জেন ফ্রেজার: ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংকের ইতিহাস নতুন করে লিখতে চলেছেন যে নারী!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
কট্টরভাবে পুরুষশাসিত আমেরিকায় যা হয়নি এতদিনে, সেটাই হবে এবার। ওয়াল স্ট্রিটের লিডিং কোনো ব্যাংকের সিইও হিসেবে আসবেন একজন নারী!
বিশ্বায়নের এই যুগে লিঙ্গবৈষম্য এখন খুব একটা প্রকট কনসেপ্ট না হলেও, একেবারেই যে বৈষম্য নেই, তাও জোর দিয়ে বলা যাবে না। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে নারীকে বসানোর ক্ষেত্রে এখনো অনেকরকম দোনোমোনো, নানারকম ভাবনাচিন্তা চলে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে উচ্চপদ দেয়া, নারীর অধীনে কাজ করা... এই বিষয়গুলো অনেকে নিতে চান না। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ওয়াল স্ট্রিট এর কথা।
ওয়াল স্ট্রিট এর শীর্ষস্থানীয় ব্যাঙ্কগুলোর শীর্ষপদে এখনো আসেননি কোনো মহিলা। অবশ্য শীর্ষপদে নারী আসার এ গেরো কাটতে যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই। বিশ্বের প্রথম নারী হিসেবে ওয়াল স্ট্রিট সিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ব্রাইটন জেন ফ্রেজার। তিনি বর্তমানে সিটি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও রিটেইল ব্যাংকিং প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান সিইও মাইকেল করব্যাট অবসর নেবেন কিছুদিন পর। তিনি অবসরে গেলেই আসবেন ব্রাইটন, সিইও হয়ে।
তবে তিনি বেশ যোগ্য প্রার্থী হয়েই এই পদে আসছেন। সিটি ব্যাঙ্কের বেশ কিছু সংকটের সময়ে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সংকট কাটিয়েছিলেন। সিটি ব্যাংকের মেক্সিকো শাখায় আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে ব্যাংকটি বেশ বিপদে পড়ে যায়, তখন ব্রাইটন জেন ফ্রেজার বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
স্কটল্যান্ডে জন্ম নেয়া ব্রাইটন পড়াশোনা করেছেন হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর প্রথম কর্মস্থল।ছিলো 'গোল্ডম্যান স্যাকস'। এরপরেই তিনি সিটি ব্যাঙ্কে আসেন এবং টানা ষোল বছর এখানেই কাজ করেন। এই ষোলো বছরে তিনি উনিশটি দেশে সিটি ব্যাংকের মনিটরিং এর দায়িত্বে ছিলেন। ব্যাংকের ল্যাটিন আমেরিকা ডিভিশনেও নেতৃত্বও দিয়েছিলেন।
এভাবেই ক্রমশ নিজের অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সিইও হয়ে গেলেই আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতন ওয়াল স্ট্রিট ব্যাংকের শীর্ষপদে দেখা যাবে কোনো নারীকে। গত বছরেই যেমন প্রথম নারী হিসেবে যুক্তরাজ্যের একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী হয়েছিলেন অ্যালিসন রোজ। তার এক বছর পরেই আমেরিকায়ও হতে যাচ্ছে একই ঘটনা।
ব্রাইটন জেন ফ্রেজার বিশ্বাস করেন, সীমাবদ্ধতা থাকবেই, কিন্তু সেগুলো নিয়ে কোনো নেতাই বসে থাকবেন না। নেতাকে নেতৃত্ব দিতে হবে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে এবং মাথায় রাখতে হবে-
You cannot have it all.
ব্যক্তিজীবনে দুই সন্তানের মা তিনি। প্রথমদিকে ছিলেন লন্ডনে। সেখান থেকে কাজের সম্ভাবনা বেশি দেখে চলে আসেন আমেরিকাতে। সেটার সুফল তিনি খুব শীঘ্রই পাবেন। এটা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন-
হুট করে অনেক কিছু চেঞ্জ হয় অনেক সময়ে এসে। এও সেরকম। যেরকম ভাবিনি, সেরকমটাই হচ্ছে। এটাই জীবনের অনিশ্চয়তা।
ব্রাইটনের জীবন থেকে এটাই বোঝার- কাজের দক্ষতা থাকলে, কাজ করার ইচ্ছে থাকলে এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তা থাকলে জীবনে অর্জন করা যায় সবই। সেজন্যে পুরুষই হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। দক্ষ মানুষ হতে হবে, এটাই আসল কথা।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন