অ্যান্টন শিগার: চলচ্চিত্র ইতিহাসের সবচেয়ে বাস্তববাদী সাইকোপ্যাথ চরিত্র!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

১৯১৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এই ৯৫ বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত ৪০০টি সিনেমা থেকে ১২৬টি চরিত্রকে নিয়ে গবেষণা করেছিলেন সাইকিয়াট্রিস্টরা। সেই গবেষণা থেকেই অ্যান্টন শিগার চরিত্রটিকে বেছে নেয়া হয়েছে সবচেয়ে বাস্তববাদী সাইকোপ্যাথ হিসেবে...
অ্যান্টন শিগার। চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ভিলেনকে বেছে নেয়া হয়েছে সর্বাধিক বাস্তববাদী সাইকোপ্যাথ হিসেবে। ১৯১৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এই ৯৫ বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত ৪০০টি সিনেমা থেকে ১২৬টি চরিত্রকে নিয়ে গবেষণা করেছিলেন সাইকিয়াট্রিস্টরা। সেখান থেকেই বিজয়ী হয়েছেন হ্যাভিয়ার বার্দেম অভিনীত অ্যান্টন শিগার। করম্যাক ম্যাকার্থির অনবদ্য উপন্যাস 'নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন' নিয়ে একই নামে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন কোয়েন ব্রাদার্স।
বেলজিয়ান সাইকিয়াট্রি প্রফেসর স্যামুয়েল লিস্টেড চেস্টা করেছিলেন সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে বাস্তববাদী সাইকিয়াট্রিস্টকে খুঁজে বের করতে। তিনি আরও ১০জন প্রফেসরের সাহায্য নিয়েছিলেন। এই গবেষণা থেকেই জানানো হয় নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন সিনেমার অ্যান্টন শিগার হচ্ছেন সবচেয়ে বাস্তববাদী সাইকোপ্যাথ চরিত্র।
চরিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য হ্যভিয়ার বার্দেম একাধারে গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা, স্ক্রিন গিল্ডসহ অস্কারও জিতেছিলেন। কোয়েন ব্রাদার্সের এক অনবদ্য সৃষ্টি এই নো কান্ট্রি ফর ওল্ড মেন। সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালনা, সেরা এডাপ্টেড চিত্রনাট্য, পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনয়: এই চারটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জয় করেছিলো সিনেমাটি।

গবেষণায় ক্ল্যসিক সাইকোপ্যাথ হিসেবে উল্লেখ করা হয় অ্যান্টন শিগার চরিত্রটিকে, বেশ কিছু ঠান্ডা মাথার সিরিয়াল কিলারদের সাথে সরাসরি মিল পাওয়া গিয়েছে তার সাথে। খুন করার পর কোনও রকম প্রতিক্রিয়া থাকে না এ ধরণের সাইকোপ্যাথদের মধ্যে। সাধারণ অপরাধীরা অপরাধ করার পর, অনুশোচনা কিংবা ডিপ্রেশনে ভুগে থাকেন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ট্রমা কম বেশি সবার মধ্যেই লক্ষ্য করা যায়। এমনকি যুদ্ধফেরত সৈনিকেরাও এই ট্রমার মধ্যে দিয়ে বেশি যান। পিটিএসডি- পোষ্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার। এই হচ্ছে সেই ট্রমার নাম।
মনোমুগ্ধকর ও ধ্বংসাত্মক ব্যক্তিত্ব, আত্মবিশ্বাস, ধূর্ততা, মিথ্যাবাদী, নিয়ম ভাঙার মনোভাব, অনুশোচনার অভাব, বদমেজাজী হওয়া। এসবই হচ্ছে সাইকোপ্যাথের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ। আমরা সাধারণত একটা মশা মারলেও তার প্রতিক্রিয়া দেখাই। অ্যান্টন শিগার এর মত সাইকোপ্যাথেরা মানুষ মেরে এসেও নাক ডেকে ঘুমাতে পারবে। তাদের মধ্যে আবেগ কিংবা বিবেক কোনটাই কাজ করে না।
এই ঠান্ডা মাথার খুনিদের মধ্যে যে ব্যাপারটি বেশি লক্ষণীয় সেটি হচ্ছে, এরা খুব সাধারণ মানুষের মতই আচরণ করে থাকে। আপনার আশে পাশেই ঘুরে বেড়াবে, অথচ তাকে দেখে মনেও হবে না যে এই মানুষটাই একটি ঠান্ডা মাথার খুনী হতে পারে। এই সাধারণ মুখোশের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে ভয়ঙ্কর এক সত্ত্বা। এই ধরণের চরিত্রসমূহ একাধিক স্তর থাকে। তাই অভিনয় করার সুযোগটাও বেশি পাওয়া যায়। ঠিক এ কারণেই ব্যাটমানেরা না পেয়ে জোকারেরা অস্কার পায়।