এটা জনগণের ট্যাক্সের টাকায়, আমলা আর আর্মিদের টিমওয়ার্কে,বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে, নাতিপুতির সামনেই হয়েছে। আলিফ লায়লার আয়না-জ্বীন স্টাইলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নেমে এসেছে প্লেন থেকে।

একবার এক বিয়ের দাওয়াতে গেলাম। রোজার মাসে বিয়ে। ইফতারি খাওয়া হবে শুরুতে। তারপর রাতে বৌভাত। সারাদিনের রোজা রেখেছি। তাছাড়া একটু আগেই ২ ঘন্টার কোচিং-ক্লাস ছিল। বুভুক্ষের মতোন সন্ধ্যার আগে আগেই পেটে খুব ক্ষিধে নিয়ে খাবারের অপেক্ষা করছি।

তো খাবারের একটু আগেই পাত্রীর বাপকে দেখলাম এক পিচ্চিকে কোলে নিয়ে ঘুরছেন। ঘুরতে ঘুরতে কতক্ষণ পর; আমার একটু পাশেই এসেই ওই পিচ্চি কোল থেকে নেমে প্রস্রাব করে দিয়েছে। তো এক পর্যায়ে পাত্রীর বাপ প্যান্ট খোলা ন্যাংটা ওই পিচ্চি নাতিকে দেখায়ে বলতেসে- “কিরে ভাই, সবাই তো এখন তোর 'বঙ্গবন্ধু' দেখে ফেলবে!”

পাশের লোকজন হাসতেসে। আমার সারা শরীর গুলিয়ে আসছে। একটা বিবমিষা এসে ধরলো হুট করে। আমি কাল্ট ফিগারে বিশ্বাস করি না। প্রচুর বিপরীত রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজনের সাথেও খাতির আমার। আর ডার্ক হিউমার- সারকাজমও নিতে পারি যথেষ্ট।

কিন্তু ওইদিন কেন জানি- নিজের খুব বাজে লাগতেসিল, আমি জাস্ট চিন্তা করছিলাম- এই নিম্নরুচির লোকের বাড়িতে কিছুই খাবো না। একটা চাপা অপরাধবোধ ধরে রাখলো অনেকক্ষণ।

ঘোষণা করা হয়েছে মুজিববর্ষের

তো কাউকে কিছু না বলেই সেই বিয়ে বাড়ি ত্যাগ করে, অনেক দূর এগিয়ে পাশের রাস্তায় টং দোকানে হারিকেনের আলোয় ইফতারি করলাম। চা আর পাউরুটি ছাড়া কিছুই নাই। একটু শক্তি সঞ্চয় হলো; তারপর- পুরো অচেনা রাস্তা একা রিকশায় এসে রাত ১১ টায় খাওয়া দাওয়া করলাম এক হোটেলে।

যে বড় ভাই ওই বিয়েতে নিয়ে গিয়েছিলেন, আরেক পরিচিত বড়ভাইয়ের বিয়ে। কাউকেই বলি নাই, কেন সেদিন বিয়ে থেকে আমি পালিয়ে আসছিলাম। কারণ হিসেবে- জরুরি আরেক কারণ বলেছিলাম। তো আজকে সবুজ কালারের অ্যামিবার মতো দেখতে বঙ্গবন্ধুর লেজার প্রতিকৃতি দেখে মনেই হইলো;- ওই লোকের বলার চেয়ে কম বাজে আর কম অশ্লীল হয় নাই এইটা।

যদিও এটা জনগণের ট্যাক্সের টাকায়, আমলা আর আর্মিদের টিমওয়ার্কে,বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে, নাতিপুতির সামনেই হয়েছে। আলিফ লায়লার আয়না-জ্বীন স্টাইলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নেমে এসেছে প্লেন থেকে।

আর আস্তে আস্তে সবুজ কালারের একটা অ্যামিবা হয়ে যাচ্ছে। সবাই সেই সবুজ অ্যামিবাকে ফুল দিচ্ছে, শ্লোগান দিচ্ছে। কেউ নাকি হাপুস নয়নে কান্নাকাটিও করেছে। এই অশ্লীল দৃশ্য আমার শোনা ওইদিনের অশ্লীল উপমার চেয়ে কম জঘন্য না।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা