পুরো বাংলাদেশকে চিড়িয়াখানা ঘোষণা দেওয়া যায় না?
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
![](https://media.egiyecholo.com/contents/posts/images/2020/4/20/LL52pDdx4RPXIraFzumuiBnzCFmxowhX0DdnuD0v.jpeg)
যে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিদিন তোড়া-বোড়া পাহাড়ের গুহা থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিচ্ছেন- করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই। ৮০ ভাগ মানুষ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়; সেই দেশের মানুষ বিচিত্র কার্যক্রম করবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক হুজুরের জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতি হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন। এদিকে গোপালগঞ্জে দুই গ্রামের বাসিন্দারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মারামারি করে একজনকে হত্যা করেছে।
আজ আবার জানতে পারলাম মাদারীপুরের দুই লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর সুস্থ হয়ে সেখানে ফিরে গিয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। এরপর ৫ জন আবার আক্রান্ত হয়েছে। ওই দিকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করে মালিকরা এক রকম ইচ্ছে করেই শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়েছে। শুনলাম তারা নাকি রাস্তায় জড় হয়ে বিক্ষোভ করছে বেতনের দাবিতে! এদিকে বরগুনায় এক আওয়ামীলীগের নেতার জানাজায় হাজারো মানুষের সমাগম হয়েছে। পরে জানা গেছে- ভদ্রলোক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে!
ঠিকই তো আছে! যে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রতিদিন তোড়া-বোড়া পাহাড়ের গুহা থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিচ্ছেন- করোনা ভাইরাস নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই। ৮০ ভাগ মানুষ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়; সেই দেশের মানুষ মনের আনন্দে কেউ ঘুরে বেড়াবে; কেউ জানাজায় যাবে; কেউ দুই দলে বিভক্ত হয়ে মারামারি করবে; কেউ আবার সুস্থ হয়ে ফিরে গিয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে আবার করোনায় আক্রান্ত হবে; এটাই স্বাভাবিক। এতে অবাক হবার কিছু নেই।
![](https://media.egiyecholo.com/contents/posts/images/2020/4/20/pY00pQ81VEhpwTJ0oo9TMrmXfiAplea8ehfsofMn.jpeg)
অথচ আয়ারল্যান্ড নামক ছোট্ট দেশটার প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন টেলিভিশনে এসে বলছেন- করোনা ভাইরাস খুবই ভয়ংকর। যে করেই হোক সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখতে হবে। এটা বলে তিনি কিন্তু তোড়া-বোরা পাহাড়ে ঢুকে যাননি। তিনি একজন ডাক্তার। সপ্তাহে একদিন তিনি করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
আর আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন ভয়ের কিছু নেই, ৮০ ভাগ এমনিতেই সুস্থ হয়ে যায়। অথচ তিনি নিজেই লুকিয়ে আছেন তোড়া- বোড়া পাহাড়ে! চিকিৎসকদের কোনো রকম পিপিই না দিয়ে তিনি আমাদের এত দিন বলে এসেছেন- ডাক্তার'রা সব পেয়েছে! দেশের সাধারণ জনগণ আর ডাক্তারদের মুখোমুখি অবস্থানে নিয়ে দাঁড় করিয়েছেন তিনি।
এই নিয়ে একজন ডাক্তার গতকাল প্রতিবাদমূলক একটা লেখা ফেসবুকে লেখাতে তাকে নাকি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে! এদিকে আমার পরিচিত এক শিক্ষিত ভদ্রলোক খানিক আগেই আমাকে বলেছেন, আমি বাইরে গেলে সর্বক্ষণ মাস্ক পড়ে থাকি। শুধু যখন কথা বলি, তখনই মাস্কটা খুলি।
আমি বলি কি- পুরো বাংলাদেশটাকে চিড়িয়াখানা হিসেবে ঘোষণা করা যায় না? আমরা না হয় পৃথিবীর সব চাইতে বড় চিড়িয়াখানার নাগরিক হয়েই বেঁচে থাকলাম।