যাদের ধারণাই নাই ছোঁয়াচে রোগ কি, যাদের বিবেচনাতেই নেই মানুষের জীবন রক্ষা, এদের "আলেম" ডাকবো কোন লজিকে? আজকে একটি মসজিদের জামাতে উপস্থিত একজন করোনা রোগীর থেকে যদি লাখো মানুষের মধ্যে রোগটি সংক্রমিত হয়, এর দায়ভার এরা নিবে?

নবীজির (সঃ) জীবনীর একটি ঘটনা বলি। একবার এক যুদ্ধে এক সাহাবী মাথায় আঘাত পেলেন। তাঁর মাথায় পট্টি বাঁধা হলো। সেই রাতেই ঘুমের মধ্যে তাঁর স্বপ্নদোষ হলো। সকালে ফজরের নামাজে দাঁড়ানোর আগে তিনি চিন্তায় পড়লেন, তাঁর কী গোসল করা উচিৎ হবে কিনা। পানি লাগলে যে তাঁর ক্ষতস্থানের ক্ষতি হবে এই ব্যাপারে তাঁর সন্দেহ নাই। এদিকে নামাজ বাদ দিবেন নাকি? একজন মুসলিমের পক্ষে সেটি সম্ভব? তাঁর সাথে যিনি ছিলেন, তিনি বললেন, অবশ্যই তোমাকে গোসল করতে হবে। কারন আমি নিজে শুনেছি আল্লাহর রাসূলকে বলতে যে জানাবা অবস্থায় নামাজ আদায় করা যায় না, ফরজ গোসল করতে হয়! সরল মনা সাহাবীটি বিসমিল্লাহ বলে গোসল করলেন। ক্ষতস্থানে পানি লাগলো। ঘা হয়ে গেল, এবং এই ক্ষতের কারনেই তিনি মারা গেলেন।

মদিনায় যখন এই সংবাদ পৌছালো, রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রচন্ড মর্মাহত হলেন। তিনি বললেন, "ওরা তাঁকে হত্যা করেছে! ওরা যখন কিছু না জানে, তখন কেন যারা জানে তাঁদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে না!?" মূল কথা হলো, এই ধরনের পরিস্থিতিতে তায়াম্মুম করতে হয়। ইসলামী শরীয়ায় মানুষের প্রাণের মূল্য সর্বোচ্চ।

হাদীসটি সহীহ। এই মুহূর্তে রেফারেন্স নম্বর মনে পড়ছে না। আবু দাউদ অথবা বুখারী (মুসলিমও হতে পারে) কোথাও আছে নিশ্চিত। কেন এই হাদীসটি বললাম, সেটি পরে বলছি, আপাতত সুনান আবু দাউদের আরেকটি হাদিস (হাদিস নং: ৩৩৪) বর্ণনা করি।

আমর ইবনে আল আসের (রাঃ) বর্ণনায়, ধাত আস-সালাসিলের যুদ্ধের রাতে তাঁর স্বপ্নদোষ হয়। সকালে প্রচন্ড ঠান্ডায় তিনি গোসল না করে কেবল তায়াম্মুম করেই নামাজে ইমামতি করে ফেলেন। সেই সময়ে বা ইসলামের এখনও নিয়ম হচ্ছে যুদ্ধের জেনারেল তাঁর জামাতের ইমামতি করবেন, যেমনটা খলিফা ইমামতি করবেন তাঁর এলাকার নামাজের।

তা নতুন মুসলিম হওয়া আমরের উপর এমনিতেই সাহাবীগণ খানিকটা বিরক্ত ছিলেন। এই ঘটনা জানার পরেতো সবাই হায় হায় করে উঠলেন। মদিনায় ফিরে এসে লম্বা নালিশের তালিকায় এই ঘটনাটি মোটা দাগে কালী করে অভিযোগ করা হয়। ন্যায় বিচারের প্রতীক রাসূলুল্লাহ (সঃ) আমরকে ডেকে পাঠান। অভিযোগ শোনান, এবং বলেন, "আমর, তুমি অপবিত্র দেহে তোমার সহচরদের ইমামতি করেছো?" আমর "দোষ" স্বীকার করেন, সেই দিনের প্রচন্ড ঠান্ডার কথা উল্লেখ করে বলেন, "ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আল্লাহকে বলতে শুনেছি, "নিজেদের হত্যা করোনা, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদের প্রতি করুনাময়।" এই কথা শুনে রাসূলুল্লাহ হেসে দিলেন। কিছু বললেন না।

এই হাদিসেরও মূল বক্তব্য একই। মানুষের জীবনের মূল্য শরীয়ায় সর্বোচ্চ। সফরে নামাজ ছোট করে আদায়ের ব্যবস্থা, তায়াম্মুমের ব্যবস্থা, অক্ষম হলে বসে বা শুয়ে শুয়েই নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ইত্যাদি আরও হাজারো নিয়ম এসেছে কেবলমাত্র জীবনকে সহজ করতেই। তেমনি, হুদায়বিয়ায় অবস্থানকালে, প্রচন্ড বৃষ্টিতে যখন মাটি কাদা কাদা হয়ে গিয়েছিল, তখন রাসূলের (সঃ) উপস্থিতিতেই আজানের বাক্য পাল্টে "নামাজের জন্য এসোর" পরিবর্তে বলা হয় "নিজের তাঁবুতে নামাজ পড়ো।" এখনও দুর্যোগকালে মুসলিমরা এই হাদীসটি মেনে চলে। কুয়েতের গৃহবন্দী শহরে মসজিদ থেকে ভেসে আসা আজানের ধ্বনিতে এই নির্দেশনামার ভিডিও অনেকেই নিশ্চই দেখেছেন। এখনও বিশ্বের মোটামুটি সব অঞ্চলে, যেখানে মসজিদ সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে, সব জায়গায় আজানে "হাইয়া আলাস সালাহ"র বদলে এই শব্দগুলোই উচ্চারণ করা হচ্ছে।

এত লম্বা কথা বলার পেছনে কারন একটাই, বাংলাদেশে কিছু মাওয়ালানা নিজেদের জেদ ধরে বসে আছে মসজিদে জামাতের ব্যাপারে। যেখানে ইসলামের আঁতুরঘর, পবিত্র কাবা শরীফ এবং মসজিদে নববীর দেশ সৌদি আরবের সব মসজিদে জামাত বন্ধ হয়ে গেছে, সেখানে এনারা এখনও ফাজলামি করে যাচ্ছে। কতটা বাধ্য হলে মসজিদে হারামাইন কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেন, সেটা বিবেচনাতেই নিতে রাজি নন ইনারা। এই যে একটি দেশে তাবলীগ জামাতের আয়োজনে মাত্র একজন মানুষের থেকে গোটা দেশে ছড়িয়ে গেল ভাইরাস, এবং লোক মারা যাচ্ছেন, এইসব জানার পরেও আমাদের এক মোল্লা ভাষণ দেয়, "সৌদি আরবের মসজিদে নামাজ বন্ধ হবে, আমাদের দেখার সময় নাই। কুয়েতের মসজিদে নামাজ বন্ধ হবে, আমাদের দেখার সময় নাই। আল্লাহর কসম! বাংলাদেশের কোন মসজিদে নামাজ বন্ধ হতে পারবে না! নামাজ বন্ধ হতে পারবে না! নামাজ বন্ধ হতে পারবে না!!!"

সাথে সাথে মুরিদের দল একসাথে বলে উঠলো, "দুনিয়ার মুসলিম এক হও! এক হও!" মোল্লা বলে চললেন, "কোন জালেম শাহী যদি আমাদের করোনার দোহাই দিয়ে বলে, মসজিদে নামাজ পড়তে যাবেনা, আমরা তাদের কথা মানবো না, মানবো না, মানবো না!" এরাই আমাদের ধর্মগুরু বনে বসে আছে!

একজন আলেম কখনই মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবে না। হজরত উমার (রাঃ) জিহাদে মুসলিম সেনাবাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির জন্য সৈন্য সামন্ত নিয়ে সিরিয়ার দিকে যাচ্ছিলেন, যখন খবর আসে সেখানে ইতিমধ্যেই ব্যাপকহারে মহামারী ছড়িয়ে গেছে। তিনি তাঁর সাথের অন্যান্য সাহাবীদের প্রাণ সংশয়ে ফেলতে চাননি। প্রয়াত রাসূলের (সঃ) নির্দেশনা অনুসারেই তিনি মদিনায় ফিরে গিয়েছিলেন। হাদীসটি নিশ্চই সবাই শুনেছেন, তাই আর রিপিট করলাম না।

একজন ইমামের দায়িত্ব হচ্ছে নিজের এলাকার মানুষের নেতৃত্ব প্রদান। তাঁদের ভাল মন্দ ইত্যাদি বিবেচনা করে ইসলামিক শরিয়া মতে নির্দেশনা দিবেন। ইসলামিক শরিয়াই বলেছে রোগের সময়ে সবার আগে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে, সাথে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

কিন্তু এরাতো সুইসাইডাল কথাবার্তা বলছে। যাদের ধারণাই নাই ছোঁয়াচে রোগ কি, যাদের বিবেচনাতেই নেই মানুষের জীবন রক্ষা, এদের "আলেম" ডাকবো কোন লজিকে? আজকে একটি মসজিদের জামাতে উপস্থিত একজন করোনা রোগীর থেকে যদি লাখো মানুষের মধ্যে রোগটি সংক্রমিত হয়, এর দায়ভার এরা নিবে? একটা মানুষেরও যদি জীবন যায়, এরা কি বলবে তখন? সবার উপরে যে হাদিসটা বর্ণনা করলাম, একজন মুর্খামির কারনে একজন সাহাবীর প্রাণ গিয়েছিল, এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, "ওরা ওকে কতল করেছে!" সেই হাদীসটির শিক্ষাইতো এই যে এইধরণের কঠিন পরিস্থিতিতে, যেখানে মানুষের জীবন মরনের প্রশ্ন জড়িত, সেখানে কোন বিষয়ে আমার জ্ঞান না থাকলে, আমি যেন বিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ করি।

কিন্তু এনারা সেটা করবেন কেন? এনারা প্রকাশ্যে ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে "কোন মুসলমানকে করোনা ভাইরাস আক্রমন করবে না।"

উমারের (রাঃ) হাদিসে বর্ণিত সেই একই মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছিলেন আবু উবায়দা ইবনে আল জাররা (জীবিতকালে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০জন সাহাবীর একজন), মুয়াদ ইবনে জাবাল (যাকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) আলাদা করে বলেছিলেন তাঁকে তিনি কতটা ভালবাসেন) সহ প্রমুখ সাহাবী। এইসব মোল্লারা যখন চিৎকার করে এইধরণের ভিত্তিহীন কথা বলে, এদের বুক কাঁপে না? এইসব হাদিস, সাহাবীদের জীবনী এরা জানবে না, সেটাতো হবার নয়। তাহলে কোন সাহসে ওরা বলে যে মুনাফেক, এবং কাফের কুফাররাই মরে সাফ হবে, মুসলমানদের ঈমানী জোরের কারনে কিছুই হবেনা। কোন সাহসে এরা বলে করোনা ভাইরাস ইন্টারভিউ দিয়ে বলেছে যেহেতু বাংলাদেশে বেশি বেশি করে ওয়াজ হয়, ইসলাম নিয়ে আলোচনা হয়, তাই এই দেশে করোনা প্রবেশ করবে না। যেখানে মক্কাশরীফ পর্যন্ত সতর্ক হয়ে আছে। এরা বুঝাতে চায়, মক্কা, যাকে আল্লাহ বলেছেন পবিত্র ভূমি, এবং মদিনা, যাকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) ঘোষণা করেছেন (আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে) পবিত্র ভূমি, সেসব স্থান থেকে বাংলার ওয়াজ মাহফিলগুলো বেশি পবিত্র? ধৃষ্ঠতা কোন পর্যায়ে গেলে পরে এইরকম কথা বলে মানুষ!

শুধু মোল্লাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। সরকারি কর্মচারীগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। যে যত উপরে আছে, তার মাথা তত নষ্ট। সিভিল সার্জন নিজের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করলেন। ২০-৩০ জন অতিথি এলেও, এইসব ক্ষেত্রে দুই তিনজনের সমাগমও ভয়ংকর, একজন সিভিল সার্জনের এই সাধারণ জ্ঞান অবশ্যই থাকার কথা।

চট্টগ্রামের মেয়র পোস্টার ছাপিয়ে জুম্মার নামাজ শেষে গণ মোনাজাতের দাওয়াত দিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রী সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলে শিশু হাসপাতালে দলবল নিয়ে ডায়াবেটিক সেন্টার উদ্বোধন করতে গেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান ভারত থেকে এসেই পরেরদিন কোন এক সমাবেশে চলে গেছেন। ইসি বলেছে নির্বাচন হবে। নির্বাচনে লোকজন হাত ধুয়ে ভোট দিবে, যাবার পরে হাত ধুয়ে ফেলবে। হয় লোকটা বুঝেই নাই ভাইরাসটা কতটা সংক্রামক, অথবা আমরাই গাধা, আমরাই বুঝিনাই যে গায়েবি পদ্ধতিতেই ভোট দেয়া হয়ে যাবে যেমনটা গত কয়েকটা নির্বাচনে হয়েছে।

আর জাতির পিতার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যে আয়োজন করলো সরকার, সেটার কথা বাদই দিলাম। শুনেছি চারশো কোটি টাকা কেবল আতশবাজিতেই পোড়ানো হয়েছে। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধা ডাক্তারদের জন্য কোন পোশাক, গ্লাভস, মাস্ক ইত্যাদি সরবরাহ করা হচ্ছে? শুনছি কেবল একটি প্রতিষ্ঠান করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করছে, বাকি হাসপাতালগুলো জ্বরের রোগীকেও ভর্তি করছে না, সবাইকে সেই হাসপাতালের দিকে ফরোয়ার্ড করছে। এবং সেখানে যাবার পরে বলছে হটলাইনে কল করে রোগী নিয়ে আসতে। হটলাইনে কল করে পাওয়া যায় না। রোগী হয় আপনাতেই সুস্থ হচ্ছে, নাহয় বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। এই চরম অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী কে? আড়াইটা মাস সময় ছিল, কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? জানোনা তোমার দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা দুর্বল? কিছুই নাই, তারপরেও এই বাজি ধরার কি মানে ছিল?

আর জনতার কথা বাদই দিলাম। এমন বদমাইশ, মূর্খ পাবলিক খুব দেশে খুঁজলে পাওয়া যাবে। বলা হচ্ছে তোর নিজের জন্য না হলেও, নিজের বয়স্ক আত্মীয় স্বজনের জন্য হলেও ঘরে থাক। কিন্তু না, আড্ডায় যেতেই হবে। দাওয়াতে যেতেই হবে। ভ্যাকেশন করতে চলে যাচ্ছে পরিবার পরিজন নিয়ে। সেদিন পড়লাম ঢাকা বরিশাল রুটে প্রতিদিন লাখ খানেক মানুষ লঞ্চে যাতায়াত করেন। গাদাগাদি ভিড় থাকে সেখানে। একটা করোনা রোগী সেখানে থাকলে ভাইরাস ছড়াতে ছড়াতে নিজেরা শেষ হয়ে যাবে, তবু মানুষের অভাব হবেনা। ট্রেন, বাস ইত্যাদির কথা বাদই দিলাম।

সরকার জরুরি পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে, তবে এত দেরিতে নিচ্ছে যে এর মধ্যেই যা ক্ষতি হবার হয়ে যাচ্ছে। আপনি যখন জানেনই, দেখছেনই ইতালিতে এখন দিনে ছয়শোর বেশি মানুষ মরছে, তাহলে কেন আগে থেকেই এমন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না যাতে পরিস্থিতি ইতালির অবস্থানে যা পৌঁছায়। শুরুতেই মিলিটারি নামিয়ে কারফিউর মতন কঠোর হন। শুরুতেই বাজারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখুন। সিন্ডিকেট বড়, নাকি সরকার? মিলিটারির ডান্ডা দিয়ে এইসব সিন্ডিকেটের কোমর ভাঙা যায় না? লক ডাউনে গরিব মানুষ খেতে পারবে না? ইন্ডিয়াতে মমতা ব্যানার্জি না করেছেন, তেমন করুন। ফ্রী রেশনের ব্যবস্থা করুন। ত্রাণ বিতরণ করুন। চারশো কোটি টাকা আতশবাজিতে পোড়াতে পারলে নিশ্চই মানুষের জীবন বাঁচাতে হাজার কোটি খরচ করাই যায়। মানুষ আগে বেঁচে থাকুক, খাওয়া নিয়ে পরে ভাবা যাবে।

আমরা যারা আমেরিকা বা বিদেশে থাকি, লোকে ভাবে তাঁরা না জানি কতটা বড়লোক। তাই কথায় কথায় লক-ডাউন করতে বলছি। ভাইয়েরা ও বোনেরা, লকডাউনের ফলে আমাদের অনেকেরই চাকরি চলে গেছে, আমাদেরও হয়তো চলে যাবে। বাড়ির পেমেন্ট দিতে না পারলে ব্যাংক বাড়ি নিয়ে নিবে, গাড়ি নিয়ে নিবে। পথে নেমে যাবে অনেকেই। রিসেশনের আতংকের স্মৃতি এখনও অনেকের মনে গেঁথে আছে। গ্রেট ডিপ্রেশনের ব্যাপারে আমাদের কলেজে পড়ানো হয়, যখন বড় বড় কোম্পানির সিইওরা রাস্তায় আপেল বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। হয়তো এইবারও ইকোনোমি সেদিকেই যাবে। তারপরেও আমরা বলছি, হ্যা, শহর লক ডাউন করা হোক। সবাই বাড়িতে বন্দি থাকুক। কারন, এই মুহূর্তে এইটাই একমাত্র সমাধান। নতুনভাবে কেউ যদি আক্রান্ত না হয়, তাহলে যারা ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সারিয়ে তোলা যাবে, এবং ভাইরাস চিরতরে বিদায় হবে। অতি সহজ এই কাজটাই কেউ করতে চাইছে না। ঘরে বসে, টিভি দেখে, বৌ বাচ্চার সাথে হেসে খেলে অন্য মানুষের জীবন বাঁচানোর সুযোগ এই জীবনে কে আর কবে পেয়েছে?

তারপরেও পশ্চাৎদেশে কুড়কুড়ানি উঠে, বাইরে বেরুতেই হবে। অদ্ভুত! সত্যিই অদ্ভুত আমাদের চরিত্র!

লেখাটি 'ক্যানভাস' ফেসবুক গ্রুপে প্রকাশিত। 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা