অপি করিম- সাধারণ সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো এক অভিনেত্রী
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপি করিম। তাঁর প্রাণবন্ত হাসি যেন মন ভরিয়ে দেয় দর্শকের, সাধারণ সৌন্দর্যতায়ও মুগ্ধতা ছড়ান তিনি। ১৯৭৯ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেত্রী আজ পেরোচ্ছেন জীবনের ৪১টি বৈশাখ।
শুধুমাত্র নাট্যজগতে নয়, পড়াশোনার ক্ষেত্রেও সমান পারদর্শী। নাটক, টেলিফিল্ম, উপস্থাপনা, এমন কি নাচ- সব ক্ষেত্রেই তার দ্যুতি ছড়ানো প্রতিভা। ৫১ বর্তীর শিউলি থেকে ব্যাচেলরের সাথী কিংবা মাধবীলতা হয়ে বিমোহিত করে চলেছেন বছরের পর বছর। তিনি আমাদের সবার প্রিয় অভিনেত্রী 'অপি করিম'। মাত্র আড়াই বছর বয়সে জনপ্রিয় টিভি নাটক 'সকাল-সন্ধ্যা'র পারুল চরিত্রটিতে অভিনয় করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য টিভি মিডিয়ায় অপির প্রথম কাজ ছিল 'কলকাকলী' নামের একটি অনুষ্ঠানে। ১৯৯৯ সালে লাক্স ফটোজনিক সুন্দরী হবার পর লাক্সের মডেল হওয়ার সুবাদে বড় ধরনের সুযোগ আসে অপির মডেলিং ক্যারিয়ারেও। এদিকে মঞ্চদর্শকদের মাঝেও অপি সমানভাবে প্রশংসিত হতে থাকে রক্তকরবীর 'নন্দিনী'র জন্য।
টিভি নাটকে নিয়মিত অভিনয় করা শুরু করেন ১৯৯৯ সালে 'তেপান্তরের রুপকথা' টেলিফিল্ম দিয়ে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন নাট্যঙ্গনের একজন শীর্ষ অভিনেত্রী। তাঁর এই সফল যাত্রায় সাফল্যমন্ডিত করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে নাট্যজগতের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক '৫১ বর্তী'। এই নাটকে 'শিউলি' চরিত্রে অভিনয় করেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেন তিনি।

এছাড়া দুই জোনাকি, শুকনো ফুল রঙ্গিন ফুল, আঁচল, দয়িতা, বৃষ্টি পরে, অন্ধকারের আলোয় তুমি, নুসরাত সঙ্গে একটি গল্প, বালক বালিকা, চড়ুইভাতি, ভয়, নির্জন স্বাক্ষর, ভালোবাসার গল্প রচনা, আলো আমার আলো, অপরিচিত, দিল দরিয়া, স্বপ্ন+হৃদয়, ছায়াফেরী, ছায়াযোগ জলছাপ, থতমত এই শহরে, পুরাঘটিত বর্তমান, এই শহর মাধবীলতার না, মাধবীলতা গ্রহ আর না, তাহারা, অবাক ভালোবাসায়, খুঁটিনাটি খুনসুঁটি, আলো সহ অসংখ্য নাটকে অভিনয় করে নিজেকে করেছেন প্রশংসিত আর পেরিয়েছেন জনপ্রিয়তার ধাপ।
উপস্থাপনা করেছেন 'আমার আমি' ও অপি'স গ্লোয়িং চেয়ারের মতো দুটি জনপ্রিয় সেলিব্রেটি শো। সম্প্রতি কাজ করেছেন অমিতাভ রেজার পরিচালনায় ওয়েব সিরিজ 'ঢাকা মেট্রো', টেলিফিল্ম মিস শিউলি, কেস ৩০৪০, দরজার ওপাশে নাটকে। এখানেও নিজেকে নন্দিত করেছেন, বলা যায় নবীনদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২০০৪ সালে করেছেন ক্যারিয়ারের একটি মাত্র চলচ্চিত্র 'ব্যাচেলর', আর তাতেই পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার ও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। অনেক বছর বিরতি দিয়ে আবার আসছেন চলচ্চিত্রে, দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরীর 'মায়ার জঞ্জাল' এ অভিনয় করছেন প্রধান চরিত্রে। নাট্যজগতের বর্ণিল ক্যারিয়ারে ৫১ বর্তী(২০০৩) ও শুকনো ফুল রঙ্গিন ফুল(২০০৫) এর জন্য পেয়েছেন দর্শকজরিপে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। এছাড়াও সমালোচকে পেয়েছেন নুসরাত সঙ্গে একটি গল্প(২০০৭) ও মাধবীলতা গ্রহ আর না(২০১৬) এর জন্য পুরস্কার।
মাহফুজ-অপি করিম জুটি দর্শকদের বেশ প্রিয়, এছাড়া পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে জুটিও দর্শকদের বেশ পছন্দের। নন্দিত এই অভিনেত্রীর পড়াশুনা 'বুয়েট' থেকে, জাপান থেকে নিয়ে এসেছেন উচ্চতর ডিগ্রি। বর্তমানে শিক্ষকতা করছেন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিনয়ে বর্তমানে অনিয়মিত হলেও বিভিন্ন উৎসবের নাটকে দেখা যায় তাঁকে। ব্যক্তিজীবনে নানা চড়াই-উৎরাই পেরোবার পর ঘর বেঁধেছেন পরিচালক এনামুর করিম নির্ঝরের সাথে। নতুন এই দম্পতির জন্য রইল শুভকামনা। ১৯৭৯ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করা এই অভিনেত্রী আজ পেরোচ্ছেন জীবনের ৪১টি বৈশাখ। শুভেচ্ছা রইল প্রিয় অভিনেত্রীর প্রতি। পর্দায় কিংবা ব্যক্তিজীবন- সব জায়গাতেই নিজেকে আরো বর্ণিলতর করে তুলবেন এটাই প্রত্যাশা। শুভ জন্মদিন, প্রিয় অপি করিম।