এখন ভিনদেশীরা বলায় যদি নীতিনির্ধারকদের ঘুম ভাঙে!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
চীন থেকে আগত বিশেষজ্ঞ দল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের সাথে মত বিনিময় করেছেন। তাদের সাথে সরাসরি কথা বলা দুজন ডাক্তারের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ করা হল।
লকডাউন মহামারি মোকাবেলায় সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। একই সাথে ট্রেস, টেস্ট এন্ড ট্রিট। অৰ্থাৎ যত দ্রুত সম্ভব টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে কোভিড-১৯ রোগিকে আইসোলেট করে চিকিৎসা দেয়া এবং কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করে লকডাউন করা এলাকার সব সন্দেহভাজন রোগি চিহ্নিত করে কোয়ারাইন্টাইন করা।
চীনের তৈরি এন্টিবডি টেস্ট নির্ভর rapid test ৯০% সেন্সিটিভ ও স্পেসিফিক। এন্টিজেন নির্ভর rapid test পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তারপরও কয়েকটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র ছাড়া তারা এন্টিবডি টেস্ট ব্যবহার করছে না। শুধুমাত্র কোন নির্দিষ্ট এলাকার রোগের প্রাদূর্ভাব সম্পর্কে ধারণা পেতে, রোগীর লক্ষণ আছে কিন্তু পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ এবং কোনভালেসেন্ট প্লাজমা থেরাপি দেয়ার ক্ষেত্রে তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে।
চীনের হাসপাতালগুলোতে ট্রায়াজ করে রোগীকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনের মাধ্যমে আলাদা করে কোভিড এবং নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। লক্ষণ তীব্র না হলে রোগীকে বাসায় আইসোলেশনে রেখে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়। প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয় শুধুমাত্র তীব্র লক্ষণযুক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে তারা সিম্পটোম্যাটিক বা লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কোন এন্টি ভাইরাল ড্রাগ বা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় না। রোগীদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন খাবার বা ফুড সাপ্লিমেন্ট খেতে পরামর্শ দেয়া হয়। রোগীদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাদের দেশের উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন এখন তৃতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালে আছে।
তাদের দেশে ডাক্তারসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার খুবই কম। ইনফেকশন প্রিভেনশন এন্ড কন্ট্রোলে তারা আমাদের থেকে বহুগুণ এগিয়ে। তাদের যথেষ্ট পরিমাণ পিপিই মজুদ আছে এবং সরবারহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তারা সঠিক নিয়মে পিপিই পড়া ও খোলার ব্যাপারে খুবই সতর্ক। যে পরিবেশে ঠিক যে রকম পিপিই প্রয়োজন (মাস্ক, গ্লোভস, কভারওল ইত্যাদি) তারা সেটিই ব্যবহার করে।
উপরের কথাগুলো আসলে নতুন কিছু না। আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞরাও গত কয়েক মাস যাবত একই কথা বারবার বলে আসছেন। এখন ভিনদেশীরা বলায় যদি নীতিনির্ধারকদের ঘুম ভাঙে, তাতেও আমরা খুশি। যেভাবেই হোক ঘুম ভাঙুক।
সংক্রমণের উর্ধগতির মধ্যে লকডাউন শিথিল করার মতো ভুলগুলো যাতে পরবর্তীতে আর না করি। পথের শেষ পর্যন্ত যেতে না পারি। কোনটা সঠিক পথ, সেটা অন্তত জানার চেষ্টা করি। মহামারিকে মোকাবেলা করতে সবার আগে বিজ্ঞান লাগবে। তারপর নেতৃত্ব, আবেগ, সাহস, সহমত, ইত্যাদি।
আরো পড়ুন-