 'চলো, বিপদকে প্রতিহত করার জন্যে একসঙ্গে কাজ করি!' করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা শুধু চীনের নয়, শুধু বাংলাদেশের নয়, শুধু ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন বা আমেরিকারও নয়, লড়াইটা পুরো বিশ্বের। লড়তে হবে একসঙ্গে, হারিয়ে দিতে হবে ভাইরাসকে। সেই কথাটাই চীন মনে করিয়ে দিয়েছে।
চীনের কুনমিং শহর থেকে বিশেষ ফ্লাইটে কিট ও মেডিকেল সরঞ্জাম আসছে। মেডিকেল ইকুইপমেন্টের মধ্যে করোনা পরীক্ষার ১০ হাজার কিট এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ১০ হাজার পিস ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ও ১ হাজার থার্মোমিটার রয়েছে। বিশেষ এই ফ্লাইটটি বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ বিমানবন্দরে এসে পৌছানোর কথা রয়েছে।
চীন সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে চিকিৎসাসামগ্রী সহায়তা দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এসব সামগ্রী আসছে। এর আগে প্রথম দফায় চীন বাংলাদেশকে ২ হাজার কিট ও চিকিৎসাসামগ্রী দিয়েছিল। বিমানবন্দরে চীন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এসব সরঞ্জাম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগেও যখন ইতালিতে করোনায় আক্রান্তদের জন্যে মাস্ক এবং মেডিকেল ইকুইপমেন্ট পাঠিয়েছিল চীন, তখন সেসবের বাক্সের ওপরে তারা লিখে দিয়েছিল- 'দিনশেষে আমরা তো একই সাগরের ঢেউ!' উহানের আক্রান্তদের জন্যে সাহায্য পাঠিয়েছিল জাপান, সেগুলোর প্যাকেটের গায়ে লেখা ছিল- 'সাগর আর পাহাড়ের দিক থেকে আমরা আলাদা হতে পারি, কিন্ত একই সূর্য, চন্দ্র আর আকাশের নীচেই তো আমাদের বসবাস!'
এবার একটা মজার কথা মনে করিয়ে দেই। চীনে যখন করোনাভাইরাস আক্রমণ করলো, তখন আমরা বললাম, এটা আল্লাহ'র গজব, ধ্বংস হয়ে যাক ওরা! অথচ বাংলাদেশ আক্রান্ত হবার পরে সবার আগে চীনই আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, সনাক্তকারী কিট পাঠাচ্ছে, মহামারী ঠেকাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের আশ্বাসও দিয়েছে বারবার। জ্বী, এটাই আমাদের আর ওদের মধ্যে পার্থক্য...