'ভাইরাল হওয়া' থেকে যদি দারুণ কিছু ঘটে, তবে তাই হোক!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
স্বামী-স্ত্রী মিলে ছোট্ট একটা খাবারের দোকান চালান, করোনার কারনে ব্যবসায় জ্বললো লাল বাতি। উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম হারিয়ে পথে বসার অবস্থা তাদের। তখন এক ভ্লগার একটা ভিডিও বানালেন এই দম্পতিকে নিয়ে। আর সেই ভিডিওটাই বদলে দিলো তাদের ভাগ্য...
অন্তর্জালের কুফল নিয়ে চাইলে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা অনায়াসে লিখে ফেলা যাবে, কোনো ভাবনাচিন্তা ছাড়াই। অথচ গণ্ডায় গণ্ডায় কুফল প্রসব করা অন্তর্জালের উদ্দেশ্য ছিলো না মোটেও। তবুও বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে যে সব নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট এসেছে আমাদের জীবনে, সেগুলোকে আমরা বাদও দিতে পারবো না কখনো। এগুলো বেশ শক্তপোক্তভাবেই যুক্ত হয়ে গিয়েছে আমাদের সাথে। তবে এত এত নেগেটিভিটি ছাড়িয়ে সম্প্রতি পেলাম অন্যরকম এক খবর। ইন্টারনেট বা অন্তর্জালের বদৌলতে পাওয়া এ খবর তীব্র মন ভালো করার৷ স্বস্তির। আশার।
দিল্লীর মালব্য নগরে একটা ছোটখাটো খাবারের দোকান চালাতেন আশি বছরের কান্তা প্রসাদ এবং তার স্ত্রী। 'বাবা কা ধাবা' নামের এই ফুড শপ গত ত্রিশ বছর ধরে চলছে। হালকা নাস্তা, যেগুলোর দামের সীমা ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ রূপির মধ্যে, সেগুলোই বিক্রি করতেন তারা৷ সেখান থেকে যা আয় হতো, তা দিয়েই কোনোরকমে কায়ক্লেশে জীবন চলতো এই দুই বৃদ্ধ মানুষের। ভারতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর অনেক কিছুর পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় এই দুটি মানুষের একমাত্র অবলম্বন এই ছোটখাটো দোকানটিও৷ মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তাদের। কী করবে না করবে, কোথায় যাবে, কী খাবে... পুরোপুরি টালমাটাল এক অবস্থায় পড়ে যায় তারা। এমনও বয়স না তাদের যে, অন্য কোনো কাজ করে প্রতিদিনের দানাপানির ব্যবস্থা করবে। দিশেহারা এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় তারা।
তখন ইন্টারনেট এগিয়ে আসে তাদের বদৌলতে। ভারতের একজন ইউটিউবার তার ইউটিউব চ্যানেল ও ইন্সটাগ্রাম আইডিতে প্রথম 'বাবা কা ধাবা'র গল্প প্রকাশ করে, এই দুই বৃদ্ধ মানুষের গল্পকে সবার সামনে নিয়ে আসে৷ সে সাথে অর্থসংগ্রহও শুরু হয়। ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়া এই ভিডিওটি যারা দেখেছেন, এই বৃদ্ধ মানুষ দু'জনের কান্না দেখে তাদের মন যে আর্দ্র হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। ইউটিউব, ইন্সটাগ্রাম, ফেসবুকের পর টুইটারেও #BabaKaDhaba হ্যাশট্যাগে ভাইরাল হয়েছে এই দোকানের গল্প। সাধারণ মানুষদের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে সেলিব্রেটিরাও। সবাই অনুদান দিচ্ছে। দিয়েছে। নেটিজেনরা একজন আরেকজনকে অনুরোধ করছেন দিল্লীর এই ছোট্ট ফুডশপটিতে যাওয়ার জন্যে। এই দুই মানুষকে সাহায্য করার জন্যে।
এই ঘটনার ফলশ্রুতিতে 'বাবা কা ধাবা' চালু হয়েছে আবার। হাসি ফিরেছে এই দুর্বল দুটি মানুষের মুখে। সে সাথে হাসি ফিরেছে, এই ঘটনাটি যারা অনলাইনে অথবা অফলাইনে দেখেছেন, সবার মুখেই। অন্তর্জালে যে শুধু কুরুচিকর গান আর সস্তা জোকসই ভাইরাল হয় না, বরং মানুষের জীবন গল্পও ভাইরাল হয় এবং যে ভাইরালের ফলশ্রুতিতে মানুষটির জীবনই পাল্টে যায়, সেটাই প্রমাণ হলো আরেকবার।
ইন্টারনেট ঠিক সেখানেই সফল। ঠিক এখানেই সে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন